বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: চীন সফরের দ্বিতীয় দিনে চীনের শহর হারবিনে পৌঁছেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই শহরটিতে বিপুল সংখ্যক রাশিয়ানের বসবাস। আজ শুক্রবার তিনি চীন-রাশিয়া বাণিজ্যমেলা সফরে যাবেন। এর মধ্য দিয়ে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়েছে। সেখানে তারা গভীর সম্পর্কের প্রশংসা করেছেন। পুতিন বলেছেন, তারা ইউক্রেন ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, তারা দু’জনেই ইউক্রেন যুদ্ধের একটি রাজনৈতিক সমাধান চান। পঞ্চমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর এটাই পুতিনের প্রথম বিদেশ সফর। দেশের নির্বাচনে তিনি বিতর্কিতভাবে কার্যত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কয়েক শত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। এমন অবস্থায় রাশিয়ার জন্য চীনকে দেখা হয় লাইফলাইন হিসেবে। প্রযুক্তি এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করে মস্কোকে এই যুদ্ধে বেইজিং সহযোগিতা করছে বলে অভিযোগ আছে। কিন্তু চীনের দাবি, এসব প্রযুক্তির কোনোটিই প্রাণঘাতী নয়। এগুলো সবই বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য।
অনলাইন বিবিসি বলছে, আজ শুক্রবার হারবিনে পৌঁছার আগে পুতিনকে ঝোংনানহাইয়ে আতিথেয়তা জানান শি জিনপিং। এটি হলো চীনা নেতাদের বসবাসের স্থান এবং কর্মক্ষেত্র। ওয়াশিংটনে অবস্থিত হোয়াইট হাউসের সঙ্গে তুলনা করা হয় এ স্থানকে। সেখানে দুই নেতা চা পান করেন। চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া বলেছে, অভিন্ন বিষয়ে কৌশলগত ইস্যুতে গভীর মতবিনিময় হয়েছে তাদের মধ্যে। আলোচনার চেয়ে প্রতীকি ঝোংনানহাইয়ে পুতিনকে আতিথেয়তা জানানো হয়েছে। এক সময় এটা ছিল চীনের সম্রাটদের প্লেগ্রাউন্ড। কিন্তু বর্তমানে ঝোংনানহাই হলো চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির হেডকোয়ার্টার্স এবং শীর্ষ নেতাদের বাসস্থান। বিশ্লেষকরা বলছেন, সেখানে শুধু ঘনিষ্ঠ মিত্রদের আতিথেয়তা জানানো হয়। এখানে ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন শি জিনপিং। এর এক বছর পরে বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপের সঙ্গে সেখানে সাক্ষাৎ করেছিলেন শি জিনপিং। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বহু বিদেশি নেতাকে সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার শি জিনপিং ও পুতিন ইয়াংজি ব্রিজের সামনে সাক্ষাৎ করেছেন। এটা নির্মাণ করা হয়েছে মিং রাজবংশের সময়ে। পূর্বেই সিনহুয়াকে দেয়া সাক্ষাৎকারে পুতিন জানিয়েছেন, তার পরিবারের সদস্যরা চীনা ভাষা শিখছেন। তারা চীনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তাই তারা চীনা ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করছেন। পুতিন জানান, তিনি চীনের মার্শাল আর্টের কিছুটা জানেন। চীনের দর্শনকে তিনি শ্রদ্ধা করেন।