শনিবার সংবাদমাধ্যম সিএনএন -এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার রাতে রাজ্য সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এ অগ্নিকাণ্ডকে হাওয়াইয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে ঘোষণা করেছে। এর আগে ১৯৬০ সালে হিলোতে সুনামিতে সর্বোচ্চ ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
রাজ্য সরকার এক বিবৃতিতে যোগ করেছে, ‘লাহাইনার আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি।’
এ রাজ্যের গভর্নর জোস গ্রিন দিনটিকে ‘হৃদয়বিদারক দিন’ হিসেবে উল্লেখ করে জানিয়েছেন যে- রাজ্যের ঐতিহাসিক নগরী লাহাইনার অন্তত ১৭০০ ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং শহরটির ৮০ শতাংশ এলাকা আগুনে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
গত মঙ্গলবার এই দাবানলের সূত্রপাত হয়েছিল এবং পরে হারিকেন ডোরার প্রভাবে তৈরি হওয়া প্রচণ্ড বাতাসের কারণে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর কর্তৃপক্ষ প্রায় ১৪ হাজার পর্যটককে সেখান থেকে সরিয়ে নেয়। তবে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট না থাকায় এখনো অনেক মানুষের সন্ধান পায়নি কর্তৃপক্ষ।
শহর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে মাউই-এর প্রায় ১১ হাজার মানুষ এই দুর্যোগের মধ্যে বিদ্যুাৎহীন অবস্থায় আছে।
মাউই কাউন্টির মেয়র রিচার্ড বাইসেন ঘরবাড়ি ছেড়ে যারা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে তাদের সতর্ক করে এখনই বাড়ি না ফিরতে বলেছেন।
অন্যদিকে গভর্নর জোস গ্রিন বলেছেন, ইতোমধ্যেই বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়া হাজার হাজার মানুষের জন্য ঘরবাড়ি তৈরি করতে হবে।
প্রাথমিকভাবে হোটেলগুলোতে দুই হাজার কক্ষ চাওয়া হয়েছে তাদের জন্য।
এছাড়া যেসব এলাকায় লোকজন এখনো বসবাস করতে পারছে সেখানকার মানুষদের তাদের বাড়ির অতিরিক্ত কক্ষে আশ্রয়হীনদের আশ্রয় দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন তিনি।
অন্যদিকে স্থানীয় কোস্ট গার্ড বলেছে তারা উপকূলীয় শহর লাহাইনা থেকে ১৭ জনকে উদ্ধার করেছে। তীব্র গরম থেকে বাঁচতে সেখানে অনেকে সাগরের পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
স্থানীয় পুলিশ বলছে, ঠিক কতো মানুষ এখনো নিখোঁজ আছেন তা এখনো তাদের জানা নেই। তবে সংখ্যাটি এক হাজারের কম হবে না।
পুলিশ প্রধান জন পেটেলিয়ের অবশ্য বলেছেন যে- এর মানে এই নয় যে এসব মানুষ মারা গেছে।
পুরো দ্বীপে এখন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট নেই, সে কারণে লোকজনকে খুঁজে পাওয়াটা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে মাউই- এর বনবিভাগ জানিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে বনাঞ্চলের একাধিক জায়গায় দাবানলে শত শত একর বনভূমি পুড়ে গেছে।
অনেক জায়গায় ছোট ছোট আকারে আগুন জ্বলছে। ‘পরিস্থিতি এখনো বিপজ্জনক,’ মন্তব্য করে লোকজনকে ‘আগুন জোন’ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে মাউই বনবিভাগের প্রধান ব্রাড ভেনচুরা। সূত্র : সিএনএন