বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: সব বাধা ডিঙিয়ে খুলে দেয়া হয়েছে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা চিরচেনা ক্লাসরুমে স্শরীরে ক্লাসে বসেছে আজ। দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীদের স্কুলে আগমণকে স্বাগত জানিয়ে শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছে শিক্ষকবৃন্দ।
আজ সকালে রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়। স্কুলে গেইটে ঢুকতেই শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। ফুল-চকলেট দিয়ে শিক্ষার্থীদের বরণ করছেন শিক্ষকরা।
শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্কুলে দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীদের পেয়ে খুব ভালো লাগছে। করোনার প্রকোপে অনেকদিন আমরা ক্লাস কার্যক্রম সশরীরে নিতে পারিনি। এতদিন পর শিক্ষার্থীদের স্কুলে পেয়ে আজ সবাইকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিচ্ছি। আজ পঞ্চম, ষষ্ট, দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস চলবে। ক্লাসের শুরুতে স্কুল প্রাঙ্গণে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা হয়। পরে জাতীয় সংগীত এবং নৃত্য পরিবেশন করেন স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আয়েশা তাবাসসুম বলেন, দীর্ঘ দিন পর ক্লাসে ফিরতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। যদিও আমাদের তিন ঘণ্টার ক্লাস তারপরও এ সময়ে শিক্ষকদের সঙ্গে অনেক মজা করতে পারবো বন্ধুদের সাথে দেখা হচ্ছে ভেবেই ভালো লাগছে। আগের দিনের কথাগুলো মনে পড়ে যাচ্ছে। কত আনন্দের দিন ছিলো। সে আনন্দ থেকে অনেকদিন আলাদা ছিলাম। আশা করি এই আনন্দের ক্লাস করে যেতে পারবো৷ আর বন্ধ হবে না।
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী নামিনা নোভ বলেন, অনেকদিন পর ক্লাসে এসেছি। অনলাইন ক্লাস থেকে বের হয়ে আজ আমরা সকল শিক্ষকদের সাথে সামনাসামনি ক্লাস করবো, দেখা হবে এতে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে। তাছাড়া অনেকদিন পরে যেসব বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে তাদের সঙ্গে কত আড্ডা গল্প করবো এটা ভেবেই অনেক খুশি লাগছে। স্কুলে ঢোকার সময় শিক্ষকরা আমাদের সালাম দিচ্ছে, ফুল চকলেট দিয়ে বরণ করে নিচ্ছে। মনে হচ্ছে স্বর্গে এসেছি।
তবে সবার ভালো লাগলেও ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাহমিদার ভালো লাগছে না। কারণ হিসেবে মজা করেই এই শিক্ষার্থী হেসে বলছেন, আগে সে প্রতিদিন একই বেঞ্চে বসতে পারতো। কিন্তু এবার তার বান্ধবী তার সে সিটে বসে গেছে তাই তার খারাপ লাগছে।
দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহিন বর্মন তমা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যেরকম বন্ধ বন্ধ খবর আমরা নিয়মিত খবরে পড়ছি এতো তাড়াতাড়ি ক্লাসে ফিরতে পারবো এটা কল্পনা করতে পারিনি। কলেজের যে লাইফটা মিসি হয়ে গিয়েছিলো সেটি আবার উপভোগ করতে পারবো এটার জন্য ভালো লাগছে।
দীর্ঘ দিন পর ক্লাসে ফিরতে পেরে শিক্ষার্থীদের উচ্ছাসে পাশাপাশি শিক্ষকবৃন্দরা দারুণ উচ্ছ্বাসিত। এদিকে অভিভাবকরাও তাদের সন্তানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে এসে আনন্দিত। তারা বলছেন, আমাদের সন্তানরা অনেকদিন শিক্ষকদের থেকে আলাদা। বাসায় সবাই বোরিং হয়ে যাচ্ছিল৷ আমরাও চিন্তিত ছিলাম আমাদের সন্তানদের নিয়ে। একদিকে মোবাইল বা ডিজিটাল ডিভাইসে আসক্তি তৈরি হয়েছে। সারাদিন গেইম আর ইউটিউবে সময় কাটাতো সন্তানরা। এখন তারা সশরীরে ক্লাসে আসতে পেরেছে। আশাকরি তারা সহজে পড়াশোনায় মনোযোগী হবে।