মার্কাস স্টয়নিস মাত্র ১৭ বলে করলেন ফিফটি। যা কিনা টি-টোয়েন্টিতে কোনো অসি ব্যাটারের দ্রুততম এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দ্বিতীয় দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির রেকর্ড।
স্টয়নিসের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়েই সুপার টুয়েলভে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে এসে জয়ের দেখা পেয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ম্যাচে তারা হেরেছিল নিউজিল্যান্ডের কাছে।
লক্ষ্য ১৫৮। পার্থের গতিময় উইকেটে রান তাড়ায় নেমে শুরুতে চাপে ছিল অস্ট্রেলিয়া। দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার আর অ্যারন ফিঞ্চ ৪ ওভারে তুলতে পারেন মোটে ২৬ রান।
পঞ্চম ওভারে বল হাতে নিয়েই অসি শিবিরে আঘাত হানেন মাহিশ থিকশানা। লঙ্কান এই স্পিনারের ঝুলিয়ে দেওয়া ডেলিভারি ড্রাইভ করতে গিয়ে শানাকার হাতে ধরা পড়েন ডেভিড ওয়ার্নার (১০ বলে ১১)।
এক ওভার পর মিচেল মার্শও সুযোগ দিয়েছিলেন। ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বল তুলে দিয়েছিলেন আকাশে। কিন্তু দৌড়ে গিয়ে মিডউইকেটে ক্যাচটি তালুতে রাখতে পারেননি শানাকা। ৪ রানে জীবন পান মার্শ।
পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩৩ রান তুলতে পারে অস্ট্রেলিয়া, ৭ ওভারে তোলে ৩৮। তবে এরপরই হাত খুলেন মার্শ। হাসারাঙ্গার করা ইনিংসের অষ্টম ওভারে একটি করে চার-ছক্কায় ১৫ রান তুলে নেয় অসিরা।
পরের ওভারে ধনঞ্জয়া মার্শকে (১৭ বলে ১৮) ফেরালেও হজম করেন ১৩ রান। তার পরের ওভারে হাসারাঙ্গাকে দুটি ছক্কা আর একটি চার হাঁকান ম্যাক্সওয়েল। ১৯ রান খরচ করেন লঙ্কান লেগি। অস্ট্রেলিয়ার দিকে হেলে পড়ে ম্যাচ। ১০ ওভারে ফিঞ্চের দল তোলে ২ উইকেটে ৮৫ রান।
১২ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ২৩ রানের ছোটখাটো এক ঝড় তুলে ফেরেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তবে ম্যাক্সওয়েলকে আউট করেই যেন বিপদে পড়ে লঙ্কানরা।
মার্কাস স্টয়নিস উইকেটে এসে আরও ভয়ংকর রূপ দেখান। ১৫তম ওভারে দুই ছক্কা আর এক চারে হাসারাঙ্গাকে ১৯ পেটানোর পরের ওভারে আরেক স্পিনার মাহিশ থিকশানার ওপরও চড়াও হন ডানহাতি এই ব্যাটার। থিকশানাকে মারেন তিন ছক্কা। ম্যাচ হাতের মুঠোয় চলে আসে অস্ট্রেলিয়ার।
শেষ পর্যন্ত ১৮ বলে ৫৯ রানে অপরাজিত থাকেন স্টয়নিস। বিধ্বংসী এই ইনিংসে ৪টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৬টি ছক্কা হাঁকান তিনি! ঠিক যেন বিপরীত চিত্র অ্যারন ফিঞ্চের ব্যাটে। ৪২ বলে ৩১ রান নিয়ে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়েন অসি দলপতি।
লঙ্কান স্পিন আক্রমণের সেরা অস্ত্র ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার জন্য দুঃস্বপ্নের এক রাত ছিল। ৩ ওভারে ৫৩ রান খরচ করে উইকেটের দেখা পাননি এই লেগি। প্রথম দুই ওভারে ৩ রান দেওয়ার পর এক ওভারেই ২০ দিয়ে বাস্তবতা টের পান থিকশানাও।
এর আগে শেষের ঝড়ে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। ১৮ ওভার শেষে তাদের বোর্ডে ছিল ১২৬ রান। শেষ দুই ওভারে আরও ৩১ যোগ করে লঙ্কানরা। তাতেই ৬ উইকেটে ১৫৭ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেয়ে যায় এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়নরা।
পার্থে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো ছিল না শ্রীলঙ্কার। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে দলীয় ৬ রানের মাথায় প্যাট কামিন্সের বলে সাজঘরে ফেরেন কুশল মেন্ডিস (৫)।
পাথুম নিশাঙ্কা আর ধনঞ্জয়া ডি সিলভা দ্বিতীয় উইকেটে ৫৮ বলে ৬৯ রানের জুটিতে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন দলকে। কিন্তু ২৩ বলে ২৬ করে ধনঞ্জয়া অ্যাশটন অ্যাগারের শিকার হলে ফের বিপদে পড়ে লঙ্কানরা।
১৪ রানের ব্যবধানে ফিরে যান পাথুম নিশাঙ্কা (৪৫ বলে ৪০), ভানুকা রাজাপাকসে (৫ বলে ৭) এবং অধিনায়ক দাসুন শানাকা (৫ বলে ৩)। ১১১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা, ১২০ রানে হারায় ষষ্ঠ উইকেট।
সেখান থেকে চারিথ আসালাঙ্কা আর চামিকা করুনারত্নে ১৫ বলে ৩৭ রানের ঝোড়ো জুটি গড়ে দলকে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ এনে দেন। আসালাঙ্কা ২৫ বলে ২ চার আর ৩ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৩৮ রানে। ৭ বলে ১৪ করেন করুনারত্নে।