বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: নিবন্ধনের জাল সনদে ১০ বছর যাবত চাকরি করছেন শিক্ষক। হয়েছেন এমপিওভুক্তও। এমন অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইলের উপজেলা সদরের ঘাটাইল সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর পদে কর্মরত মো. ফজলুল করিমের বিরুদ্ধে। তবে দীর্ঘদিন ওই ট্রেডের শিক্ষক জাল নিবন্ধন সনদে কর্মরত থাকলেও ধরতে পারেনি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সনদ যাচাই-বাছাই করে অবশেষে ওই শিক্ষকের নিবন্ধন সনদটি জাল বলে প্রত্যয়ন দিয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১ জুলাই ওই বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর পদে যোগদান করেন মো. ফজলুল করিম। ২০১০ সালের ১ মে এমপিওভুক্ত হন তিনি। যোগদানের সময় ২০০৫ সালের প্রথম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার সনদ জমা দেন তিনি।
সম্প্রতি বিদ্যালয়টি সরকারিও হয়েছে। সরকারিকরণের পর শিক্ষকদের বিভিন্ন কাগজপত্র যাচাই করতে গিয়ে শিক্ষক ফজলুল করিমের শিক্ষক নিবন্ধন সনদটি নিয়ে সন্দেহ হয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। এ কারণে তার সনদের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য এনটিআরসিএ’র কাছে পাঠায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
যাচাই শেষে ৮ নভেম্বর এনটিআরসিএ’র সহকারী পরিচালক ফিরোজ আহম্মেদ স্বাক্ষরিত পত্রে জানিয়ে দেওয়া হয় ট্রেড ইনস্ট্রাকটর পদের শিক্ষক মো. ফজলুল করিমের নিবন্ধন সনদটি জাল ও ভুয়া। ওই রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বরের প্রকৃত সনদধারী ব্যক্তির নাম মো. মাজেদুর রহমান। পত্রে এনটিআরসিএ ভুয়া ও জাল সনদধারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে তা কর্তৃপক্ষকে অবগতি করার জন্য নির্দেশ দেয়।
তবে অভিযুক্ত শিক্ষক ফজলুল করিম বলেন, আমার শিক্ষক নিবন্ধন সনদটি জাল নয়। এটি কর্তৃপক্ষের করণিকের ত্রুটি। সংশোধনের জন্য আবেদনও করেছি।
এ বিষয়ে ঘাটাইল সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলাম বলেন, ফজলুল করিমের শিক্ষক নিবন্ধন সনদটি নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় তা যাচাই করতে এনটিআরসিএ’তে পাঠানো হয়। ৮ নভেম্বর এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ তার শিক্ষক নিবন্ধন জাল ও ভুয়া বলে পত্রের মাধ্যমে আমাদের জানিয়েছে। এছাড়া এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতেও নির্দেশনা দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ হওয়ায় সনদ যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করে এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ। যাচাইয়ের শুরুতে শিক্ষক ফজলুল করিমের নিবন্ধন সনদ জাল ও ভুয়া বলে চিঠি পাঠায়। তবে ওই নামে শিক্ষক থাকলেও বাবার নাম ভুল ছিল। এরপর সঠিক তথ্য যাচাইয়ের আবেদন করা হয়। এরপর যাচাই-বাছাই করে ফজলুল করিম ও বাবা এবিএম শাহজাহান ঠিক আসলেও বাবার নামের বানানে প্রিন্টিং ত্রুটির ফলে এবিএম শাহজান এসেছে। এরপরও আবার আক্ষরিক ভুল সংশোধনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এ কারণে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে শোকজ করাসহ সনদ আনার জন্য বলা হয়েছে। তবে এখনো তিনি সনদ দিতে পারেননি।