সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৮.১ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৪৬ রান সংগ্রহ করেছে টাইগাররা। জবাবে ৩৮ ওভার পর্যন্ত সফরকারীরা ১২৬ রান করে। এরপর বৃষ্টির কারণে ম্যাচ বন্ধ থাকে প্রায় ৪৫ মিনিট। এরপর ২ ওভারের জন্য মাঠে নামে দুই দল। ২ ওভারের জন্য ডি/এল মেথডে লঙ্কানদের সামনে টার্গেট আসে ১১৯ রানের। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে ৪০ ওভার পর্যন্ত ১৪১ রানে থামে শ্রীলঙ্কা। এতে ১০৩ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
২৪৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে লঙ্কান কাপ্তান উইকেট হারায় অভিষিক্ত শরিফুলের বলে। তার বলে তামিম ইকবালের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লঙ্কান ক্যাপ্টেন কুশল পেরেরা। ওপেনিংয়ে নেমে তিনি সংগ্রহ করেন ১৪ রান।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন দানুশকা গুনাথিলাকা ও পাথুম নিশানকা। তাদের ২৯ রানের জুটি ভেঙে স্বস্তি এনে দিয়েছেন মোস্তাফিজ। অফের বল ডিপ অনে স্কয়ার কাট করেছিলেন গুনাথিলাকা। বলটি দারুণ দক্ষতায় তালুবন্দি করেন সাকিব।
নিশানকাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ দলে স্বস্তি ফিরিয়ে দিলেন সাকিব। তার কুইকারে উড়িয়ে মারতে গিয়ে তামিমের ক্যাচ হয়ে ২০ রান করে সাজঘরে ফেরেন নিশানকা। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপদ আরও বাড়িয়ে দেন মেহেদী মিরাজ। লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন কুশল মেন্ডিসকে। লঙ্কান ব্যাটসম্যান রিভিউ নিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু তাতে লাভ হয়নি।
সাকিব ঘূর্ণিতে এবার পরাস্থ হলেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। এলবিডব্লিউ হয়ে আউট হওয়ার আগে মাত্র ৬ রান করেন ধনাঞ্জয়া। নিখুঁত এলবি হওয়াতে রিভিউর আবেদনও করেননি এই ব্যাটসম্যান। এরপর লঙ্কা শিবিরে ফের আঘাত হানে মিরাজ। ১১ রানে মাহমুদউল্লাহকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন শানাকা।
আগের ম্যাচে বিপদজনক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা অবশ্য এদিন তেমন কিছু করতে পারেননি। ৬ রান করেই বোল্ড হন মেহেদী মিরাজের বলে। এর পর আশেন বান্দারাকে (১৫) ফিরিয়ে জয়টাকে আরও কাছে নিয়ে আসেন মোস্তাফিজুর রহমান। এক ওভার পরেই মোস্তাফিজ আবার আঘাত হানেন। এবার তার বলে সান্দাকান ক্যাচ তুলে দেন তামিমের হাতে।
৩৮ ওভার পর্যন্ত সফরকারীরা ১২৬ রান করে। এরপর বৃষ্টির কারণে ম্যাচ বন্ধ থাকে প্রায় ৪৫ মিনিট। এরপর ২ ওভারের জন্য মাঠে নামে দুই দল। ২ ওভারের জন্য ডি/এল মেথডে লঙ্কানদের সামনে টার্গেট আসে ১১৯ রানের। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে ৪০ ওভার পর্যন্ত ১৪১ রানে থামে শ্রীলঙ্কা। এতে ১০৩ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন টাইগার কাপ্তান তামিম। কিন্তু চামিরার বল ঠিকমত পড়তে পারলেন না। তার করা প্রথম বলেই এলবির শিকার হয়ে ১৩ রানেই সাজঘরে টাইগার এই ওপেনার। তামিমের পর তিন নাম্বারে ব্যাট করতে এসে বাংলাদেশকে বিপদে ফেললেন সাকিবও। চামিরার চতুর্থ বলে এলবির শিকার হন সাকিবও।
আগের ম্যাচে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন লিটন দাস। এই ম্যাচে ধীরেসুস্থে খেলছিলেন তিনি। কিন্তু অতি সাবধানী ব্যাটিংয়েও টিকতে পারলেন লিটন। ৪২ বলে ২৫ রান তুলে সান্দাকানের বলে ক্যাচ তুলে দেন ডি সিলভার হাতে।
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বিদায়ে চতুর্থ উইকেট হারাল বাংলাদেশ। আর দলীয় ৭৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপেই পড়েছে স্বাগতিকরা। লক্ষণ সান্দাকানের বলে লেগ সাইডে খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটরক্ষক কুশল পেরেরার তালুবন্দি হন মোসাদ্দেক (১০)।
দলের বিপদের মুহূর্তে আবারও হাল ধরেছেন মুশফিকুর রহিম। এক প্রান্ত আগলে রেখে এ তারকা ব্যাটসম্যান ব্যাক টু ব্যাক হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। তার ব্যাটে ভর করেই টিম টাইগার্স এগোচ্ছে ধীরে।
ক্রিজে থাকা মুশফিকের সঙ্গে দলের হাল ধরেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। পঞ্চম উইকেটে গড়েছেন দারুণ জুটি। দুজনের এই জুটি থেকে আসে ১০৮ বলে ৮৭ রান। প্রথম ম্যাচের মতো এই ম্যাচে আর পারলেন না হাফসেঞ্চুরি করতে। সম্ভাবনা দেখিয়ে ৫৮ বলে ৪১ রান করে ফেরেন সাজঘরে।
লাকশান সান্দাকানকে চার মেরে রানের খাতা খোলেন আফিফ। শুরু থেকেই আফিফ ইনিংস বড় করতে পারেননি শেষ পর্যন্ত। ৮ বলে ১০ রান করে সাজঘরে ফেরেন। উদানার বলে মিড অনে ধরা পড়েন নিসানকার হাতে।
আফিফের পর ক্রিজে এসে টিকতে পারেননি মিরাজও। ডি সিলভার বলে খালি হাতেই সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। আগের ম্যাচে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে মাঠ ছেড়েছেন ১৬ রানের আক্ষেপ নিয়ে। এবার আর আক্ষেপ থাকলো না, মুশফিক ঠিকই তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি। চার মেরে ১১৪ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার।
১১ রানে সাইফউদ্দিন আউট হন। আর রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন মিরাজ ও শরিফুল। শেষদিকে একাই লড়তে থাকা মুশফিক ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নিজে নবম সেঞ্চুরি তুলে নেন। শেষ পর্যন্ত আউট ১২৭ বলে ১২৫ রান তুলে। দুর্দান্ত এই ইনিংসটি ১০টি চারে সাজানো।
বাংলাদেশ একাদশ:
তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মোসাদ্দেক হোসেন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, শরিফুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান।
শ্রীলঙ্কা একাদশ:
দানুশকা গুনাথিলাকা, কুশল পেরেরা, কুশল মেন্ডিস, পাথুম নিসাঙ্কা, আশেন বান্দারা, ধনঞ্জয় ডি সিলভা, দাসুন শানাকা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, লাকশান সান্দাকান, ইসুরু উদানা ও দুশমন্থ চামিরা।