নজরুল ইসলাম জাকি : বগুড়ার শেরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কারচুপি, প্রাপ্ত ভোটের ফলাফল পরিবর্তন করাসহ জাল ভোট দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে আটটায় শেরপুর শহরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন একজন চেয়ারম্যান ও চারজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন জিহাদী।
গতকাল রাত সাড়ে আটটায় শহরের একটি রেস্তোরাঁয় ওই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ পাঠ করেন শেরপুর উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এম এ হান্নান (জোড়া ফুল)। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত পরাজিত ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বিধান ঘোষ (টিয়া পাখি), মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ফাতেমা খাতুন ময়না (কলস), মর্জিনা খাতুন (ফুটবল) ও ফিরোজা খাতুন (প্রজাপতি)।
সংবাদ সম্মেলনে এম এ হান্নান বলেন, নির্বাচনে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন। কিন্তু সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার ইন্ধনে প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা পক্ষপাতিত্ব করে নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন করেছেন। বিভিন্ন কেন্দ্রে ঘোষিত ফলাফলের সঙ্গে কন্ট্রোল রুমের ঘোষণা করা ফলাফলের মিল নেই। অনেক কেন্দ্রে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার সামনেই ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করা হয়েছে। ফলাফল ঘোষণা করার আগে লিখিত অভিযোগ করা হলেও একতরফাভাবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী শিখা খাতুনের (হাঁস) পক্ষে ভোট গণনার ফলাফল পরিবর্তন করা হয়েছে।
ওই সংবাদ সম্মেলন পরাজিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ফিরোজা খাতুন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘ভোট গণনা শেষে উপজেলার “পানিসারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়” কেন্দ্রে আমার প্রজাপতি প্রতীকে ১৪৪টি ও হাঁস মার্কায় ২৫৩টি ভোট পড়েছে বলে ঘোষণা করা হয় । কিন্তু উপজেলায় এসে আমার ভোট দেখানো হয়েছে ৬৭টি আর হাঁস মার্কার ভোট ৫১৩টি। চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার আগে আমি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।’
ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ছিলেন বিধান কুমার ঘোষ। নির্বাচনে তাঁর প্রতীক ছিল টিয়া পাখি। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে তাঁকে যে নমুনা প্রতীক দেওয়া হয়েছে, ব্যালটের সঙ্গে তার মিল নেই। তাই ভোটাররা বিভ্রান্ত হয়েছেন। আমি মৌখিকভাবে এ বিষয়ে অভিযোগ করলেও তা আমলে নেওয়া হয়নি।’
সংবাদ সম্মেলনে পরাজিত এসব প্রার্থী এই নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবি করেন। পাশাপাশি এ জন্য তাঁরা আদালতে যাবেন বলেও ঘোষণা দেন।
নির্বাচনে কারচুপি, ফলাফল পরিবর্তনসহ নানা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শেরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও শেরপুরের ইউএনও সুমন জিহাদী জানান, ‘এই নির্বাচনের অনিয়ম নিয়ে কোনো প্রার্থী আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করেননি। নির্বাচনের দিন ৫ জুন রাত ৮টায় “প্রজাপতি” প্রতীকের একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আমার মাধ্যমে রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। আমি তৎক্ষণিক সেটি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছি।’