ডেস্ক: পাকিস্তানের আইনজীবী ও সামাজিক মাধ্যমকর্মী শফিক আহমদ। সন্ধ্যেবেলা হাঁটতে হাঁটতে চুল কাটার সেলুনে যাচ্ছিলেন, চলতে চলতেই হঠাৎ তার মনে হলো- কেউ যেন তাকে অনুসরণ করছে। তার ধারণা, হয়তো তাকে অপহরণ করা হতে পারে এবং তাই হলো। ঘটনাটা ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের। যা নিয়ে বিবিসি বাংলা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার সময় কয়েক মুহূর্ত পরই একদল লোক এসে তাকে ধরে ফেললো, এবং কাছেই রাখা একটি গাড়ির পেছনের সিটে তাকে জোর করে তুলে বসিয়ে দিল। পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় ওকারা শহরের রাস্তায় বসানো সিসিটিভিতে পুরো ঘটনাটি ধরা পড়েছে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ৩৭-বছর বয়স্ক শফিক আহমদ প্রাণপণে ধস্তাধস্তি করছেন নিজেকে ছাড়িযে নেবার জন্য, আর আক্রমণকারীরা আশপাশের পথচারীদের সতর্ক করছে যেন তারা ব্যাপারটাতে নাক না গলায়। আহমেদকে তুলে নিয়ে গাড়িটা অদৃশ্য হয়ে যাবার পর কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত তার কোন খবরই কেউ জানতে পারেনি। শফিক আহমদের বিশ্বাস, যে লোকেরা তাকে অপহরণ করেছিল- তারা পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার লোক।
আহমেদ ছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকার এবং দেশটির শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর একজন কড়া সমালোচক। অনেকেই অভিযোগ করেন, পর্দার আড়াল থেকে সামরিক বাহিনীই পাকিস্তানের রাজনীতির অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারীর ভূমিকা পালন করে।
শফিক আহমদের অন্তর্ধান এবং তার ওপর যে অত্যাচার করা হয়, তা অনেকের মতে ছিল এক বৃহত্তর ‘ক্র্যাকডাউনের’ অংশ- যার লক্ষ| ছিল ভিন্নমতাবলম্বীরা। এর উদ্দেশ্য ছিল, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী যে রাজনৈতিক ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করছে এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনকে ইমরান খানের পক্ষে নিয়ে আসার পেছনে সহায়ক ভুমিকা পালন করেছে – এমন অভিযোগ যারাই করছেন, তাদের কণ্ঠ রোধ করা। সামরিক বাহিনী এবং ইমরান খান উভয়েই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে থাকেন।
আহমদ বিবিসির সাথে কথা বলছিলেন তার হাসপাতালের শয্যা থেকে – যেখানে তিনি সেরে উঠছেন। ওকারা শহরের সিসিটিভি ফুটেজের ফ্রেম থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবার পর কি ঘটেছিল – সেটাই বলছিলেন তিনি। “তারা আমাকে হাতকড়া পরিয়ে দিল, চোখ বেঁধে ফেললো।”
তার পর তাকে নিয়ে যাওয়া হলো অজ্ঞাত একটি জায়গায়। “তারা আমাকে টেনে হিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামালো, এবং একটা ঘরে নিয়ে গিয়ে আমাকে ফেলে দিল। তার পর শুরু হলো নির্যাতন।” “ওরা আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করেনি। তারা আমার কাপড়চোপড় খুলে উলঙ্গ করে ফেললো, এবং চামড়ার বেল্ট আর লাঠি দিয়ে আমাকে মারতে লাগলো। অব্যাহতভাবে আমার পিঠে এবং পায়ের পাতায় পেটানো হলো।”
একটা জানালাবিহীন ছোট ঘরের মধ্যে এই প্রহার চললো পাঁচ-ছয় দিন ধরে। আহমদের মনে হয়েছিল তিনি মারা যাবেন। “ওরা আমাকে বলেছিল, তোমার মৃতদেহ আমরা নদীতে ফেলে দেবো।” আহমদ মুক্তির পাবার পর তার সারা গায়ের নির্যাতনের অসংখ্য ক্ষতচিহ্নের ভিডিও করে রেখেছেন।
