বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : খালিদ হাসান মিলু। এক কিংবদন্তি সংগীতশিল্পীর নাম। তাকে কেউ বলেন মধুমাখা কণ্ঠের গায়ক। কেউ কেউ ‘স্বর্ণকণ্ঠ’ বলে তাকে সম্মানিত করে থাকেন। এই কিংবদন্তি গায়কের আজ মৃত্যুবার্ষিকী।
২০০৫ সালের ২৯ মার্চ রাত ১২টা ১০ মিনিটে সবাইকে দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দেন সুদর্শন এই কণ্ঠশিল্পী।
এখনো প্রতিদিন বাজে তার গান। ইউটিউবে চোখ রাখলেই সেটা বোঝা যায়। বিশেষ করে চলচ্চিত্রের জন্য গাওয়া তার অসংখ্য গান কালজয় করে বেজে চলেছে শ্রোতাদের হৃদয়ে।
‘যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে জীবনে অমর হয়ে রয়’, ‘অনেক সাধনার পরে আমি পেলাম তোমার মন’, ‘কতদিন দেখিনা মায়ের মুখ’, ‘নীলা তুমি আবার এসো ফিরে’, ‘নিশিতে যাইও ফুলবনে’-এরকম অসংখ্য জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের গানে কন্ঠ দিয়েছেন এই চির সবুজ গায়ক।
১৯৮০ সালে মাত্র বিশ বছর বয়সে মিলুর সঙ্গীত ক্যারিয়ার শুরু। স্বল্প সময়ে তিনি বারটি অ্যালবাম এবং প্রায় আড়াইশ’ চলচ্চিত্রের গানসহ পাঁচ হাজারের মতো গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। ১৯৮০ সালে তার প্রথম ওগো প্রিয় বান্ধবী অ্যালবামের মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করেছিলেন। এ ছাড়াও তার উল্লেখযোগ্য অ্যালবামগুলো হচ্ছে- প্রতিশোধ নিও, নীলা, শেষ ভালোবাসা, আয়না, মানুষ ইত্যাদি।
নায়ক রাজ্জাক পরিচালিত ও অভিনীত বাবা কেন চাকর সিনেমায় ব্যবহৃত বিখ্যাত গান ‘আমার মতো এত সুখী নয়তো কারো জীবন, কি আদর স্নেহ ভালবাসায় জড়ানো মায়ার বাঁধন। জানি এ বাঁধন ছিড়ে গেলে কভু আসবে আমার মরণ’-এর মত অসংখ্য গানের এই শিল্পী আজও মানুষের হৃদয়ে বিশেষ স্থানে অবস্থান করছেন।
শ্রোতাদের ভালোবাসার পাশাপাশি মিলু পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ‘হৃদয় থেকে হৃদয়’ চলচ্চিত্রে গানের জন্য ১৯৯৪ সালে তিনি এই সম্মাননা পান। তার পরবর্তী প্রজন্ম প্রতীক হাসান ও প্রীতম হাসানও হাঁটছেন বাবার দেখানো পথে। তারাও বেশ আলোচিত সঙ্গীতশিল্পী। বাবার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই গান করে যাচ্ছেন।
গুণী এই সঙ্গীত শিল্পীকে ঘিরে কোনো আয়োজনই চোখে পড়ে না চলচ্চিত্র, সঙ্গীতাঙ্গন ও গণমাধ্যমে। এটা গুণীর কদরের অবমাননার মতোই বলে মনে করেন মিলুর সমসাময়িক অনেক শিল্পী। তাদের দাবি, ‘আজকে মিলুর মতো শিল্পীকে ভুলে যাওয়ার মিছিল দেখে ভয় হয়, একদিন আমাদেরও কেউ মনে রাখবে না!’