বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার তার আইনজীবীদের সঙ্গে এক ঘণ্টা কথা বলেছেন।
সোমবার (১০ অক্টোবর) চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. কামরুল হাসান কক্ষে আদালতের অনুমতি নিয়ে আইনজীবীরা তার সঙ্গে কথা বলেন।
বাবুল আক্তারের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আজকে বাবুল আক্তারকে আদালতে হাজির করা হলে আইনজীবীরা তার সঙ্গে কথা বলার অনুমতি চান। আদালত অতিরিক্ত পুলিশ উপ-কমিশনারের (প্রসিকিউশন) কক্ষে তাদের কথা বলার অনুমতি দেন।
বাবুল আক্তারের সঙ্গে কি কথা হয়েছে জানতে চাইলে এই আইনজীবী বলেন, মামলার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। আইনগত বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাবুল আক্তার একটা জিনিস জোর দিয়ে বলেছেন, মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যার ঘটনায় উনি জড়িত নন।
উচ্চ আদালতে বাবুল আক্তারের আইনজীবী শিশির মনির, গোলাম মাওলা মুরাদ ও সাদ্দাম হোসেনসহ কয়েকজন আইনজীবী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, আজ বাবুল আক্তারসহ ৭ জনকে আসামি করে পিবিআইয়ের দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম (মিতু)। এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে মামলায় অভিযোগ করেন তিনি। তবে দিন যত গড়িয়েছে মামলার গতিপথও পাল্টেছে। একপর্যায়ে সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে আসে বাবুল আক্তারের নাম। তদন্তে তার বিরুদ্ধেই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে হেফাজতে নেয় পিবিআই।
পরে গত বছরের ১২ মে বাবুল আক্তারসহ আট জনকে আসামি করে নতুন করে মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। রিমান্ড শেষে প্রথমে আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও পরে জবানবন্দি দেননি বাবুল। পরে তাকে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয়।
চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি মিতু হত্যার ঘটনায় তার বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে পিবিআই। সংস্থাটি জানায়, একই ঘটনায় বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্ত এগিয়ে নিতে মিতুর বাবার মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। একই ঘটনায় দুটি মামলা চলতে পারে না।
সম্প্রতি আদালত এটিকে ত্রুটিপূর্ণ উল্লেখ করেন। তাই আদালতের পর্যবেক্ষণ মেনে ও বিধিবিধান অনুসারে মিতুর বাবার দায়ের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।
আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, বাবুলের করা মামলাটির অধিকতর তদন্ত শেষ করে বাবুলসহ ৭ জনকে আসামি করে ১৩ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।