ডিম সংগ্রহকারী কয়েকজন বলেন, বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আমরা নমুনা ডিম সংগ্রহ করেছি। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়াতে মা মাছ ডিম ছাড়তে অনুকূল পরিবেশ পায়নি। রাতের জোয়ার শেষে ভাটায় মা মাছ ডিম ছেড়েছে। আমরা ৩-৪ কেজি করে ডিম সংগ্রহ করেছি। আশাকরি আরো ডিম সংগ্রহ করতে পারবো।
এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ও বুধবার দুপুরে মা মাছ দুইবার নমুনা ডিম ছেড়েছিল। নদীর সার্বিক অবস্থা ভালো থাকায় এবার প্রচুর ডিম সংগ্রহ করার ব্যাপারে আশাবাদী জেলেরা। সংগ্রহ করা ডিম থেকে রেণু ফোটানো হবে। পরিচর্যার মধ্য দিয়ে সেই ডিম থেকে পোনা হবে।
মা মাছের ডিম ছাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন বলেন, ‘রাত আনুমানিক ১টার দিকে হালদা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে মা মাছ ডিম ছাড়ার খবর এসেছে। নয়াহাট এলাকায় ৩/৪ কেজি করে ডিম পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ডিম সংগ্রহকারীরা।’
তিনি আরো বলেন, হালদা নদীর হাটহাজারী ও রাউজান অংশের আজিমের ঘাট, অংকুরি ঘোনা, কাগতিয়ার মুখ, গড়দুয়ারা নয়াহাট, রাম দাশ মুন্সির ঘাট, মাছুয়া ঘোনা ও সত্তার ঘাট অংশে ডিম সংগ্রহ শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে নমুনা ডিম সংগ্রহ করেছে ডিম সংগ্রহকারীরা। পরে রাত ১টার দিকে ৩৮৩টি নৌকায় প্রায় হাজার জন ডিম সংগ্রহকারী, আইডিএফ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরির স্বেচ্ছাসেবক ও শিক্ষার্থীও হালদাপাড়ে আছেন। এছাড়া উপজেলা প্রশাসন, নৌ পুলিশ এবং মৎস্য অফিসের লোকজনও সেখানে অবস্থান করছেন।
প্রসঙ্গত, প্রতি বছর এপ্রিল থেকে জুনের যেকোনো সময়ে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ে। তবে এক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে, পূর্ণিমা বা অমাবস্যার তিথি বা জো থাকতে হবে। একই সময়ে নদীর স্থানীয় এবং খাগড়াছড়ি, মানিকছড়িসহ নদীর উজানে পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে হবে। ফলে পাহাড়ি ঢল নামবে এবং নদীতে ফেনাসহ পানি প্রবাহিত হবে। ঠিক এই সময়ে পূর্ণ জোয়ার শেষে অথবা পূর্ণ ভাটা শেষে পানি যখন স্থির হয়, তখনই কেবল মা মাছ ডিম ছাড়ে।