বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: বেশ কয়েক বছর আগের কথা। আফগানিস্তান তখন তালেবানদের দখলে। ওই শাসনামলে মেয়েদের উপার্জন তো দূরের কথা, অনুমতি ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়াও নিষেধ ছিল। কিন্তু সেই সময়ে তালেবানদের চোখে ধূলো দিয়ে টানা দশ বছর ধরে পুরুষের বেশে কাজ করেছেন এক আফগান নারী।
তার নাম নাদিয়া গুলাম। বর্তমানে তিনি স্পেনের কাতালনিয়ায় শরণার্থী হিসেবে থাকছেন। তার এই বেঁচে থাকার লড়াইকে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন নিজের লেখনীতে।
হিন্দুস্তান টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, নাদিয়ার জন্ম ১৯৮৫ সালে আফগানিস্তানে। দেশটির প্রতিটি নারীর মতো তিনিও হয়েছিলেন নিষ্ঠুর গৃহযুদ্ধ, ক্ষুধা এবং তালেবান শাসনের শিকার। কিন্তু তিনি হার মানেননি।
আফগানিস্তানে তালেবানের শাসনের চরম সময়েও পরিবারের হাল ধরতে পিছুপা হননি নাদিয়া। প্রায় ১০ বছর ধরে পুরুষ সেজে তালেবানদের বোকা বানিয়েছেন তিনি। নিজের মৃত ভাইয়ের নাম, পরিচয়ে কাজ করতেন তিনি। সেই বেশেই রোজ কাজে যেতেন নাদিয়া।
২০০৬ সালে বোমা হামলায় গুরুতর আহত হন নাদিয়া। সেই সময়েই এক আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে চিকিৎসার জন্য তাকে স্পেনে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন থেকেই স্পেনে থাকেন তিনি।
স্পেনে থাকাকালীনই নাদিয়া নিজের জীবনের লড়াইয়ের কাহিনী তুলে ধরেন লেখনীতে। তার লেখা বই, ‘দ্য সিক্রেট অফ মাই টারবান’ গোটা বিশ্বে তাকে ব্যাপক পরিচিতি এনে দিয়েছে। বইটি লিখতে তাকে সহযোগিতা করেছেন সাংবাদিক অ্যাগনেস রটগের।
২০১০ সালে নাদিয়া এই বইয়ের জন্য বিখ্যাত প্রুডেন্সি বার্ট্রানা খেতাব লাভ করেন। এরপর আফগানিস্তান সংক্রান্ত বহু তথ্যচিত্রেই তাকে দেখা গিয়েছে। বিগত ১৫ বছর ধরে তিনি বারবার সাবধান করে বলেছেন, তালেবানরা আফগানিস্তান ছেড়ে যায়নি। যুক্তরাষ্ট্র দেখাতে চাইছে যে তালেবানরা নেই। কিন্তু সেটা একটা বড়সড় মিথ্যা।
তার কথাই সত্যি বলে প্রমাণিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র একটু সরে যেতে ফিরে এসেছে তালেবানরা। গোটা আফগানিস্তানের এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে।
নাদিয়ার মতে, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্য আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো আফগানিস্তানে বছরের পর বছর থেকেছে। এ সময়টায় তারা অস্ত্রের জোগান বাড়িয়েছে, দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারদের সমর্থন করেছে আর এখন সেই দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এটা বেইমানি বললেও কম বলা হয়।
বর্তমানে বার্সেলোনার ‘ব্রিজেস ফর পিস অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার