বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: সাতক্ষীরা ও বগুড়ায় অক্সিজেনের অভাবে মানুষ মারা যাওয়ার ঘটনায় জাতীয় সংসদে আবারও বিরোধী দলের সাংসদদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আজ শনিবার সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী দিনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে সাংসদেরা মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করেন তারা। এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে লজ্জাহীন উল্লেখ করে তার পদত্যাগের দাবিও জানান তারা।
জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সরাসরি আক্রমণ করে বলেন, উনি (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) যে কী মানুষ? লজ্জা-শরম নেই। তিনি এক দিনও কোনো হাসপাতালের ভেতরে গিয়ে দেখেননি কী হচ্ছে? তিনি শুধু জুম মিটিং করেন। মুজিবুল হক আরও বলেন, মন্ত্রী আমেরিকার সঙ্গে তুলনা করেছেন। আমাদের দেশে আমেরিকার চেয়ে কম লোক মারা যায়। এটা কি তার কৃতিত্ব? এক বছর মন্ত্রী কী করলেন? ৩৭টি জেলায় অক্সিজেন নেই। মানুষ মারা যাচ্ছে।
বগুড়ার বিএনপির সাংসদ জি এম সিরাজ বলেন, অক্সিজেনের অভাবে বগুড়ায় ২ দিনে ২৪ জন মারা গেছেন। কোভিডের জন্য নির্ধারিত মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল ২৫০ বেডের। এর মধ্যে আইসিইউ বেড আছে আটটি। কিন্তু হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা আছে মাত্র দুটি। ফলে বাকি আইসিইউ বেড কোনো কাজেই লাগছে না।
বিরোধী দলের উপনেতা জাতীয় পার্টির জি এম কাদের দাঁড়িয়ে সার্বিক বিষয়ে বক্তব্য দেন। তবে তিনি শুরুতেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অব্যবস্থাপনার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বছর আগে যে অবস্থায় ছিল, এখনো সেখানেই আছে। কোনো উন্নতি হয়নি। তিনি তার নিজ এলাকার হাসপাতালের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য যেসব চিঠি দিয়েছেন, সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন, সেগুলো পুনরুল্লেখ করেন। তবে এগুলোর বাস্তবায়ন হয়নি বলে জানান।
বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ বলেন, গত বুধবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী সংসদে যে বক্তব্য দিয়েছেন, এর মাধ্যমে গোটা হাউসকে অপমান করা হয়েছে। মন্ত্রী বলেছিলেন যে, সাংসদেরা জেলা হাসপাতালের চেয়ারম্যান। তারা দায়িত্ব পালন করেন না। মন্ত্রীর এই বক্তব্য ঠিক নয়। এই বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করা দরকার।
হারুনুর রশীদ আরও বলেন, সংসদে ৯০ ভাগ সাংসদ সরকারি দলের। তাহলে কি সরকারি দলের সাংসদেরা দায়িত্ব পালন করছেন না? তিনি বলেন, আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। অক্সিজেন সংকট দেখা দিয়েছে। এটা দেখতে হবে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে খাদ্যসহায়তা দিতে হবে।
জাপার কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘সাতক্ষীরায় অক্সিজেনের অভাবে এক ঘণ্টায় সাতজন ছটফট করে মারা গেলেন। নার্স, ওয়াড র্বয় ও চিকিৎসকেরা কী করলেন? তিনি বলেন, আইসিইউ, এসডিইউতে রোগী গেলে কোনো চিকিৎসা হয় না। সেখানে কী হয়, কেউ জানে না। মানুষের মৃত্যুর কি কোনো দাম নেই? একটা তদন্ত কমিটি করুন। এর প্রতিবেদন প্রকাশ করুন।’