বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ গুলশানের যে ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়, সেখানে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের যাতায়াতের ‘তথ্যপ্রমাণ’ পাওয়ার দাবি করেছে পুলিশ।
তদন্তে নেমে ভবনটি থেকে উদ্ধার করা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণের ভিত্তিতে এ দাবি করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ চন্দ্র চক্রবর্তী।
তিনি জানান, “ওই ফ্ল্যাটে তার (আনভীর) যাতায়াত ছিল, সে ব্যাপারে সংগৃহীত ফুটেজে প্রমাণ মিলেছে। তবে ঘটনার দিন তার যাওয়ার কোনো প্রমাণ ফুটেজে পাওয়া যায়নি।”
সোমবার রাতে ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ২১ বছর বয়সী মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।
পরে তার বোন নুসরাত জাহান তানিয়া গুলশান থানায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় ‘প্ররোচনার’ অভিযোগ এনে একটি মামলা করেন।
মামলায় বলা হয়েছে, ওই তরুণীর সঙ্গে ‘প্রেমের সম্পর্ক’ ছিল আনভীরের; গুলশানের ওই ফ্ল্যাটে তার যাতায়াতও ছিল। তবে এসব বিষয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডির কোনো বক্তব্য কোনো গণমাধ্যমই পায়নি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর মুনিয়ার লাশ কুমিল্লায় নিয়ে মঙ্গলবারই দাফন করেছেন স্বজনরা।
ওই ফ্ল্যাট থেকে মুনিয়ার উদ্ধার করা ডায়েরি নিয়েও তদন্ত এগিয়ে চলছে জানিয়ে বুধবার উপকমিশনার সুদীপ আরও বলেন, “ডায়েরিতে আনভীরের সঙ্গে সম্পর্ক, মনোমালিন্য, জীবন সম্পর্কে হতাশার কথা লেখা রয়েছে।
“আরো বেশ কিছু কথা লেখা রয়েছে তা যাচাই করা হচ্ছে।”
বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় ‘প্ররোচনার’ অভিযোগ এনেছে মুনিয়ার পরিবার।বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় ‘প্ররোচনার’ অভিযোগ এনেছে মুনিয়ার পরিবার।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আনভীরের সঙ্গে মুনিয়ার একটি অডিওর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ওই অডিওটি আমরা শুনেছি। মেয়ে কণ্ঠটি মুনিয়ার বলে তার বড় বোন নিশ্চিত করেছেন।”
অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া জাতীয় সংসদের একজন হুইপপুত্রের সঙ্গে মুনিয়ার কথোপকথনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “অন্য সব বিষয়ের মতো এ নিয়েও তদন্ত করছি। তবে এ ব্যাপারে এখনও কারো সাথে আনুষ্ঠানিক কথা হয়নি।”
এদিকে বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তার বাসায় সাংবাদিকদের বলেছেন, “মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় কারও অপরাধ থেকে থাকলে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।”
তবে বিষয়টি যেহেতু তদন্তাধীন, তা শেষ হলেই এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মুনিয়া ঢাকার একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি কুমিল্লায়; পরিবার সেখানেই থাকে। তিনি ঢাকায় একাই থাকতেন গুলশানের ওই ফ্ল্যাটে।
মুনিয়ার লাশ উদ্ধারের পরের দিন মঙ্গলবার পুলিশের পক্ষ থেকে আনভীরের দেশ ত্যাগের নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
আনভীর যেন দেশত্যাগ করতে না পারে সে জন্য ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকেও পুলিশ চিঠি দিয়েছে।