শফিক আহমদের অপহৃত হবার পর থেকে এই অভিযান ক্রমান্বয়ে আরো ব্যাপক হয়েছে। গত সপ্তাহে একজন সাংবাদিককে বন্দুকের মুখে বেঁধে পেটানো হয়। নির্যাতনকারীরা নিজেদেরকে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের লোক বলে পরিচয় দেয়।
এপ্রিল মাসে একজন ভাষ্যকার পার্কে হাঁটার সময় তাকে গুলি করে আহত করা হয়। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স নামে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান সংবাদপত্রের স্বাধীনতার যে আন্তর্জাতিক সূচক প্রকাশ করে- তাতে পাকিস্তানের অবস্থান ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৪৫তম।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা সাংবাদিক ও অধিকারকর্মীদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করেছেন এমন অভিযোগের ব্যাপারে বিবিসি মন্তব্য জানতে চাইলে সরকার বা সেনাবাহিনী- করো দিক থেকেই কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। আইএসআই অবশ্য গত সপ্তাহের আক্রমণের ঘটনার সাথে তাদের কোনরকম সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করেছে।
আহমদ বলছেন, আটককারীরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় প্রশ্ন করেছিল যে ফেসবুক ও টুইটারে তিনি যেসব পোস্ট দেন তার পেছনে আসলে কারা আছে? “আমি তাদের বলেছিলাম, আমাকে এগুলো লিখতে অন্য কেউ বলে দেয়নি। দেশে বেসামরিক শাসনের গুরুত্ব সম্পর্কে আমার নিজের স্বাধীন বিশ্বাস আছে। কিন্তু তারা আমার এসব কথা শুনতে প্রস্তুত ছিল না।”
তিনি বলেন, তাকে আরো জিজ্ঞেস করা হয়েছিল কে তাকে টাকাপয়সা দিচ্ছে, এবং পাশতুন প্রটেকশন মুভমেন্ট ও অন্যান্য উদারনৈতিক এ্যাকটিভিস্টদের সাথে তার কী ধরনের যোগাযোগ আছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগ এনে বড় বড় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে এই পাশতুন প্রটেকশন মুভমেন্ট। আহমদের মনে হয়েছে যে তাকে জিজ্ঞাসাবাদকারীদের হাতে তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলোর প্রিন্ট করা কপি ছিল।
আমার চোখ বাঁধা থাকলেও আমি কাগজের শব্দ, পাতা উল্টানোর শব্দ পাচ্ছিলাম। তারা বলছিল, আপনি সামরিক মুখপাত্র সম্পর্কে এখানে কী লিখেছেন? আপনি সেনাবাহিনী প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এই এই কথা লিখেছেন। আপনি কেন তাদের সমালোচনা করছেন?
আহমদ এর আগেও ২০১৯ সালের এপ্রিলে একইভাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে “পাকিস্তানের বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে অবমাননাকর পোস্ট আপলোড করার” আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়। তবে আদালতে তার বিরুদ্ধে আনা মামলাটির কার্যক্রম আটকে যায়।
এর পর জুন মাসে তাকে অপহরণ করে মারধর করা হয়। সতর্ক করে দেয়া হয় তিনি যেন সামাজিক মাধ্যমে তার কর্মকাণ্ড বন্ধ করেন। এর পর ভোরবেলা তাকে তার বাড়ি থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে একটা রাস্তায় ছেড়ে দেয়া হয়।
তাকে ছেড়ে দেবার আগে অহরণকারীরা একটি ভিডিও করে। এতে শফিক আহমদকে উলঙ্গ অবস্থায় দেখানো হয়। তাকে বলতে বাধ্য করা হয়, “আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় আর কখনো কাউকে নিয়ে সমালোচনা করবো না।”
তাকে হুমকি দেয়া হয়, এ ভিডিও ভাইরাল করে দেয়া হবে, এবং যদি তিনি তার কর্মকাণ্ড আবার শুরু করেন তাহলে তাকে হত্যা করা হবে। তিনি ঠিক তাই করেছিলেন। এর পর ডিসেম্বর মাসে তাকে আবার আটক করা হয়। তাকে আটক রাখা হয় দু’মাস।
