বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: এই আবাহনী ক্লাবে কেটেছে কাজী শাহেদ আহমেদের জীবনের অনেক সময়। সেই আবাহনীতেই আজ এসেছিলেন নিথর দেহে। কাজী শাহেদকে ক্লাব প্রাঙ্গনে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন ক্রীড়াঙ্গনের সর্বস্তরের ব্যক্তিবর্গ।
আবাহনী ক্লাবের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান ক্লাবের ডিরেক্টর ইন চার্জ কাজী শাহেদকে মুল্যায়ন করলেন এভাবে, ‘শাহেদ ভাই ছিলেন আবাহনী ক্লাব অন্তপ্রাণ এক ব্যক্তি। আবাহনীর জন্য দরকার হলে তিনি প্রাণও দিতেন এতটা ক্লাবকে ভালোবাসতেন।’
কাজী শাহেদের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের পরিচয় বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজার। তিনি আবাহনীর দুঃসময়ে কাজী শাহেদের অবদানকে বিশেষভাবে স্মরণ করলেন, ‘৭৫ পরবর্তী সময়ে আবাহনীর খুব সংকট ছিল। সেই সময় শাহেদ ভাই শক্ত হাতে ক্লাবের হাল ধরেছেন। শাহেদ ভাইয়ের চলে যাওয়া আবাহনী তো বটেই ক্রীড়াঙ্গনে অপুরণীয় ক্ষতি।’
কাজী শাহেদকে ক্লাব প্রাঙ্গনে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন ক্রীড়াঙ্গনের সর্বস্তরের ব্যক্তিবর্গ। বাংলাদেশের ফুটবলে কিংবদন্তি কাজী সালাউদ্দিনও এসেছিলেন কাজী শাহেদকে শেষ বারের মতো দেখতে। সালাউদ্দিনও শাহেদের বিদায়ে বেদনাক্রান্ত, ‘শাহেদ ভাইয়ের সাথে আমাদের অসংখ্য স্মৃতি। জীবনের সোনালি সময় কেটেছে আবাহনী ক্লাবে। সেই সময়গুলোর সঙ্গী ছিলেন শাহেদ ভাই। অনেক প্রতিকূল সময়েও আবাহনীর ফুটবলারদের সুযোগ সুবিধা প্রদানে সব সময় সচেষ্ট থাকতেন।’
দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুলের সংগঠক হিসেবে পরিচয় ক্রিকেট হলেও বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ফুটবলারদের একজন। ১৯৭৬ সালে আবাহনীর হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা টুটুল কাজী শাহেদকে স্মরণ করলেন এভাবে, ‘ শাহেদ ভাই আবাহনী ক্লাবের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সব কিছুতে তাঁর ছিল প্রাণবন্ত অংশগ্রহণ। খেলোয়াড়দের বিশেষ করে ফুটবলারদের খুবই ভালোবাসতেন। ‘
কাজী শাহেদের তিন ছেলের তিন জনই আবাহনীর পরিচালক। বড় ছেলে কাজী নাবিল ও ছোট ছেলে কাজী ইনাম ফুটবল ফেডারেশন এবং ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত। বাবার প্রয়াণে নাবিল নিজের আবাহনীর সঙ্গে সম্পৃক্ততার স্মৃতি আওড়ালেন এভাবে, ‘৭৭ সালে আমরা তিন ভাই এক সঙ্গে আবাহনীর খেলা দেখতে মাঠে গিয়েছিলাম। এখনও মনে আছে রহমতগঞ্জ বিপক্ষে ছিল ম্যাচটি। এরপর থেকেই আমরা আবাহনী ও ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে যুক্ত।’
কাজী শাহেদ শুধু ক্রীড়া সংগঠকই নন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। এত পরিচয় ও ব্যস্ততার মধ্যেও আবাহনী ছিল তার মনের কোঠায়, ‘বাবার অনেক ব্যস্ততা ছিল এর মধ্যেও আবাহনী ছিল তাঁর প্রাণের টান,ভালো লাগার জায়গা’-বলেন কনিষ্ঠপুত্র কাজী ইনাম আহমেদ।
গতকাল সন্ধ্যায় পৃথিবী থেকে বিদায় নেন কাজী শাহেদ আহমেদ। আজ বাদ জোহর ধানমন্ডিতে একটি জানাজা হয়। এরপর তার প্রিয় ক্লাব আবাহনীতে আনা হয় ঘন্টা দেড়েকের জন্য। দুপুরের আকস্মিক বৃষ্টির মধ্যেও আবাহনীর সাবেক ক্রীড়াবিদ, সংগঠকরা ছুটে গেছেন। বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন, ফুটবল ফেডারেশন, ক্রিকেট বোর্ড, বাস্কেটবল ফেডারেশন, আবাহনী ক্লাব, সোনালী অতীত ক্লাব সহ অসংখ্য ক্রীড়া সংস্থা এবং ব্যক্তিত্ব শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেছেন। সেই দেহের ওপর রাখা আবাহনীর পতাকা।