বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রী। শিল্পকলা, শিক্ষা, বাণিজ্য, সাহিত্য, বিজ্ঞান, খেলাধূলা, সমাজসেবা ও সরকারি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য এই সম্মান প্রদান করেন ভারত সরকার।
এই সম্মান পাওয়া এক গর্বের বিষয়। কিন্ত এবার এই সম্মানকে প্রত্যাখান করলেন কিংবদন্তি বাঙালি সংগীতশিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।
৯০ বছর বয়সী এই সংগীতশিল্পী ইতোমধ্যে গীতশ্রী সম্মান পেয়েছেন। বঙ্গবিভূষণ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। গানের জন্য জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন। তাকে ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কারে সম্মানিত করতে চেয়েছিল ভারতীয় সরকার।
মঙ্গলবার বিকেলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে। কিংবদন্তি এই শিল্পীকে বলা হয়, আমরা আগামীকাল আপনাকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করতে চাই। আপনি কি নেবেন? তাহলে অন্যান্য পুরস্কারপ্রাপ্তদের সঙ্গে আপনার নামও ঘোষণা করা হবে?
জানা গেছে, অত্যন্ত অপমানিত এবং অসম্মানিত বোধ করে পদ্মশ্রী সম্মান প্রত্যাখান করেছেন তিনি। কিংবদন্তি এই সংগীতশিল্পী ভারতীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এই পুরস্কার পাওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের আগে থেকে তাকে কিছু জানায়নি। হঠাৎ ফোন করে তার কাছে যেভাবে পদ্মশ্রী সম্মান দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে সেটা তার কাছে যথেষ্ট অপমানজনক মনে হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এভাবে কেউ পদ্মশ্রী দেয়? এরা জানে না আমি কে! নব্বই বছরে আমায় শেষে পদ্মশ্রী নিতে হবে? আর এই ফোন করে বললেই চলে যাব আমি? শিল্পীদের কোনো সম্মান নেই আর।’
তিনি বলেন, আমার এই সম্মাননা চাই না। আর একটা কথা জেনে রাখুন-আমার শ্রোতারাই আমার পুরস্কার।
প্রবীণ এই শিল্পী বলেন, বাংলার মানুষ আশা করি বুঝবে, কোন যন্ত্রণা থেকে পদ্মশ্রী খেতাব ফিরিয়ে দিলাম। সত্যি আমার এসব খেতাবের দরকার নেই। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে মানুষের এতগুলো বছরের বুক ভরা ভালোবাসাই আমার পুরস্কার।
১৯৭১ সালে ‘জয় জয়ন্তী’ এবং ‘নিশিপদ্ম’ সিনেমায় গানের জন্য শ্রেষ্ঠ গায়িকা হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার তাকে ২০১১ সালে ‘বঙ্গবিভূষণ’ উপাধিতে সম্মানিত করে।
জানা গেছে, বর্তমানে শারীরিক ভাবে বেশ খানিকটা অসুস্থ রয়েছেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। আর এই অবস্থাতেই তাকে দিল্লি থেকে ফোন করে নাকি সরাসরি কোনো কথা না বলেই বলা হয় যে উনি এই সম্মান নিতে চাইলে তার নাম নথিভুক্ত করা হবে। আর এই কথা শুনেই অপমানিত বোধ করেছেন তিনি।
এর আগে ১৯৮৭ সালে ভারতের কিংবদন্তি বাঙালি সংগীতশিল্পী, সংগীত পরিচালক হেমন্ত মুখোপাধ্যায় পদ্মশ্রী সম্মাননা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।