বরিশাল নগরীসংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীতে একটি জ্বালানি তেলের ট্যাংকারে আগুন লেগে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ হয়েছেন আরো তিনজন। গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নদীর পূর্ব প্রান্তে এ ঘটনা ঘটে। হতাহতরা সবাই ট্যাংকারের প্রকৌশলী ও কর্মচারী ছিলেন।
নিহতরা হলেন স্বাধীন (২৪) ও বাবুল কান্তি দাশ (৬৪)। তারা ট্যাংকারটির কর্মচারী। এছাড়া গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন ট্যাংকারটির প্রকৌশলী কুতুব উদ্দীন (৫০), সহকারী প্রকৌশলী মো. কালাম ও কর্মচারী আশরাফ (৫৫)। দগ্ধ তিনজনকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. বেলাল উদ্দিন দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বরিশাল ফায়ার সার্ভিস স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, এমটি এবাদি-১ নামের ট্যাংকারটি মেঘনা ডিপোর তেল পরিবহন করত। ট্যাংকারটি কীর্তনখোলার পূর্বপ্রান্তে (নগরীর মুক্তিযোদ্ধা পার্কের বিপরীতে) নোঙর করা ছিল। গতকাল বিকালে হঠাৎ সেটিতে আগুন ধরে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। ট্যাংকারটিতে ১৬ জন কর্মচারী ছিলেন। বেশির ভাগ নদীতে লাফিয়ে প্রাণে রক্ষা পেলেও দুজনের দগ্ধ মরদেহ পাওয়া যায়।
জাহাজের বার্বুচি দুলাল বলেন, ‘আমরা কাজ করছিলাম। তখন বিকট শব্দে ইঞ্জিনরুমে বিস্ফোরণ হয়। এরপর পুরো রুমে আগুন লেগে যায়। জাহাজে আমরা ১৬ জন স্টাফ ছিলাম। এর মধ্যে দুজন ছুটিতে বাড়ি গেছেন। তিনজন হাসপাতালে ভর্তি, দুজন বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন। একজন নিখোঁজ। বাকি আটজন অক্ষত রয়েছি।’
সুমন সেন নামের জাহাজের আরেক শ্রমিক বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে বরিশালের মেঘনা ডিপোতে সাড়ে তিন লাখ লিটার তেল নিয়ে তিনদিন আগে জাহাজটি নোঙর করে। গতকাল তেল আনলোড শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই ঘটনাটি ঘটে।’
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি জানান, মরদেহ দাফন ও সৎকারের জন্য পরিবারের সদস্যদের ২০ হাজার করে টাকা নগদ সহায়তা দেয়া হয়েছে। আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিস্ফোরণের কারণ তদন্তে কমিটি গঠন করা হবে।