বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: নীলফামারীর গ্রামীণ দৃশ্যপট থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শরতের কাশফুল। এক সময় গ্রামের কোনো উঁচু জায়গায়, নদীর ধারে কিংবা চরাঞ্চলে কাশঝাড় দেখা যেত। তবে এখন আর সে দৃশ্য তেমন চোখে পড়ে না।
নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা আর কাশফুল দেখলেই আমরা সবাই বুঝি এসেছে শরৎ। কারণ কাশফুল শরতের আগমনের প্রতীক। ষড় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। প্রত্যেকটি ঋতুরই রয়েছে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। এক এক ঋতু আমাদের জীবনে আসে এক এক রকম ফুল, ফল আর ফসলের সম্ভার নিয়ে। বাংলার প্রকৃতিতে ষড়ঋতুর পালাবদল আলপনা আঁকে অফুরন্ত সৌন্দর্যের। ঋতুচক্রের আবর্তনে প্রকৃতির এ সাজবদল বাংলাদেশকে রূপের রানীতে পরিণত করেছে।
বর্ষপঞ্জি হিসেবে বছরের প্রতি দুই মাসে ঋতু পরিবর্তন হয়। তেমনি ভাদ্র-আশ্বিন মিলে শরৎকাল। শরৎ বাংলাদেশের এক ঝলমলে ঋতু। শিমুল তুলোর মত সাদা মেঘ ভেসে বেড়ায় আকাশে। এ সময় নদীর ধারে ফোটে সাদা কাশফুল। এমনি এক দৃশ্য চোখে পড়ে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের চারাল কাটা নদীর ধারে। যেখানে দেখা যায় অসংখ্য কাশফুলের।
নীলফামারী মশিউর রহমান ডিগ্রী কলেজের সিনিয়র প্রভাষক মৃণাল কান্তি রায় বলেন, কাশফুল একধরনের বহুবর্ষজীবী ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ। কাশফুল পালকের মতো নরম ও চিরল পাতার দুইপাশ খুবই ধারালো এবং রং ধবধবে সাদা। কাশগাছ ৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। নদীর তীরেই এদের বেশি জন্মাতে দেখা যায়। এর কারণ হল নদীর তীরে পলিমাটির আস্তরণ থাকে এবং এই মাটিতে কাশের মূল সহজে সম্প্রসারিত হতে পারে।
নীলফামারী জলঢাকা উপজেলার রশিদপুর বালিকা স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক মো. মন্জুর মোর্শেদ বলেন, শরৎকালে কাশের সাদা ফুল ফোটে। শরতের হালকা বাতাসে যখন সাদা কাশফুল ঢেউয়ের তালে দুলতে থাকে তখন সবুজ ঘাসফড়িং টিং করে লাফ দিয়ে পড়ে কাশফুলের ডগায়। কাশবনের ব্যবহার বহুবিধ। কাশ দিয়ে গ্রামের নারীরা ঝাঁটা, ডালি ও দোন তৈরি করেন। এছাড়া ঘরের ছাউনি হিসেবেও ব্যবহার হয়ে থাকে। চারাগাছ একটু বড় হলেই এর কিছু অংশ কেটে গরু-মহিষের খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।