বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: তানিম রেজা বাপ্পি নামের এক যুবকের সঙ্গে স্বামী ‘পরিত্যক্তা’ এক নারীর পরিচয় হয় ২০২০ সালে। একপর্যায়ে তানিম ওই নারীকে বিয়ে করে সংসার করতে শুরু করেন। পরে ওই নারী জানতে পারেন ‘বিয়ে ভুয়া’ ছিল। পরে তানিন ওই নারীকে হাতিরঝিল থানা এলাকার একটি বাসায় নিয়ে যান। সেখানে দলবেঁধে ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় হাতিরঝিল থানায় মামলা করতে গেলে ওসিসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা তা গ্রহণ না করে ১ লাখ টাকা দিয়ে আপস করতে চাপ দেন ভিকটিমকে। উপায় না পেয়ে ওই নারী এখন আদালতের দারস্থ হয়েছেন।
মামলায় ভিকটিম এসব অভিযোগ করে হাতিরঝিল থানার ওসি আব্দুর রশিদ, পরিদর্শক (তদন্ত) মহিউদ্দিন ফারুক, পরিদর্শক (অপারেশন) গোলাম আজম ও দুই এসআইসহ ১৩ জনকে আসামি করে মঙ্গলবার নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এ মামলা দায়ের করেছেন।
বিচারক জুলফিকার হায়াত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- তানিম রেজা বাপ্পি, পান্নু হাওলাদার, ইউসুফ রিপন, কাজী তোফাজ্জল হোসেন, জাভেল হোসেন পাপন, মোহাম্মদ জামাল, রাকিবুল হাসান, এসআই শরিফুল, এসআই চয়ন ও মোসাম্মৎ আলেয়া।
মামলায় ওসিসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দলবদ্ধ ধর্ষণে অভিযুক্তদের সহযোগিতা করার অভিযোগ এনেছেন ভিকটিম নারী।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বাদী একজন স্বামী ‘পরিত্যক্তা’ নারী। তিনি খিলগাঁওয়ে বাবার বাড়িতে থাকেন। প্রায় এক বছর আগে তার সঙ্গে রাজধানীর ডেমরা রসুলপুরের তানিম রেজা বাপ্পির পরিচয় হয়। ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর আসামি তানিম তার সহযোগীদের নিয়ে মামলার বাদীর ভাড়া বাসায় আসেন। সেখানে তানিম বাদীকে বিয়ে করেন। বিয়েটা ছিল সাজানো। দুই মাস ঘর-সংসার করেন। এরপর বাদীর সন্দেহ হয়। তিনি কাবিননামা চান। তারা বিয়ের কাজী তোফাজ্জল হোসেনের বাড়িতে যান। বাদী জানান, তাদের বিয়ের কোনো কাগজপত্র নেই। বিয়ের নাটক সাজিয়ে তানিম রেজা বাপ্পি বাদীকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
মামলায় ভিকটিম আরও অভিযোগ করেন, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মামলার তানিম রেজা হাতিরঝিলের পাশের একটি বাসায় নিয়ে যান ভিকটিমকে। সেখানে নিয়ে জাভেল হোসেন পাপন ও মোহাম্মদ জামাল মিলে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। এ সময় ভিকটিম ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে সুস্থ হয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাতিরঝিল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। থানার ওসিসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা কয়েকজন আসামিকে আটক করেন। কিন্তু আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশ করে তারা এই মামলা গ্রহণ না করে বাদীকে (ভিকটিম) এক লাখ টাকা নিয়ে আপস করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা ধর্ষণের কোনো প্রতিকার না করে উলটো ধর্ষণকারীদের সহায়তা করেছেন বলেও মামলায় অভিযোগ আনেন ওই নারী।