বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: শ্বাসকষ্টের রোগীদের এমনিতেই মাঝেমধ্যে শ্বাসকষ্ট হয়। করোনা মহামারির এই সময় এ সমস্যার সঙ্গে যোগ হয়েছে উদ্বেগ। কারণ, হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে প্রাথমিক পর্যায়ে বোঝা কঠিন যে কী কারণে শ্বাসকষ্ট শুরু হলো, করোনার সংক্রমণ, নাকি শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদি রোগ। কাজেই এ সময় শ্বাসকষ্টের রোগীদের কিছু বিষয়ে অবশ্যই সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।
প্রত্যেকদিন নতুন কোভিড আক্রান্তদের সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালে বেডের আকাল। তাই বেশির ভাগ কোভিড-রোগীদের চিকিৎসকরা বাড়াবাড়ি না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতেই আলাদা থাকতে উপদেশ দিচ্ছেন। কিন্তু বাড়িতে যদি হঠাৎ আপনার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, কী ভাবে সামলাবেন নিজেকে? ডাক্তাররা এক বিশেষ পদ্ধতির কথা বলছেন, যার নাম প্রোনিং। শোওয়ার সময় এক বিশেষ পদ্ধতিতে খুব সাবধানে যদি আপনি উপুর হয়ে পেটের উপর ভর দিয়ে শুতে পারেন, তাহলে শ্বাস-প্রশ্বাসে অনেকটাই সুবিধা হবে। কোভিড আক্রাতন্তদের শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে এই পদ্ধতি খুব কার্যকরি।
কোভিড হলে সারাদিনে নিয়ম করে শরীরের অক্সিজেন সম্পৃক্ততা মাপতে হবে। যদি দেখেন সেটা ৯৪’এর নীচে নেমে গিয়েছে, তাহলে প্রোনিংয়ের পদ্ধতি শুরু করুন। কারণ অক্সিজেন পেতেও সাহায্য করে এই পদ্ধতি।
কী ভাবে করবেন
৪-৫টা বালিশ সঙ্গে রাখুন। প্রথমে ধীরে ধীরে উপর হয়ে শুতে হবে। একটা বালিশ মুখ বা গলার কাছে রাখবেন, ২টো থেকে ৩টে বালিশ বুকের নীচ থেকে পেটের নীচ অবধি রাখবেন। আরেকটা বালিশ পায়ের তলায় রাখবেন। উপুর হয়ে আধ ঘণ্টাবা ঘণ্টা খানেক থাকতে পারেন। তারপর ধীরে ধীরে ডান দিকে ঘুরে যেতে হবে। এভাবে আপনি আপনার সুবিধে মতো আধ ঘণ্টা থেকে ঘণ্টা দুয়েক থাকতে পারেন। তারপর বালিশ পিঠের কাছে রেখে বসে থাকতে হবে আরও আধ ঘণ্টা থেকে ঘণ্টা দুয়েক। তারপর শুয়ে আবার বাঁ দিক ফিরে শুতে হবে। ফের ঘণ্টা দুয়েক থাকার পর শুরুর মতো উপুর হয়ে শুতে হবে।
ঘন ঘন পাশ ফিরে শোওয়ার উপদেশ দিচ্ছেন ডাক্তাররা। আধ ঘণ্টা থেকে ২ ঘণ্টা পর্যন্ত একই ভাবে শুতে পারেন। তবে প্রত্যেক আধ ঘণ্টায় দিক বদলানোই ভাল। আপনার যদি শরীরে কোনও আঘাত থাকে, তাহলে সেটা খেয়াল রাখবেন। সুবিধেমতো বালিশের জায়গা একটু অদলবদল করে নেবেন। খাওয়ার আধ ঘণ্টা পরই এই পদ্ধতি শুরু করবেন।
কাদের জন্য উপযুক্ত নয়
১। গর্ভবতী মায়েদের জন্য
২। যাঁদের কঠিন হৃদরোগের সমস্যা রয়েছে
৩। যাঁদের শিরদাঁড়ার কোনও রকম সমস্যা রয়েছে।
অন্যকে কী ভাবে সাহায্য করবেন
হয়ত আপনার কোনও বাড়ির লোকের হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। কিন্তু তখনই অন্য কোনও ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। রোগীরও এমন পরিস্থিতি নয়, যে নিজেই এই পদ্ধতি মেনে চলবেন। সে ক্ষেত্রে কী করণীয়? রোগীর দেহের নীচে একটা চাদর পাততে হবে। আরেকটা চাদর হাতের নীচ দিয়ে মুড়িয়ে নিতে হবে। যাতে চাদের ধরে টানলে আপনি তাঁকে একদিক থেকে অন্যদিক গড়িয়ে দিতে পারেন। এভাবে আপনাকে বারবার বিছানায় রোগীর জায়গা বদলে দিতে হবে।