মামুনুর রশীদ কুমিল্লা : কুমিল্লার দেবীদ্বার পৌরসভার ছয়টি স্ট্যান্ডের ইজারা নিয়ে বিপাকে পড়েছে পৌর প্রশাসন। উচ্চ আদালত এক আদেশে ইজারার সকল কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত ও স্থিতাবস্থা জারি করেছে।
দেবীদ্বার পৌর এলাকার দক্ষিণ ভিংলাবাড়ী গ্রামের মৃত বাচ্চু মিয়ার ছেলে মো. সোহেল রানা উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করলে বিচারক এ আদেশ দেন বলে সূত্রটি জানিয়েছে। এ আদেশের কপি স্থানীয় সরকার বিভাগ ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব পৌর-১, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক, দেবীদ্বার পৌর প্রশাসক, দেবীদ্বার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা, দেবীদ্বার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে পাঠানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, দেবীদ্বার পৌর প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে সিএনজি, ইজিবাইক, কার, মাইক্রো ও এ্যাম্বুলেন্সসহ ছয়টি স্ট্যান্ড রয়েছে। এসব স্ট্যান্ডের লিজসহ দেখভাল করে পৌর প্রশাসকের দফতর। এমনই ছয়টি স্ট্যান্ড হচ্ছে, দেবীদ্বার চান্দিনা রোডস্থ বিআরডিবির আওতাভ‚ক্ত ইউ সি সিএ লিঃ এর জায়গায় সিএনজি ইজিবাইক স্ট্যান্ড, দক্ষিণ ভিংলাবাড়ী পান্নারপুল বাসষ্ট্যান্ড হতে বাখরাবাদ রোডে সিএনজি- ইজিবাইক স্ট্যান্ড, দেবীদ্বার রহমানীয়া সুপার মার্কেটের সামনে হতে কৃষ্ণপুর রোডে সিএনজি- ইজিবাইক ষ্ট্যান্ড, দেবীদ্বার পুরাতন বাজার হয়ে ওয়াহেদপুর রোডে সিএনজি- ইজিবাইক স্ট্যান্ড, দেবীদ্বার ফুলগাছ তলা হয়ে খলিলপুর রোডে সিএনজি- ইজিবাইক স্ট্যান্ড ও দেবীদ্বার সরকারী হাসপাতাল সংলগ্ন প‚র্ব পাশে কার, মাইক্রো, এ্যাম্বোলেন্স (সরকারী ব্যতীত) স্ট্যান্ড।
এ স্ট্যান্ডগুলোতে ইজারার নিয়মবহির্ভ‚ত করে একাধিক জায়গা হতে জিপি টোকেন মানির নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করায় যানজটের ভোগান্তি রুখতে উপায়ান্ত না পেয়ে উচ্চ আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছেন পৌর এলাকার নাগরিক সোহেল রানা নামে এক ব্যবসায়ী।
দেবীদ্বার পৌর সভার ছয়টি স্ট্যান্ডের জন্য গত ২ জানুয়ারী নতুন করে ইজারা বিজ্ঞপ্তির আহবান করে পৌর কর্তৃপক্ষ। এ বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে ৯ জানুয়ারী উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করেছেন তিনি। যার নম্বর ৩২১/২০২৩।
এরই প্রেক্ষিতে গত ৯ জানুয়ারী উচ্চ আদালতের বিচারপতি জাফর আহেমদ ও বিচারপতি মো. বশিরুল্লাহর দ্বৈত বেঞ্চ আবেদনের শুনানি শেষে ওইসব স্ট্যান্ড ইজারাদানের কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানী করেন অ্যাডভোকেট মাহবুব শফিক ও অ্যাডভোকেট মো. ইব্রাহিম খলিল। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানী করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী, এমএমজি সারোয়ার (পায়েল), মাসুদ রানা মোহাম্মদ হাফিজ ও সহকারী এটর্নি জেনারেল তামান্না ফেরদৌস।
এ আদেশ গত মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারী) সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ অফিসার ই-মেইলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের বরাবরে পাঠিয়ে দেন বলে জানিয়েছেন সুপ্রীম কোর্টের আরেক আইনজীবী এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ উজ্জঁ¡ল। এছাড়াও এ আদেশের কপিসহ ফের ইজারা কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন বলে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন উচ্চ আদালতের রীটকারী মো. সোহেল রানা।
উচ্চ আদালতে রীটকারী মো. সোহেল রানা বলেন, জনভোগান্তি নিরসনে- হাইওয়ে সড়কে যানজট নিরসন, অতিরিক্ত টোল আদায়ে ভোগান্তি নিরসনে অর্থাৎ জনস্বার্থে এ রীট আবেদন করেছি।
হাই কোর্টের নির্দেশনার পরও এবং ইজারা ছাড়াই দেবীদ্বার নিউমার্কেট মহাসড়কের যাত্রী ছাউনি ও চান্দিনা রোডে টোকেনের মাধ্যমে টোল আদায় করা হচ্ছে। এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন হাইওয়ে টোল আদায়ের কোন প্রমান পেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডেজী চক্রবর্তীর কাছে বুধবার (১১ জানুয়ারী) সকালে সিএনজি ষ্ট্যাশন ইজারা প্রদানে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা হাই কোর্টের নির্দেশ পাওয়ার পরই নোটিশ জারী করে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত রেখেছি।