বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : বিশ্বের ১ নম্বর লেগ স্পিনার রশিদ খান। লেগ স্পিন, গুগলি, ফ্লিপার- মূল বোলিং অস্ত্র। বিশ্বসেরা লেগ স্পিনারের বোলিংয়ের মূল বৈশিষ্ট্য কী? অন্য সবার চেয়ে দ্রুতগতিতে ফ্ল্যাট বোলিং করেন রশিদ। অফ স্পিনার মুজিব-উর-রহমান একটু বেশিই বৈচিত্র্যময়। অদ্ভুত অ্যাকশনে ‘ছয়’ রকম বোলিং করেন।
মোহাম্মদ নবী জেনুইন অফ স্পিনার। নিখুঁত লাইন-লেন্থ বজায় রেখে ছোট্ট ছোট্ট টার্নে বোলিং করেন আফগান অধিনায়ক। বাঁহাতি পেসার ফজল ফারুকী নতুন বলের সুইংয়ে প্রতিপক্ষকে নাজেহাল করতে পারদর্শী। এই তিন স্পিনার ও সুইং বোলারকে সামলাতে আত্মবিশ্বাসী সাকিব বাহিনী পুরোপুরি প্রস্তুত।
শারজাহতে বাংলাদেশের এশিয়া কাপ মিশন আজ শুরু আফগানিস্তান ম্যাচ দিয়ে। প্রতিপক্ষ দলে রশিদ, মুজিবের মতো বিশ্বসেরা স্পিনার থাকলেও বাংলাদেশের চিন্তায় শুধুই আফগানিস্তান। গতকাল বিশ্রাম নিয়েছে টাইগাররা। হোটেলে আজকের ম্যাচে টাইগারদের পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন ‘টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট’ শ্রীধরন শ্রীরাম। তিনি বলেন, রশিদ কিংবা অন্য কোনো বোলার নিয়ে নয়, আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলতে প্রস্তুত দল, ‘কোনো সন্দেহ নেই আফগানিস্তান একটি বিপজ্জনক দল। তবে দলটি একা রশিদের ওপর নির্ভরশীল নয়। রশিদ টি-২০ ক্রিকেটে বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। আমরা রশিদ, ফজল ফারুকীকে নিয়ে ভাবছি না। আমাদের প্রস্তুতি আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে।’
প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং- তিন বিভাগেই শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়েছে আফগানিস্তান। প্রথম সেশনে বোলিং এবং দ্বিতীয় সেশনে পাওয়ার হিটিংয়ের পাত্তাই পায়নি দ্বীপরাষ্ট্রকে। আজ আফগান বোলিংয়ের পাশাপাশি তাদের পাওয়ার ব্যাটিংকেও সামলাতে হবে সাকিব বাহিনীকে। কাজটি সহজ নয়। তবে প্রস্তুত সাকিবরা। মূল ওপেনার লিটন দাস নেই। নেই অভিজ্ঞ তামিম ইকবাল। তাদের অনুপস্থিতিতে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারের দায়িত্ব পালন করবেন এনামুল হক বিজয় ও মোহাম্মদ নাঈম শেখ। বিজয়ের তুলনায় নাঈম একটু বেশিই আগ্রাসী মেজাজে ব্যাটিং করেন। আজ তাকে দায়িত্ব নিতে হবে ফজল ও নাভিনের বিপক্ষে রানের চাকা সচল রাখতে। টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট আশাবাদী নাঈমকে নিয়ে, ‘নাঈম ন্যাচারাল ক্রিকেটার। স্ট্রোক খেলতে বেশি পছন্দ করে। তবে সিচুয়েশন অনুযায়ী খেলতে হবে।’
টি-২০ ক্রিকেটে আফগানিস্তান বরাবরই প্রবল প্রতিপক্ষ। বিশেষ করে তাদের বোলিং বিভাগের জন্য এগিয়ে। ব্যাটিং বিভাগে ওপরের সারির ব্যাটাররা পাওয়ার হিটিং করলেও মিডল ও লেট মিডল অর্ডারে দুর্বলতা রয়েছে। প্রতিপক্ষের রান আটকাতে মুস্তাফিজ, ইবাদত, সাইফুদ্দিন, তাসকিনদের নতুন বলে লাইন ও লেন্থ বজায় রাখতে হবে। মূল কাজটি করতে হবে সাকিব, নাসুম ও মেহেদী মিরাজকে। শ্রীরাম ভীষণ আত্মবিশ্বাসী দল নিয়ে। দলে সাকিবের মতো একজন মেধাবী ক্রিকেটার থাকা অনেক বড়। তিনি বলেন, ‘টি-২০ ক্রিকেটে সাকিব অনেক আধুনিক মস্তিষ্কের ক্রিকেটার। তার ৪ ওভার বোলিং ও ব্যাটিং দলের অন্যতম সম্পদ। আমরা আত্মবিশ্বাসী ম্যাচ নিয়ে।’
চার বছর আগে এশিয়া কাপে রশিদের লেগ স্পিন ও গুগলি সামলাতে নিয়মিত ওপেনার ইমরুল কায়েশ ৬ নম্বরে ব্যাটিং করেছিলেন। সাফল্যও পেয়েছিলেন। রশিদসহ আফগান স্পিনারদের বিপক্ষে বাঁহাতি ব্যাটার সাবলীল ব্যাটিং করে ৭২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন। আজ মিডল অর্ডারে এই দায়িত্ব পালন করতে প্রস্তুত আফিফ হোসেন ও অধিনায়ক সাকিব। তবে দুই অভিজ্ঞ মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহকে দায়িত্বশীল হতে হবে। দুই সিনিয়র ক্রিকেটার নিয়ে টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট বলেন, ‘দুজনেই অনুশীলনে বাড়তি সময় দিয়েছেন। তারা জানেন তাদের কাজ কী? আমি মনে করি, তারা দুজনেই তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখেন।’
এশিয়া কাপের সুপার ফোরে খেলতে বাংলাদেশকে অলআউট ক্রিকেট খেলতে হবে। প্রতিপক্ষ হিসেবে আফগানিস্তান শক্তিশালী হলেও টাইগারদের সামর্থ্য রয়েছে নিজেদের প্রমাণের।