বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : রাজধানীর চামেলীবাগে নিজের বাসায় বাবা পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও মা স্বপ্না রহমানকে হত্যাকারী ঐশী রহমানের কথা মনে আছে? বাবা-মাকে খুনের দায়ে আদালতে যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া সেই ঐশী এখন গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কারাগারে বন্দি। কারাগারে কেমন আছেন সেই ঐশী?
কারাগারের একটি সূত্র জানায়, রমজানে নিয়মিত রোজা রাখা ও নামাজ পড়ে দিন পার করেছেন ঐশী। এছাড়াও নানা ধরনের বইপত্র পড়ে সময় কাটান এ তরুণী বন্দি। কিছুদিন আগে তাকে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী গ্রন্থ ‘কারাগারের রোজনামচা’ পড়তেও দেখা গেছে।
ঐশী যখন তার বাবা-মাকে হত্যা করে তখন তিনি নেশাসক্ত ছিল বলে জানা যায়। বাসায় নির্বিবাদে নেশা করার জন্যই কফির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে এবং পরে কুপিয়ে হত্যা করে বাবা-মাকে। কারাগারে যাওয়ার পর থেকে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন তিনি। তবে এখনেএকদম চুপচাপ থাকেন।
এ ব্যাপারে কাশিমপুর মহিলা কারাগারের জেলার হোসনে আরা বিথি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘কারাগারে ঐশী ভালোই আছে। এখন চুপচাপ থাকে। নামাজ-কালাম পড়ে সময় কাটে তার। এছাড়া কিছু বইপত্র পড়ে। কিছুদিন আগে কারাগারের রোজনামচা বইটি পড়তে দেখেছি ঐশীকে।’
পরিবারের কেউ খোঁজখবর নিতে আসে কি-না জানতে চাইলে এই জেলার বলেন, ‘এখন করোনার কারণে দেখাস্বাক্ষাত একেবারেই বন্ধ। আমি এখানে আসার পরে এখন পর্যন্ত তার পরিবারের কাউকে আসতে দেখিনি।’
জেলার হোসনে আরা বিথি বলেন, ‘ঈদের দিনে আমাদের কারাগারের বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা থাকে। সকালে সেমাই খেতে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুপুরে ছিল গরুর গোশত পোলাও আর সালাদ। এছাড়া রাতে থাকবে রুই মাছ ভাত সবজি।’
তিনি জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েদিদের নতুন পোশাক দেওয়া হয়ে থাকে। কারাগারে বসে কেউ চাইলে তিন মিনিট তার পরিবারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতে পারে। ঐশীও চাইলে সেই সুযোগটি নিতে পারে।
বাবা-মাকে হত্যার দায়ে ২০১৫ সালে ঐশীকে ফাঁসির আদেশ দেয় বিচারিক আদালত। তার বন্ধু রনির সাজা হয় দুই বছরের কারাদণ্ড। পরে আপিলে ২০১৭ সালের ৬ জুন উচ্চ আদালত ঐশীর সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করে। সেই থেকে ঐশী স্থায়ীভাবে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আছেন।
এর আগে ২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট সকালে চামেলীবাগের বাসা থেকে পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগেই ঐশী বাসা থেকে পালিয়ে যায়।
পরদিন ১৭ আগস্ট মাহফুজুর রহমানের ভাই মশিউর রহমান এ ঘটনায় পল্টন থানায় হত্যা মামলা করেন। ওইদিনই ঐশী পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করে তার বাবা-মাকে খুন করার কথা জানায়।
২০১৩ সালের ২৪ আগস্ট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ঐশী। তবে পরে ওই জবানবন্দি প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু সাক্ষ্য, আলামত ও অন্যান্য যুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে তা নাকচ হয়ে যায়।