আরো অনেককেই এভাবে তাদের অনলাইনের কর্মকাণ্ডের জন্য আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলো কী সম্প্রচার করবে তার ওপর অনানুষ্ঠানিক সেন্সরশিপ আছে।
পাকিস্তানে বেশিরভাগ টিভি চ্যানেলেই যেসব ‘সরাসরি’ বা ‘লাইভ’ রাজনৈতিক টক শো হয় সেগুলো আসলে সম্প্রচার হয় একটু দেরিতে। যাতে প্রযোজকরা কোন আলোচক খুব বেশি সমালোচনা করলে তার কথা মিউট বা নিঃশব্দ করে দিতে পারেন।
গত বছর একজন ভাষ্যকার দেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার অভাবের সমালোচনা করলে তাকেও এভাবে মিউট করে দেয়া হয়েছিল। এসব বিধিনিষেধ এড়ানোর জন্য সাংবাদিক আসাদ আলি তুর ইউটিউবে ভিডিও পোস্ট করা শুরু করেন।
এরপর তুরকে একটি আইন নোটিশ পাঠানো হয়। তাতে বলা হয় যে তিনি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করেছেন।
নভেম্বর মাসে আদালত এই মামলা খারিজ করে দেয়। কিন্তু গত মঙ্গলবার ইসলামাবাদে মি. তুরের ফ্ল্যাটে একদল লোক জোর করে ঢুকে পড়ে। তুর বলেন, তাকে বেঁধে ফেলা হয় এবং একজন লোক তার পিস্তল দিয়ে তার কনুইয়ে জোরে জোরে আঘাত করতে থাকে।
বিবিসি তার বাড়িতে গেলে তার বেডরুমের মেঝেতে সেই রক্তের দাগ দেখতে পায়। তুর বলেন, তাকে আইএসআই জিন্দাবাদ, পাকিস্তান সেনাবাহিনী জিন্দাবাদ বলে শ্লোগান দিতে বাধ্য করা হয়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তুর তার এ্যাপার্টমেন্ট থেকে কোন মতে বের হয়ে এসে রাস্তায় পড়ে যাচ্ছেন। পুলিশ এখন মামলাটির তদন্ত করছে। আইএসআই এতে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে এসব অভিযোগ ‘ষড়যন্ত্রমূলক।’
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরীর সাথে বিবিসি যোগাযোগ করে সাংবাদিক ও অধিকারকর্মীদের ওপর আক্রমণের বিষয়ে প্রশ্ন করে।
মন্ত্রী বলেন, তিনি একটি শর্তে সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হবেন যদি বিবিসি কোভিড মোকাবিলায় পাকিস্তানের মহান সাফল্য নিয়ে একটি অনুষ্ঠান প্রচার করে। তিনি মিডিয়াতে এসব ইস্যু যেভাবে আসছে তাকে এজেণ্ডা-প্রণোদিত বলে উল্লেখ করেন।
পাকিস্তানে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বরাবরই ছিল একটি সমস্যা। কিন্তু ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হবার পর দৃশ্যত পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে।
ইমরান খান পাকিস্তানে সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণকে ‘রসিকতা’ বলে বর্ণনা করে বলেন, তিনি মিডিয়ার দিক থেকে যে সমালোচনার সম্মুখীন হন তা ‘নজিরবিহীন।’
সরকারের কিছু ব্যক্তি কোন কোন ঘটনার নিন্দা করেছেন। তবে এই কর্মকর্তারাই অপহরণ ও আক্রমণের মত ঘটনাগুলোকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা করেন, এবং আভাস দেবার চেষ্টা করেন যে এগুলোর জন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দায়ী নয়।
বিবিসির হার্ডটক অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী দাবি করেছিলেন, এমন ইতিহাস আছে যে কিছু লোক বিদেশে আশ্রয় পাবার জন্য গোয়েন্দা সংস্থার নাম ব্যবহার করে।
সিসিটিভির ফুটেজ থাকার পরও অনেক ঘটনার ক্ষেত্রেই কোন ব্যক্তিকে শনাক্ত করা যায়নি।
একজন নামকরা রাজনৈতিক ভাষ্যকার আবসার আলম সম্প্রতি একজন অজ্ঞাত বন্দুকধারীর ছোঁড়া গুলির হাত থেকে বেঁচে যান। গত বছর আরেকজন বিশিষ্ট সাংবাদিক মতিউল্লহ জানকে কয়েকঘন্টার জন্য অপহরণ করে নিয়ে যায় একদল লোক।
পাকিস্তানে অনেকেই ঠাট্টা করে বলেন, এদেশে ‘সবাই জানে’ এই ‘অজানা লোকেরা’ কারা। নামী টিভি উপস্থাপক হামিদ মীরকে লক্ষ্য করে ২০১৪ সালে দু’বার গুলি ছোঁড়া হয়েছিল। মীর বিবিসিকে বলেন, “আমরা খুব দ্রুত আমাদের স্বাধীনতা হারাচ্ছি।”
