বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের অন্যতম জনপ্রিয় কৃষি মার্কেট। কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে সব ধরনের নিত্য পণ্য মিলতো এখানে। ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নানা ধরনের ক্রেতায় মুখরিত থাকতো কৃষি মার্কেট। সেই মার্কেট এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে কৃষি মার্কেটের অধিকাংশ ব্যবসায়ীরাই নিশ্চুপ বসে থাকতে দেখা যার যার দোকানের সামনে।
কেউ কেউ আবার ভেতরের পোড়া স্তূপ সরিয়ে নিচ্ছিলেন। আচমকা বেঁচে থাকার অবলম্বন হারিয়ে হতাশ ব্যবসায়ীরা।
তবে ব্যবসায়ীরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে চান, সহায়তা চেয়েছেন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। যত দ্রুত সম্ভব পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
কোটি টাকার সম্পদের পাশাপাশি দুটি কসমেটিকসের দোকান পুড়ে গেছে দুই ভাই লিটন ও জসিম উদ্দিনের। আগুন লাগার পরে দৌড়ে এসেও কিছুই উদ্ধার করতে পারেননি। সব শেষ হয়ে গেলেও পোড়া দোকান ছেড়ে যাননি তারা কেউই।
জসিম বলেন, একটা কিচ্ছু বের করতে পারি নাই, একটা সুতাও না। এখন কি করবো, কোথায় কার কাছে যাবো! কবে দোকান ঠিক হবে, আর ঠিক হলেই আবার দোকান সাজাতে মালামাল তোলার টাকা কই পাবো। জানি না সামনের দিনগুলোতে কী হবে।
মায়ের দোয়া বস্ত্র বিতানের মালিক আলমগীর পুড়ে ছাই হওয়া দোকানের সামনে বসে আছেন। তিনি বলেন, নিঃস্ব হয়ে গেছি, সামনে কী করবো জানি না। ক্ষতিপূরণ আদৌ কবে দেবে আবার কবে দোকান সাজাতে পারবো এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। আর ক্ষতিপূরণ কি ক্ষতির সমান হয়!
এদিকে, শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) কৃষি মার্কেটের সামনে জেলা প্রশাসনের পক্ষে একটি বুথ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করতে দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরাও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে তালিকায় নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্তি করছেন।
ঢাকার জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের একটি তালিকা করবো। তারপর আমরা সরকারের পক্ষ থেকে তাদের মানবিক সহায়তা করার চেষ্টা করবো।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ভোর ৩টা ৪৩ মিনিটে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। খবর পেয়ে প্রথমে সাতটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ভোর ৩ টা ৫২ মিনিটে। পরে ধাপে ধাপে ইউনিট বেড়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট।
প্রায় ৬ ঘণ্টা পর সকাল ৯ টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস। তবে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।