বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : শেরপুর-১ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিকের সঙ্গে এক স্কুল শিক্ষিকার ‘ঘনিষ্ঠ আলাপের’ অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে জেলাজুড়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে হুইপের পক্ষ থেকে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। হুইপের দাবি- সুপার এডিট করে প্রতিপক্ষের লোকজন এটি ছড়িয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্কুল শিক্ষিকার সঙ্গে জাতীয় সংসদের হুইপ ও শেরপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আতিউর রহমানের ‘ঘনিষ্ট আলাপের’ অডিও ভাইরাল হয় গত সোমবার (২০ নভেম্বর) রাতে। সাত মিনিট ৩০ সেকেন্ডের অডিওতে নারীর সঙ্গে একান্তে সময় কাটানোর নানা মুহূর্তের কথা শোনা যায়। শেরপুর সদর আসন থেকে পাঁচ বারের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান। টানা দুই সংসদে হুইপের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, যে নারীর সঙ্গে হুইপ আতিউর রহমানের অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে তিনি শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত ওই শিক্ষকের সঙ্গে হুইপের সম্পর্ক অনেক দিনের। অডিও রেকর্ডের আলাপে এমনটাই বুঝা যায়।
জানা যায়, গত কয়েক মাস ধরেই হুইপ বিরোধী নানা কর্মসূচি চলছে সংসদীয় আসনটিতে। জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে হুইপের বিরোধ তৈরি হয় জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা নিয়ে। ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর তিন সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয় শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের। এতে সভাপতি হন হুইপ আতিউর রহমান, সহ সভাপতি হন চন্দন কুমার পাল ও সাধারণ সম্পাদক হন ছানুয়ার হোসেন ছানু। কিন্তু প্রায় ১১ মাসেও সেই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা যায়নি। জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্বাধীনতা বিরোধী লোকজনকে ঢুকানোকে কেন্দ্র করে সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয় হুইপের। এই বিরোধ গত কয়েক মাস ধরে তুঙ্গে ওঠে। বিভিন্ন সভায় হুইপের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের একটি অংশ তীব্র বিরোধিতামূলক বক্তব্য এবং হুইপও পাল্টা কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন। এ নিয়ে স্থানীয় রাজনীতি বেশ কিছু দিন ধরেই উত্তপ্ত। এসবের মধ্যে হুইপের অডিও ভাইরাল হওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন আলোচনা।
অডিও ভাইরাল হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে হুইপের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার শেরপুর সদর থানায় জিডি করা হয়। শেরপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বশির আহমদ বাদল বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে হুইপের পক্ষ থেকে। অডিওটি এডিট করা বলে দাবি করা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। কাউকে আটক করা হয়নি।
সুপার এডিটের মাধ্যমে অডিও ক্লিপ ছড়ানো হয়েছে দাবি করে হুইপ আতিউর রহমান আতিক বলেন, আমার উন্নয়ন ও জনপ্রয়িতায় ঈর্ষান্বতি হয়ে দলের একটি অংশ বেশ কিছু দিন ধরেই প্রকাশ্যে ষড়যন্ত্র করে আসছে। তারা সভা-সমাবেশেও নগ্ন ভাষায় গালিগালাজ করছে। তারপরও আমাকে কুপোকাত করতে না পেরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চূড়ান্ত ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। তারই অংশ হিসেবে এবার তারা সুপার এডিটের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিও ক্লিপ ছড়াচ্ছে।
তিনি বলেন, শান্ত শেরপুরের পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে সভা-সমাবেশে যারা প্রকাশ্যে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে- এ নোংরা ষড়যন্ত্র তাদেরই।
এই ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদরে বিরুদ্ধে সর্বস্তরের দলীয় নেতকর্মীদের সজাগ থাকার পাশাপাশি রুখে দাঁড়াতে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান হুইপ আতিক। সেই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই ভুয়া অডিও ক্লিপ ছড়ানোর ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর অন্যান্য দপ্তররে প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।