বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: চট্টগ্রামভিত্তিক আলোচিত ও বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) আকিজ উদ্দিনের ব্যাংক হিসাব স্থগিত (জব্দ) করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) আজ বুধবার ব্যাংক হিসাব স্থগিতের এ নির্দেশনা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠিয়েছে।
বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে, উল্লিখিত ব্যক্তি ও তাঁর স্ত্রী–সন্তানদের নামে পরিচালিত হিসাবসহ তাঁদের ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে সেসব হিসাবে লেনদেন মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা এবং তাঁদের নামে কোনো লকার থাকলে তার ব্যবহার ৩০ দিনের জন্য বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হলো।
লেনদেন স্থগিতের পাশাপাশি তাঁদের সংশ্লিষ্ট সব ব্যাংক হিসাবের তথ্য বা দলিল, যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী প্রভৃতি তথ্য বিএফআইইউর কাছে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে।
এর আগে আকিজ উদ্দিন–সংশ্লিষ্ট ৪ প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে ৯৯ কোটি টাকার হদিস পেয়েছে বিএফআইইউ। এসব হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে। এর ফলে এসব হিসাব থেকে টাকা তোলার সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
এস আলমের ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আকিজ উদ্দিন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। সরকার পরিবর্তনের পর তাঁকে ব্যাংকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার তাঁর পদত্যাগ ব্যাংকটির পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদে অনুমোদিত হয়।
জানা যায়, সাইফুল আলম সিঙ্গাপুরে স্থায়ী হওয়ার কারণে সাত বছর ধরে তাঁর পক্ষে গ্রুপের ব্যাংকগুলো পরিচালনা করতেন আকিজ উদ্দিন। এসব ব্যাংকে নিয়োগ, কেনাকাটা, পদোন্নতি ও ঋণ বিতরণ—সবই নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। গ্রুপটির পক্ষে নামে-বেনামে ঋণ নেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকসহ রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থাকে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রভাবিত করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। নিজেকে গ্রুপের বিকল্প চেয়ারম্যান হিসেবেও পরিচয় দিতেন। তাঁকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কক্ষ ও গভর্নরের বাসভবনেও দেখা যেত।
সাইফুল আলমের মতো আকিজ উদ্দিনও চট্টগ্রামের পটিয়ার বাসিন্দা। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে কর্মজীবন শুরু করার কিছুদিন পর ব্যাংকটির চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে কাজ পান। ২০২১ সালে তিনি ব্যাংকে এভিপি হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০২৩ সালের এপ্রিলে ইসলামী ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে যোগ দেন তিনি। ব্যাংক খাতে তাঁর মতো এত দ্রুত ডিএমডি হিসেবে পদোন্নতি এর আগে কেউ পাননি বলে জানিয়েছেন শীর্ষ দুটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।