বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: মারা গেছেন টেলিভিশন নাটকের অভিনেত্রী নিশাত আরা আলভিদা। বৃহস্পতিবার মারা গেছেন এই অভিনেত্রী। এমনটাই বলছে সহকর্মী ও শিল্পীদের সংগঠন।
বৃহস্পতিবার একাধিক নির্মাতা, শিল্পীদের ফেসবুকে নিশাতের মৃত্যুর খবরে ছেয়ে যায়।
সবখানেই, বলা হয় নিশাত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। কিন্তু নিশাত ডেঙ্গু আক্রান্তর খবর নিজের ফেসবুকে দিয়েছিলেন ৩০ জুলাই। তাহলে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত কি ডেঙ্গুই আক্রান্ত ছিলেন? জানা গেছে, নিশাত এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত অনিয়মিত হয়ে পরীক্ষা ঠিকঠাক দেননি বলে জানা যায়।
শুক্রবার দুপুরে নিশাত আরা আলভিদার সহকর্মী অভিনয়শিল্পী রিমু রোজা খন্দকার বললেন, ‘কয়েকদিন আগে ওর পোস্ট দেখি যে হাসপাতালে। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করি, কি হইছে, কোন হাসপাতালে? সে কিছুই বললো না।’
রিমু রোজা খন্দকার বলেন,‘নিশাতের সঙ্গে আমার আগস্টের ১৫ তারিখে সর্বশেষ কথা হয়। সে সময় সে জানায় ডেঙ্গু থেকে সেরে উঠেছে কিন্তু শরীর দুর্বল।
ওকে কয়েকবার গাড়িতে লিফটও দিয়েছিলাম। গতকাল নির্মাতা শিশির ভাইয়ের পোস্ট দেখে অবাক হই যে নিশাত মারা গেছে।’
এদিকে নিশাত মাত্র চার দিন আগে তার ফেসবুকে ছবি আপডেট করে লেখেন ‘পরের জন্মে শালিক হব’। দুইদিন আগে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছেন এমন একটি ছবি দেন। সঙ্গে দেন হৃদয় ভাঙার ছবি।
মৃত্যুর ২১ ঘণ্টা আগে তাঁর ফেসবুক স্টোরিতে লেখেন ‘শেষ’ সঙ্গে ফের হৃদয় ভাঙার ইমোজি। আর লেখেন ‘সে ভালো থাকুক।’ প্রশ্ন উঠেছে, কাকে উদ্দেশ করে এই স্টোরি ছিল। নেটিজেনদের একাংশ মনে করছেন নিশাত আরা আলভিদা গত ৫ দিন ধরে মৃত্যুর পথে হাঁটছিলেন, যেখানে হৃদয়ঘটিত বিষয়ও থাকতে পারে।
নিশাতের মৃত্যুর খবর সর্বপ্রথম ফেসবুকে পোস্ট করেন জুলফিকার ইসলাম শিশির। তার মায়ের বরাত দিয়ে শিশির জানান নিশাত ডেঙ্গুতে মারা গেছে। শুক্রবার দুপুরে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি ওর যখন মৃত্যুর খবর পাই, তখন অবাক হয়ে যায়। বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করি। দেখি ওর ফেসবুক অনলাইন করা। আমি মেসেঞ্জারে ফোন দিলে ওর মা ধরে। তিনি কান্নাকাটি করে জানান নিশাত মারা গেছেন। তার মাধ্যমেই জানতে পারি নিশাত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন। এরপরে আমি ফেসবুকে পোস্ট দেই যেন মিডিয়ার সকলে জানে।’
অভিনয় শিল্প সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম বলেন, ‘আমি নিশাতের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। ওর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। শুনেছি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন নিশাত।’
নিশাত আরা আলভিদার মা সাথী আক্তারের নম্বরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিশাতের বন্ধু ও পরিবারের পরিচিত একজন বলেন, ‘ওর মা ঢাকা থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে ফোন দিয়ে জানায়। তারা মূলত মৃত্যুর কারণ সেভাবে প্রকাশ্যে আনতে চায়নি। আমিও বুঝলাম না। হয়তো ডেঙ্গু নয়, হয়তো এমন কোনো কারণ থাকতে পারে যেটা নিয়ে কথা বলতে চান না তারা।’
গণমাধ্যমে হাসপাতালে ভর্তির খবর প্রকাশ হলেও জানা যায়নি হাসপাতালের নাম। তবে একজন এমবিবিএস চিকিৎসক বলেন, ‘ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার পরে ডেঙ্গুতে মারা যাওয়াটা স্বাভাবিক নয়। তিনি কোনো কোনোভাবেও মারা যেতে পারেন। এক্ষেত্রে হিস্ট্রি ও মেডিক্যাল প্রতিবেদন ছাড়া কিছুই বলা যাবে না। সাধারণত ডেঙ্গু নেগেটিভ হতে ৭-৮ দিন লাগে। ডেঙ্গু পরবর্তী একটা প্রভাব থাকতেই পারে।’
নিশাত আলভিদার মরদেহ নাটোরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তঁকে দাফন করা হয়েছে বলে পরিবারের বরাত দিয়ে নির্মাতা শিশির জানিয়েছেন।