বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চগড়-১ আসনে নৌকার বিপক্ষে যারা ভোট করছেন ৭ তারিখ নির্বাচনের পর তাদের ঠ্যাং ভেঙে ফেলার হুমকি দিয়েছেন নুরুজ্জামান নুরু নামে আওয়ামী লীগের এক নেতা। যিনি অমরখানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে জেলার সদর উপজেলার অমরখানা ইউপির কাজীরহাট বাজারে পঞ্চগড়-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া মুক্তারের পক্ষে আয়োজিত এক নির্বাচনী সভায় এমন হুমকি দেন তিনি। সভায় নৌকার বিপক্ষে যারা কাজ করছেন তাদের চিহ্নিত করে রাখতে বলেন ইউপি চেয়ারম্যান নুরু।
বক্তব্যে নির্বাচনে অংশ নেওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট ও তার কর্মীদের প্রতি ইঙ্গিত করে নুরু বলেন, ‘যারা নৌকাকে ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে চলেছে, এখন নৌকার বিরোধিতা করছে এদেরকে চিহ্নিত করে রাখবেন। ৭ তারিখের পর এসব লোককে নৌকার আশপাশে দেখলে প্রয়োজনে তাদের ঠ্যাং ভেঙে ফেলা হবে। এদেরকে খন্দকার মোশতাক বলা হয়। কারণ নৌকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মার্কা, এই মার্কা জননেত্রী শেখ হাসিনার মার্কা। এই মার্কায় যেই সমস্ত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিরোধিতা করে তাদের খন্দকার মোশতাক বলতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
ইউনিয়ন পরিষদের এই চেয়ারম্যান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা নৌকার পতাকাতলে শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়েছে। আর এখন নৌকার বাইরে গিয়ে অন্য সুর ধরেছে। তাদের চিহ্নিত করে রাখবেন।
আওয়ামী লীগ নেতার বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তের মধ্যেই তা ভাইরাল হয়। তার বক্তব্যের সমালোচনা করেন অনেকে।
জানা গেছে, হুমকি দেওয়া আওয়ামী লীগ নেতা নুরুজ্জামান নুরু জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক। তিনি ১নং অমরখানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। পঞ্চগড়-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া মুক্তারের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি।
ইউপি চেয়ারম্যান নুরুর বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট বলেন, ‘চেয়ারম্যান প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ায় আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে। আমি আশা করি রিটার্নিং কর্মকর্তা এর যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমি রিটার্নিং কর্মকর্তার সহযোগিতা কামনা করছি। রিটার্নিং কর্মকর্তা আইনগত ব্যবস্থা নিলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যারা নির্বাচন করছি, তাদের আস্থা ও বিশ্বাস ফিরে আসবে যে নির্বাচন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হবে।’
এর আগে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর অনুসারী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম পল্লব এক নির্বাচনী সভায় এমন হুমকি দিলে তাকে শোকজ করে নির্বাচন কমিশন গঠিত অনুসন্ধান কমিটি।