গত সপ্তাহে এক প্রতিবাদসভায় এক কড়া বক্তৃতায় হামিদ মীর সামরিক বাহিনীর সমালোচনা করেন, এবং সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ থামানোর আহ্বান জানান। এর পর থেকে তাকে আর অনুষ্ঠান করতে দেয়া হচ্ছে না।
‘লাল রেখা’ অতিক্রম করা যাবে না
পাকিস্তানি টিভিতে বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদরা নিয়মিতই উপস্থিত হন। কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মিডিয়া বিশ্লেষক বিবিসিকে বলেন, তার বিশ্বাস – দেশে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ আছে এমন একটা চিত্র তুলে ধরার জন্যই এদেরকে টিভিতে আসতে দেয়া হয় – কিন্তু তাদের জন্য একটা স্পষ্ট “লাল রেখা” আছে যা অতিক্রম করা যাবেনা।
এই ‘লাল রেখা’র মধ্যে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে স্পর্শকাতর হচ্ছে সেনাবাহিনীর সমালোচনা। পাকিস্তানের অস্তিত্বের প্রায় অর্ধেক সময়ই সরাসরি দেশ শাসন করেছে এই সামরিক বাহিনী। তা ছাড়া ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয় যে তারা এখনো রাজনীতিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
পাকিস্তানের পুরস্কারপ্রাপ্ত নারী অধিকারকর্মী গুলালাল ইসমাইল ‘পাশতুন প্রটেকশন মুভমেন্ট’ বা পিটিএম-এ যোগ দেবার পর তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্যের অভিযোগ আনা হয়। মানবাধিকারের ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর রেকর্ডের কড়া সমালোচক এই পিটিএম।
তিনি অভিযোগ করেন, তার ঘনিষ্ঠ লোকজনকে নির্যাতন করেছে গোয়েন্দা এজেন্টরা- যাতে তাকে খুঁজে বের করে গ্রেফতার করা যায়। প্রাণের ভয়ে ২০১৯ সালে পাকিস্তান ছেড়ে পালিয়ে যান মিজ গুলালাল, এবং তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় প্রার্থনা করেন।
কিন্তু তার বয়স্ক আত্মীয়স্বজনরা এখনো পাকিস্তানেই আছেন। তারা তাদের উদার প্রগতিশীল মতামতের জন্য সুপরিচিত। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর সন্ত্রাসী আক্রমণে সমর্থন দেবার অভিযোগ ।
মিজ ইসমাইল এই মামলাকে অভিহিত করেন ‘সবাইকে শাস্তি দেবার’ একটা দৃষ্টান্ত হিসেবে – যাতে এটা দেখানো যায় যে বাবা-মা যদি সন্তানকে ক্ষমতাসীনদের সামনে সত্য বলার মত করে তৈরি করেন তাহলে সন্তানের জন্য অভিভাবককেও দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
সরকারের সমালোচকদের ওপর চাপ বাড়ার পাশাপাশি এখন দেখা যাচ্ছে- পাকিস্তানের কর্মকর্তারা ভারত ও আফগানিস্তানের মত প্রতিবেশীদের সাথে সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা করছেন। এর মধ্যে আছে আলোচনার মাধ্যমে আপোষে পৌঁছানোর জন্য আফগান তালেবানকে বোঝানো, এবং ভারত-বিরোধী জঙ্গী নেতাদের কারাবন্দী করা।
মিজ গুলালালের মত আরো কিছু পর্যবেক্ষক উদ্বিগ্ন যে, এর ফলে পশ্চিমা দেশগুলো পাকিস্তানের ভেতরের এই মানবাধিকার লংঘনের ঘটনাগুলো দেখেও দেখতে চাইবে না।
আইনজীবী ও সোশাল মিডিয়া এ্যাকটিভিস্ট শফিক আহমদ বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তার পেছনে এমনভাবে লেগেছে যে তার মক্কেলরা এখন তার কাছে মামলা নিয়ে আসেন না। প্রতিবেশীরা তার সাথে সম্পর্ক রাখতে ভয় পান।
কিন্তু আহমদ বলেন তিনি মুখ বন্ধ করবেন না। “আমি কতদিন চুপ করে বসে থাকতে পারবো?” প্রশ্ন করেন তিনি। -বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন