বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় বান্ধবীকে নিয়ে প্রেমিকের পালিয়ে যাওয়াকে কোনোভাবেই মেনে নিতে না পেরে এক প্রেমিকা আত্মহত্যা করেছে।
শনিবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই দেওয়ান শামীম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে একই দিন সকালে নিজ ঘর হতে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে চিরকুট লিখে তার প্রতারক প্রেমিক ও বান্ধবীকে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে গেছেন তিনি।
নিহত ব্যক্তি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার চরদৌলতদিয়া পরশউল্লাহ মাতুব্বরপাড়ার বদু প্রামাণিকের মেয়ে রুমি আক্তার (১৬)। তিনি পার্শ্ববর্তী সাহাজদ্দিন মণ্ডল ইনস্টিটিউট থেকে এই বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন।
অভিযুক্ত শিমুল রাজবাড়ী সদর উপজেলার কুলারহাট এলাকার বাসিন্দা।
জানা গেছে, রুমির সঙ্গে শিমুলের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। রুমির ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ও প্রতিবেশী শারমিন আক্তার নানানভাবে এ প্রেমে সহযোগিতা করত। শুক্রবার (১১ নভেম্বর) রাতে শিমুলের হাত ধরে শারমিন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।
নিহতের চাচা আমজাদ হোসেন জানান, শনিবার ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির রান্না করে রুমি। পরে তার মা শাহেদা বেগম স্বামীর জন্য খাবার নিয়ে বাড়ির পাশে মাঠে যান। আধাঘণ্টা পরে এসে দেখেন রুমি শনিবার সকাল ৮টার দিকে ঘরের আড়ার সঙ্গে উড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলছে। পরে তিনি চিৎকার করলে বাড়ির লোকজন এসে রুমিকে আড়া থেকে নামান। এ সময় তার পায়ের নিচে একটি ডায়েরি ও চিঠিপত্র পাওয়া যায়। এর মাধ্যমেই তারা ঘটনা জানতে পারেন।
রুমি চিরকুটে লিখেছে- ‘আমি শিমুলকে অনেক ভালোবাসি, আর শারমিন ছিল আমার প্রিয় বান্ধবী। শিমুল শারমিনকে নিয়ে চলে গেছে। এই কষ্ট আমি সহ্য করতে পারছি না। আমি কিভাবে মুখ দেখাব। ও এত বড় বেইমানি করতে পারল। শিমুলের সঙ্গে আমার যত কথা হয়েছে সব রেকর্ডিং আছে। মা আমাকে মাফ করে দিও। শিমুলকে শাস্তি দিও, তা নাহলে আমার আত্মা শান্তি পাবে না। আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী শিমুল আর শারমিন। আমি পৃথিবীর সব মায়া-মমতা ত্যাগ করে চলে যাচ্ছি। তোমাদের জন্য কষ্ট হচ্ছে। আমাকে ক্ষমা করে দিও মা। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসা’।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই দেওয়ান শামীম জানান, শনিবার সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। একই সঙ্গে রুমির লেখা চিরকুটটাও জব্দ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ হতে মামলা দায়ের করা হলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।