নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রতারণা, বিশ্বাস ভঙ্গ এবং জালিয়াতির অভিযোগে ৯টি মামলা হয়েছে রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ওরফে আন্ডা রফিকের বিরুদ্ধে। ৯টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলেও প্রশাসনের চোখের সামনেই নারায়ণগঞ্জ ১ আসনের নৌকার প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজীর সার্বক্ষণিক সহযোগী হয়ে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ভোটারদের টাকা বিতরণ করছে রফিক ও তার বাহিনীর ক্যাডাররা। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে পুরো রূপগঞ্জে।
তথ্য সূত্র বলছে, বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির জমি তথ্য গোপন ও জালিয়াতি করে বিক্রি করার অভিযোগে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, তার ছেলে কাওসার আহমেদ অপু ও মেহেদী হাসান দীপুর বিরুদ্ধে ৬টি মামলা করা হয়েছে। এছাড়া ভূমি দখল ও হত্যার হুমকির অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে রফিকের বিরুদ্ধে।
মামলাগুলোর মধ্যে ৬টিতে জামিনে থাকলেও ৩টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়না রয়েছে রফিক ও তার পুত্রদের বিরুদ্ধে। কিন্তু গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলেও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জে ১ আসনের (রূপগঞ্জ) নৌকার মনোনীত প্রার্থী মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীরের পক্ষে প্রচারনা চালাচ্ছে রফিক ও তার সহচররা। এরই মধ্যে গত ৫ জানুয়ারি ভোটারদের টাকা দিয়ে নতুন করে আলোচনায় এসেছে রফিক। নির্বাচনী আচারণবিধি লঙ্ঘন ও ভোটারদের হুমকি ধামকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
স্থানীয় ভোটাররা বলছেন, রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রফিক ও তার লোকজন ভোটারদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টির চেষ্ঠা করছে। রফিকের সন্ত্রাসীরা রূপগঞ্জের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। অন্য কোন প্রার্থীকে ভোট দিলে পিটিয়ে বাড়ি ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে।
নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির নিকট বিক্রি করা ৫০৩.২৭৪ কাঠা বা ৮.৩৮৭৯ একর জমি প্রতারণা, বিশ্বাস ভঙ্গ এবং জালিয়াতির মাধ্যমে বিক্রির অভিযোগে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে রফিকুল ইসলাম রফিক, তার ছেলে কাওসার আহম্মেদ অপু ও মেহেদী হাসান দীপুর বিরুদ্ধে ৬টি মামলা হয়েছে। আদালতে দায়ের করা মামলাগুলো হলো- ৭৬২, ৭৬৩, ৭৭০, ৭৭১, ৭৭৩ এবং ৭৭৪। এছাড়া জমি দখল ও হত্যার হুমকির অভিযোগে ভাটারা থানায় ৩টি মামলা রয়েছে। মামলাগুলো হলো ৭৪৫, ৭৪৬ ও ৭৪৭।
এ প্রসঙ্গে কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের কামরুজ্জামান বলেন,পুরো রূপগঞ্জে জমি দখল, মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরত্ব বেড়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে কায়েতপাড়া ইউনিয়ের সাবেক চেয়ারম্যান রফিক ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা ভোটারদের টাকা দিচ্ছে। যারা তাদের কথা শুনছে না তাদের বাড়ি ঘরেও হামলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, একজন মামলার আসামী কিভাবে মন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করছে-এ প্রশ্ন রূপগঞ্জের সাধারণ মানুষের। তার বিরুদ্ধে অতিদ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
রূপগঞ্জের আরেক বাসিন্দা বলেন, পূর্বেরগাঁও গতকাল আজিজ মেম্বারের বাড়িতে হামলা করেছে রফিকের সন্ত্রাসীরা। ভোটের জন্য টাকা বন্টনের সময় স্থানীয়রা বাধা দিলে তাদের উপর আক্রমণ করে রফিকের বাহিনী।
পূর্বেরগাঁওয়ের সাবেক যুবলীগ নেতা কাওসার মিয়া বলেন, আমি কেটলী প্রতীকের সমর্থন করি এখবর পাওয়ার পর নৌকার সমর্থক যুবলীগ নেতা নাজমুল হোসেন, শাহীন মিয়া, আরমান আলী, হুমায়ুন মোল্লা ও ভোলাব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন টিটুর কর্মী যুবদল নেতা রাসেল মিয়াসহ ৮ থেকে ১০ জন আমার বাড়িতে হামলা করে। তাদের কাছে অস্ত্রও ছিল। তার প্রত্যেকই মন্ত্রী গাজী ও রফিকের লোক।
এ অভিযোগের বিষয়ে রূপগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ মাহমুদ হাসান রাসেল সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি এই বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।