বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কক্সবাজার থেকে ফেনীতে বদলি হওয়া বিতর্কিত এসআই লাভলী ফেরদৌসীকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
পিবিআই ফেনী জেলার তত্ত্বাবধায়ক (এসপি) আসাদুজ্জামান তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, লাভলী কক্সবাজার কোর্ট পুলিশে কর্মরত থাকা অবস্থায় রামুর চেইন্দা এলাকার বেলাল আহমদের ছেলে সুদর্শন শাহাজাহানের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। পরে তার স্বামী পুলিশ কর্মকর্তা এসআই সাইফুলকে সন্তানসহ ত্যাগ করে প্রেমিক শাহজাহানকে বিয়ে করেন লাভলী। পুলিশ কর্মকর্তাকে স্ত্রী হিসেবে পেয়ে বেপরোয়াভাবে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন কর্মহীন শাহজাহান। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, মামলা তদন্তে প্রভাব এমন কি পুলিশ কর্মকর্তা না হয়েও নিজেই স্ত্রীর মামলা তদন্ত করার অসংখ্য অভিযোগ ওঠে
সূত্র আরও জানায়, মামলা তদন্তে এসআই লাভলী স্বামীকে সঙ্গে নেওয়াসহ তাকে দিয়ে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ, ক্ষমতার অপপ্রয়োগ, অর্থ আত্মসাৎসহ বিধিবহির্ভূত বিভিন্ন কাজে জড়িয়ে পড়েন।
এ বিষয়ে গত ২৩ আগস্ট ‘ওসির ভাব নিয়ে’ মামলা তদন্ত করেন এসআইয়ের স্বামী! শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর নড়েচড়ে বসে পিবিআই কর্তৃপক্ষ।
এসআই লাভলীকে বদলির পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত ডিআইজি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তার নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি প্রায় এক সপ্তাহ কক্সবাজারে অবস্থান করে অভিযোগের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করে।
প্রতিবেদনে এসআই লাভলী ফেরদৌসীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। তার বিরুদ্ধে পুলিশের শৃঙ্খলা আইনে শাস্তির সুপারিশ করা হয়। কমিটির সুপারিশে এসআই লাভলীকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিবিআইয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি আমাদের জন্য বিব্রতকর এবং পিবিআইয়ের নামে প্রতারণার শামিল। তার অপরাধের কারণে কক্সবাজার পিবিআইয়ের সুনাম নষ্ট হয়েছে। তদন্ত কমিটির কাছে ‘স্বামীকে দিয়ে মামলা তদন্ত ও তদন্ত কাজে স্বামীকে সঙ্গে নেওয়া’র বিষয়টি লাভলী স্বীকার করেছেন। মূলত স্বামীর লোভের কারণে লাভলী পুলিশের শৃঙ্খলা পরিপন্থী নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েন বলেও উল্লেখ করেন পিবিআই’র এই কর্মকর্তা।
তদন্ত কমিটির দায়িত্ব পালন করা একজন কর্মকর্তা বলেন, একজন দায়িত্বশীল অফিসার হয়ে স্বামীকে দিয়ে মামলা তদন্ত করার ঘটনায় পিবিআইয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিস্মিত এবং হতবাক। এটাই তাকে চরম বিপদে ফেলেছে। এসআই লাভলী ফেরদৌসীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর অধিকাংশই সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে নিয়মানুসারে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়।
পিবিআই ফেনী জেলার তত্ত্বাবধায়ক (এসপি) আসাদুজ্জামান বলেন, সম্প্রতি কক্সবাজার থেকে পিবিআই ফেনী জেলায় সংযুক্ত করা হয় এসআই লাভলী ফেরদৌসীকে। কিন্তু এর পরপরই তাকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। শুনেছি তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে চাকরি হতে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।