বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : প্রথম দুই ম্যাচ হারের পর বাংলাদেশের টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় অনেকটাই নিশ্চিত ছিল। গাণিতিক হিসাব নিকাশে খানিকটা সম্ভাবনা ছিল পাঁচ সেরা রানার্স আপের মধ্যে থাকার। সেটা যে শুধুই কাগজে-কলমে যা বাস্তবে অসম্ভব, সেটাই আজ বাছাই পর্বের শেষ ম্যাচে প্রমাণ করেছে মালয়েশিয়া। স্বাগতিকদের বিপক্ষে বাংলাদেশ ৪-১ গোলে হেরেছে।
এই হারে বাংলাদেশ কোনো পয়েন্ট ছাড়াই দেশে ফিরছে। আর এই গ্রুপের স্বাগতিক মালয়েশিয়া গ্রুপের রানার্স আপ হয়ে বাছাই পর্বে সেরা পাঁচ রানার্স আপের মধ্যে থেকে এশিয়া কাপ নাম লিখিয়েছে। এই টুর্নামেন্টের বাছাইয়ে বাংলাদেশের প্রাপ্তি শুধু দু’টি গোলই।
প্রথমার্ধে বাংলাদেশ লড়াই করে ২-১ গোলে পিছিয়ে ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে সেই লড়াকু বাংলাদেশকে দেখা যায়নি। দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিটেই বাংলাদেশ গোল হজম করে আরও পিছিয়ে পড়ে। স্কোরলাইন ৩-১ হলেও বাংলাদেশ গোলের চেষ্টা করে খেলায় ফেরার চেষ্টা করেছে। ওয়ান ভার্সেস ওয়ান পরিস্থিতিতে ফরোয়ার্ডদের গোল করতে না পারার ব্যর্থতায় আর গোল করা হয়নি। উল্টো রক্ষণ ও গোলরক্ষকের ভুলে ৭৩ মিনিটে বাংলাদেশ ৪-১ গোলে পিছিয়ে পড়ে।
এরপর বাংলাদেশের ফুটবলাররা খানিকটা মেজাজ হারিয়েছেন। ম্যাচ শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট আগে বল দখলের লড়াইয়ে দুই দলের ফুটবলাররা বিবাদে জড়ান। যেখানে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া অত্যন্ত আগ্রাসী মনোভাব দেখান। রেফারি শুধুমাত্র সুফিলকে হলুদ কার্ড দেখিয়েছেন সেই যাত্রায়।
এই ম্যাচে বাংলাদেশের রক্ষণভাগের দুর্বলতা অত্যন্ত প্রকটভাবে ধরা পড়েছে। বক্সের মধ্যে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড় মার্কিংয়ে ভুল ছিল অনেক। বাংলাদেশের রক্ষণের ফাঁক দিয়ে মালয়েশিয়ার ফরোয়ার্ডরা অবলীলায় হেড, শট নিয়েছেন। গোলরক্ষক জিকো বেশ কয়েকটি আক্রমণ প্রতিহত করেছেন। এত আক্রমণের মধ্যে নিজে খেই হারিয়েছেন কয়েকবার।
বাংলাদেশ প্রথমার্ধে কিছুটা আশা জাগানিয়া ফুটবল খেলেছিল। অর্ধ লক্ষাধিক মালয়েশিয়ান দর্শকদের সামনে সমানে সমান লড়ার চেষ্টা করেছে। যদিও আক্রমণ, বল পজেশন সব কিছুতে স্বাগতিকরাই এগিয়ে ছিল। গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো একটি নিশ্চিত গোল সেভ করেন আরেকটি বল ক্রসবারে লাগে। ১৬ মিনিটে রেফারির এক সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে পেছনে ঠেলে দেয়। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদ বক্সের মধ্যে বল ক্লিয়ার করেন। রেফারি সেটিকে ফাউল ভেবে পেনাল্টির নির্দেশ দেন। মালয়েশিয়ার সাফাই রসিদ পেনাল্টি থেকে গোল করেন। জিকো বলের দিকেই ডাইভ দিয়েছিলেন। তার হাত ছুঁয়ে বল জালে জড়ায়।
পিছিয়ে পড়লেও বাংলাদেশ ম্যাচে থাকার চেষ্টা করে। ৩১ মিনিটে ম্যাচে সমতাও আনে। গোলের অ্যাকশন আগের ম্যাচের মতোই। বিশ্বনাথ ঘোষের লম্বা থ্রো রাকিবের ব্যাক হেড এবং ইব্রাহিমের হেডে বল জালে। এই গোলে বুকিত জলিলের মালয়েশিয়ান অর্ধ লক্ষাধিক দর্শক স্তব্ধ। হাজার জনেক বাংলাদেশ দর্শকদের উল্লাস।
এই উল্লাস বেশিক্ষণ স্থায়ী থাকেনি। সাত মিনিট পর ডিয়ন কুলস আবার স্বাগতিকদের লিড এনে দেন। ডিয়নের নেয়া দূর থেকে শট জিকোর হাতের নিচ দিয়ে যায়। জিকো একটু পড়ে ডাইভ দিয়েছেন। এই গোলে জিকোর কিছুটা দায় থাকলেও প্রথমার্ধে বাংলাদেশ যে ম্যাচে টিকে ছিল এর পুরো কৃতিত্ব জিকোর। তার দুর্দান্ত কয়েকটি সেভে বাংলাদেশ নিশ্চিত গোল থেকে রক্ষা পেয়েছে। তবে তাতে ম্যাচশেষে কেবল ব্যবধানটাই বেড়েছে, ফলাফলটা বদলায়নি আর।