গত মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন রাজ্য ও শহরে একযোগে অভিযান চালায় পুলিশ। এতে অংশ নেন প্রায় ৪০০ কর্মকর্তা।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর পুলিশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা সবাই বিদেশি। তাদের বয়স ৩১ বছর থেকে ৪৪ বছরের মধ্যে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে চীন, তুরস্ক, সাইপ্রাস, কম্বোডিয়া ও নি-ভানুয়াতুর নাগরিক রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি, অর্থপাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগ ছিল।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৯ পুরুষের সঙ্গে এক নারী রয়েছে। এ ঘটনায় আটজন পলাতক।
গ্রেফতার ও পলাতকদের বিরুদ্ধে অবৈধ কার্যকলাপের তথ্য পেয়েছে সিঙ্গাপুর পুলিশ। তারা সিঙ্গাপুরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তহবিলের উৎস প্রমাণ করতে জাল নথি ব্যবহার করতেন। ট্যাংলিন, বুকিত টিমাহ, অর্চার্ড রোড, সেন্টোসা এবং রিভার ভ্যালিতে অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
সিঙ্গাপুরের পুলিশ জানিয়েছে, অভিযানে ৯৪টি জমি এবং ৫০টি গাড়ির নামে নিষেধাজ্ঞা আদেশ জারি করা হয়েছে। এর অর্থ হলো, মালিকেরা এসব জমি ও গাড়ি বিক্রি করতে পারবেন না। এসব জমি ও গাড়ির মোট মূল্য ৮১ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বেশি। এ ছাড়া বিপুল পরিমাণ মদের বোতল জব্দ করা হয়েছে।
অভিযানে ৩৫টির বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। এসব অ্যাকাউন্টে ১১ কোটি ডলারের বেশি অর্থ জমা রয়েছে। এ ছাড়া জব্দের তালিকায় রয়েছে অনলাইনে সম্পদ থাকার ১১টি নথি, ২টি সোনার বার, ২৫০টির বেশি দামি ব্যাগ ও ঘড়ি, ১২০টির বেশি মুঠোফোন ও কম্পিউটার, ২৭০টির বেশি দামি অলংকার।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযানে জব্দ করা অর্থের পরিমাণ ২ কোটি ৩০ লাখ ডলারের বেশি।
সিঙ্গাপুরের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও একটি বিবৃতিতে বলেছে, যেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এফআই) সঙ্গে গ্রেফতার ও পলাতকরা যোগাযোগ করেছে, যেখানে সম্ভাব্য জালিয়াতির অর্থ চিহ্নিত করা হয়েছে। নাম উল্লেখ না করে প্রতিষ্ঠানগুলোয় নজরদারির কাজ চলছে বলেও জানায় সিঙ্গাপুরের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
দেশটির পুলিশ বলছে, গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলোতে দোষী প্রমাণিত হলে ১০ বছর পর্যন্ত জেল বা ৫ লাখ মার্কিন ডলার জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
সিঙ্গাপুরের মনিটারি অথরিটির (এমএএস) উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (আর্থিক তত্ত্বাবধান) হো হের্ন শিন বলেন, বিশ্বের অন্যতম একটি আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত সিঙ্গাপুর। তাই দেশটি আন্তর্জাতিক অর্থ পাচারের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এই অভিযান ও মামলা প্রমাণ করে যে অবৈধ লেনদেনের বিষয়ে সিঙ্গাপুরের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সতর্ক রয়েছে। একই সঙ্গে আইনপ্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে সহায়তা করছে।সূত্র : দ্য স্ট্রেইটস টাইমস