বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, নদী কিংবা উপকূলে কাউকে আমরা আর দস্যুতা করতে দেব না। সুন্দরবনের নিরাপত্তায় স্থায়ী ক্যাম্প বানানো হবে। এখানে দায়িত্ব পালনকারী সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানো হবে। সোমবার (১ নভেম্বর) বাগেরহাটের রামপালে দস্যুমুক্ত সুন্দরবন দিবস ও আত্মসমর্পণকৃতদের পুনর্বাসন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খুন ও ধর্ষণের মামলা ছাড়া বাকি সব মামলা আমরা নিষ্পত্তি করব। আত্মসমর্পণকারীদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, দয়া করে আপনারা অন্য কিছু চিন্তা করবেন না। যাঁরা মনে করছেন দস্যুতায় ফিরে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিছু করবে না, তারা ভুল ভাবছেন। কেউ অন্য পথে গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের ৪০ বছরের ইতিহাসে সুন্দরবনকে অশান্ত করা হয়েছে। তবে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এ বন দস্যুমুক্ত হয়েছে। অনেকেই এই প্রক্রিয়া ভন্ডুলের চেষ্টা করেছে।
যাঁরা খারাপ পথ থেকে ফিরে এসেছেন, তাঁদের বুকে টেনে নিতে স্থানীয়দের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে আইজিপি বলেন, তাঁদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে সহায়তা করুন।
সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য বিপর্যয়ের পেছনে সমন্বয়হীনতা রয়েছে উল্লেখ করে বেনজীর আহমেদ আরও বলেন, একটি জাতীয় পত্রিকায় দেখলাম লেখা হয়েছে বনে বিষ দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। পুলিশ কিছু করছে না। পুলিশের এখানে কিছু করার নেই। আমাদের পানি দেখেন একজন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগ দেখেন আরেকজন। আবার বন বিভাগও আলাদা। এ বিষয়গুলো সমন্বয়ের প্রয়োজন রয়েছে।
র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ৩২ বাহিনীর ৩১৮ জন দস্যু আত্মসমর্পণ করেছেন। প্রত্যেকে আমাদের নজরদারির মধ্যে রয়েছেন। যাঁরা র্যাবের সঙ্গে থাকবেন, তাঁদের সঙ্গে র্যাব থাকবে। আরও সহায়তা দেওয়া হবে। তবে যাঁরা অন্য কিছু চিন্তা করবেন, তাঁদের বিষয়ে কঠোর হবে র্যাব।
অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পণকারী হান্নান বাহিনীর সদস্য জলিল মুন্সি বলেন, আমি অভিশপ্ত এ পেশা ছেড়ে এখন ভালো আছি। তবে মামলার কারণে হয়রানির শিকার হচ্ছি। দস্যুতা ছেড়ে আসাদের বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসন ৩০-এর সংসদ সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্না সরকার, খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাংসদ মো. শামসুল হক টুকু, খুলনা-২ আসনের সাংসদ সেখ সালাহউদ্দিন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাংসদ মো. হাবিবুর রহমান, সাংসদ পীর ফজলুর রহমান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন।