তারা কোহলিকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে আনুশকা শর্মার আগে ভারতের বর্তমান অধিনায়ক রোহিত শর্মা স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল কোহলির। এছাড়াও একাধিক নায়িকার সঙ্গে সম্পর্কের গুঞ্জন ছিল কোহলির।
বর্তমান বলিউড সুন্দরী অনুশকা শর্মার সঙ্গে সুখে সংসার করছেন কোহলি। তাদের দু’জনের সংসারে রয়েছে ভামিকা নামে একজন কন্যা সন্তানও। তাদের দু’জনের প্রেমের পরশের আচ প্রায়ই ধরা পড়ে ক্যামেরায়। একে অপরের প্রতি তাদের ভালবাসার কথা নিজেরাই সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেন। কিন্তু বিরাটের জীবনে অনুশকার আগমনের আগে অনেক নায়িকারই প্রেমে পড়েছিলেন তিনি। যা ঘিরে জোরদার চর্চাও চলেছিল। এর মধ্যে রয়েছেন বর্তমান অধিনায়ক রোহিত শর্মার স্ত্রীও।
প্রথম বার যার সঙ্গে কোহলির প্রেমের গুঞ্জন ছড়ায় তিনি ২০০৭ সালের মিস ইন্ডিয়া সারা জেন ডায়াস। মাস্কাটে জন্ম নেয়া এই সুন্দরীর সঙ্গে কোহলির প্রেমকাহিনী সে সময় খুব চর্চিত হয়েছিল। কোহলির থেকে কয়েক বছরের বড় সারা। কিন্তু প্রেম কি বয়সের গণিত মানে! তবে সে সম্পর্ক বেশিদিন টেকেনি। হিন্দি ও তামিল ছবিতে কাজ করেছিলেন সারা। শোনা যায়, দু’জনের ব্যস্ত জীবনে কেউ কাউকে ঠিক মতো সময় দিতে পারতেন না। আর সে কারণেই ওই সম্পর্কে ভাঙন ধরে। তবে এই সম্পর্ক নিয়ে তারা কেউই কখনও মুখ খোলেননি।
বিরাটের সঙ্গে আর যে সব নায়িকার প্রেমের গুঞ্জন ছড়িয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম অভিনেত্রী তমান্না ভাটিয়া। বলিউডের পাশাপাশি তামিল, তেলুগু ছবিতেও দাপিয়ে কাজ করেছেন তমান্না। একটি মোবাইল ফোনের বিজ্ঞাপনের সূত্রে কোহলি ও তমান্নার দেখা হয়। সেই সাক্ষাৎ পরে প্রেমে গড়ায়। ২০১২ সালে তাদের সম্পর্কের কথা শোনা গিয়েছিল। এই সম্পর্কের কথা কেউই কখনও স্বীকার করেননি।
বরং গুঞ্জনের প্রায় সাত বছর পর একটি টকশোয়ে এ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তমান্না। তিনি বলেছিলেন, শুটিংয়ের সময় আমরা চারটি কথা বলেছিলাম। এর পর বিরাটের সঙ্গে কখনও দেখাও হয়নি, কথাও হয়নি। তবে বিরাটের প্রশংসা করেছিলেন তমান্না। বলেছিলেন, যে সব অভিনেতার সঙ্গে আমরা কাজ করি, তাদের থেকে কোহলি অনেক ভাল।
২০১১ সালে ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের পর যখন আইপিএল খেলতে বিজয় মাল্যের রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুরে যোগ দিয়েছিলেন কোহলি, সে সময়ও তার প্রতি অনেক মডেলই আকৃষ্ট হয়েছিলেন বলে শোনা যায়। বিজয় মাল্যর পার্টিতে অনেক মডেল, অভিনেত্রীদেরই আনাগোনা ছিল। আর সেখানে বিরাটের মতো কেউ থাকলে তার যে প্রেমে পড়বেন না তারা, তা তো হয় না! শোনা যায়, এ ভাবেই সঞ্জনা গলরানির সঙ্গে নাকি মন দেয়া-নেয়া হয়েছিল কোহলির।
দক্ষিণী ছবিতে কাজ করেছেন সঞ্জনা। বিরাট ও সঞ্জনার ছবি সমাজমাধ্যমেও দেখা গিয়েছিল। তবে কেউই এই সম্পর্কের কথা স্বীকার করেননি। বিরাটের ‘শুধু বন্ধু’ বলেই দাবি করেছিলেন সঞ্জনা। তবে আইপিএল সে সময় শেষ হতেই তাদের সম্পর্কের গুঞ্জনেরও যবনিকা পতন ঘটেছিল।
২০১২ সালে মুক্তি পেয়েছিল আমির খান, রানি মুখার্জি অভিনীত ‘তালাশ’। এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন ব্রাজিলের অভিনেত্রী ইজাবেল লেইট। তার প্রেমে মজেছিলেন বিরাট। ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কোহলি ও ইজাবেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে শোনা যায়। তবে, তাদের সেই সম্পর্ক দু’বছরের বেশি টেকেনি। বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে কোহলি একবার এক সাক্ষাৎকারে সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, হ্যাঁ, আমরা সম্পর্কে ছিলাম প্রায় দু’বছর। পারস্পরিক বোঝাপড়ার মধ্যে এই সম্পর্ক থেকে আমরা বেরিয়েছি।
ইজাবেলের সঙ্গে সম্পর্কের মধ্যেই নাকি আরও এক তরুণীতে মজেছিলেন বিরাট। তার নাম ঋতিকা সাচদেব। তিনি পেশায় ‘স্পোর্টস ট্যালেন্ট ম্যানেজার’। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, ২০১৩ সালে কোহলির হয়ে কাজ করেছিলেন ঋতিকা। সে সময় নাকি কোহলি ও ঋতিকাকে প্রায়শই এক সঙ্গে দেখা যেত। এমনকি, তারা এক সঙ্গে সিনেমাও নাকি দেখতে যেতেন। তবে সেই গুঞ্জন নিয়ে কেউই কখনও মুখ খোলেননি। পরে অবশ্য ২০১৫ সালে ক্রিকেটার রোহিত শর্মার সঙ্গে বিয়ে হয় ঋতিকার। কোহলি আর ঋতিকার মধ্যে বর্তমানে অবশ্য বন্ধুত্ব রয়েছে।
বাইশ গজে ক্যারিয়ার শুরুর সময় নাকি তামিল অভিনেত্রী সাক্ষী আগারওয়ালেরও প্রেমে পড়েছিলেন বিরাট। তবে সেই সম্পর্ক বেশি দূর এগোয়নি।
এত নারীর ভিড়ে আসল হিরে ঠিক বেছে নিয়েছেন কোহলি। বারবার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হলেও সারা জীবনের সঙ্গী হিসেবে বলিউডের প্রথম সারির অভিনেত্রী অনুশকা শর্মাকেই বেছে নিয়েছেন কোহলি। বিরাট ও অনুশকার প্রেমকাহিনি রীতিমতো চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল সেই সময়। যদিও তাদের প্রেমের সম্পর্কের মধ্যেও শৈত্যপ্রবাহ বয়েছিল। মাঝখানে দু’জনের মন কষাকষিও হয়। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে পরে তাদের মধুরেণ সমাপয়েৎ হয়।
২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর ইটালিতে গাঁটছড়া বাঁধেন বিরাট-অনুশকা। তাদের বিয়ের ছবিতে এখনও মজে থাকেন ভক্তরা। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে তাদের ঘর আলো করে এসেছেন কন্যা ভামিকা। আপাতত স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে বিরাট রাজার সংসার ভরপুর।