বগুড়ার শেরপুরের একটি বেসরকারি হাইস্কুলের সভাপতির বিরুদ্ধে নিয়োগের আগেই ঘুস নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পদ ভেদে বারো থেকে বিশ লাখ টাকার মধ্যে চলছে এ বানিজ্য। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া এক অডিও ক্লিপের মাধ্যমে বেড়িয়ে এসেছে দুর্নিতির এরকম এক ভয়ঙ্কর চিত্র। এ নিয়ে চাকরি প্রার্থীদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে।
উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের ভীমজানী উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সূত্রে জানা যায়, স্কুলটির প্রধান শিক্ষক, সহকারি প্রধান শিক্ষক, অফিস সহায়ক ও আয়া পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে প্রধান শিক্ষক পদে কোন আবেদন পত্র জমা পড়েনি। অন্যদিকে সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে ৬ জন, অফিস সহায়ক পদে ৪ জন ও আয়া পদে ৭ জন প্রার্থী আবেদন করেছেন।
কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষার আগেই আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয় পড়লে জানা যায়, স্কুলটির পরিচলানা কমিটির সভাপতি আমজাদ হোসেন আয়া পদের জন্য ১২ লক্ষ টাকা দাবি করছেন এক প্রার্থীর অভিভাবকের কাছে। তাতে নিয়োগের জন্য স্থানীয় সাংসদের পিএস, বগুড়ার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহ অনেকজনকে টাকা দিয়ে ম্যনেজ করতে হবে বলে তাকে বলেতে শুনা যায়।
এদিকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য গত অক্টোবরের ২৬ তারিখে বগুড়ার জেলা প্রশাসক বরার লিখিত অভিযোগ করেছেন ৩ জন চাকরি প্রার্থী। তাদের একজন আয়া পদে আবেদনকারী হালিমা আক্তার বলেন, “নিয়োগের আগেই স্কুলের সভাপতি প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন। এমনটা হলে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আমি নিশ্চিত চাকরি পাব না। তাই অভিযোগ করেছি।“ আবার একজন প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়েও আরও বেশি টাকার বিনিময়ে আরেকজনকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন স্কুলটির সভাপতি আমজাদ হোসেন। এমনটাই অভিযোগ করেছেন আয়া পদের অপর আবেদনকারি শামীমা আক্তার। তিনি বলেন, “একই পদে একাধিক প্রার্থীর নিকট থেকে টাকা নিয়েছেন এই সভাপতি।”
কেল্লা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, “নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে প্রধান শিক্ষক পদের জন্য আমি ভীমজানী হাই স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলি। তারা আমার কাছে ২০ লক্ষ টাকা দাবি করেন।“এদিকে তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্কুলটির সভাপতি আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, “আমি কয়েক মাস আগে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি। আমার বিপক্ষের লোকজন পরাজিত হয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করেছন।“ ফাঁস হওয়া অডিও ক্লিপটিও ভিত্তিহীন বলে তিনি দাবি করেন।
এবিষয়ে শেরপুর উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা শেখ নজমুল ইসলাম জানান,”অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত বুধবার অভিযুক্ত ও অভিযোগকারীদের বক্তব্য শোনা হয়েছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।