বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কয়েক হাজার অবহেলিত মানুষ চলাচল করছিলেন গ্রামীণ একটি কাঁচা রাস্তায় দিয়ে। বৃষ্টিতে জুতা হাতে ও কাদা মাড়িয়ে আর বন্যায় কোমর পানি বা নৌকাই ছিল তাদের অবলম্বন।
বদলেছে সরকার, বদলেছে স্থানীয় প্রতিনিধিও। আশ্বাসের পর আশ্বাসে হারিয়ে গিয়েছিল বিশ্বাস। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ভাগ্য খুলে এলাকাবাসীর, যাদের মনে ছিল একটি পাকা রাস্তার স্বপ্ন। যে রাস্তার মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে এবং এগিয়ে যাবে এলাকাটি।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর পাওয়া সিরাজগঞ্জের তাড়াশে উপজেলার মাগুরা বিনোদ ইউনিয়নের ঘরগ্রাম পূর্বপাড়ার ৮৫ লাখ টাকার পাকা সড়ক নির্মাণের একমাস না যেতেই ধসে পুকুরে পড়ল।
তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, ৮৫ লাখেরও বেশি টাকা ব্যয় ধরে ১ হাজার ১৫০ মিটার রাস্তাটির কাজ পায় তন্ময় এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত বছরের ১৫ মে কাজ শুরু হয়ে চলতি বছরের ৩০ জুলাই রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ শুরু হয় দেরিতে। ফলে ৫০ মিটার বাদ দিয়ে ১ হাজার ১০০ মিটার রাস্তা তড়িঘড়ি করে নির্মাণের পর হস্তান্তর করে তন্ময় এন্টারপ্রাইজ। এলজিইডি ৫০ মিটার রাস্তা বাদ দিয়েই বিল পরিশোধ করে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিভিন্ন মহলে ধরনা দিয়ে রাস্তার অনুমোদন মেলে। কিন্তু শুরুতেই নিম্নমানের কাজের অভিযোগ ওঠে। এরপর দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকে। ফের শুরু হলে খুব দ্রুত কাজ শেষ করে ঠিকাদার। তখনো নিম্নমানের কাজ করে তারা। ফলে এক মাসের মধ্যেই রাস্তার কয়েক জায়গা ধসে পড়ে। এর মধ্যে এক জায়গার প্রায় ৪০-৪৫ মিটার রাস্তা ভেঙে পুকুরে চলে যায়। ওই রাস্তা কাঁচা থাকা অবস্থায় ভ্যান ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করলেও এখন সাইকেল ছাড়া কোনো যান চলাচল করতে পারে না।
ভাঙনের জায়গায় গাইডওয়াল দেওয়ার কথা থাকলেও নামমাত্র কিছু খুঁটি দেওয়া হয়েছিল। এখন পানি চলে আসায় সেই জায়গাটিও সংস্কারও করতে পারছে না ঠিকাদার ও কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তন্ময় এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী এম এ আল বাকি বলেন, বর্ষা মৌসুমের কারণে রাস্তাটি ধসে গেছে। আমার জামানত এখনো আছে। বর্ষার পর রাস্তাটি আবার সংস্কার করে দেব।
নিম্নমানের সামগ্রী দেওয়ায় কিছুদিন কাজ বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবু সায়েদ বলেন, রাস্তাটিতে নিম্নমানের সামগ্রী দেওয়ায় এবং কিছু অনিয়ম হওয়ায় আমরা মাঝখানে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। পরে কাজ শেষ করা হয়। তবে ধসে পড়া জায়গা বর্ষা শেষে মেরামত করে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, সড়কটির বিষয়ে আমি জানি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তন্ময় এন্টারপ্রাইজকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যেহেতু এখন মাটি পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বর্ষার পরে রাস্তাটি সংস্কার করে দেওয়া হবে।