বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে বৈঠক করতে ঢাকায় এসেছেন আলোচিত ধর্মীয় সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।
সোমবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমণ্ডির বাসায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। বৈঠকে অংশ নিতে এদিন সকালে ঢাকায় পৌঁছেছেন বাবুনগরী।
সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রেফতার নেতা-কর্মীদের মুক্তিসহ কয়েকটি ইস্যুতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে বৈঠক করবেন হেফাজত আমির। সংগঠনটির মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদিসহ আরও কয়েকজন এতে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, সোমবার সকালে চট্টগামের হাটহাজারী থেকে ঢাকায় আসেন হেফাজত আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। ঢাকায় পৌঁছে বারডেম হাসপাতালে নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ করান তিনি।
বাবুনগরীর সঙ্গে হাটহাজারী থেকে ঢাকায় এসেছেন হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আমির প্রয়াত আল্লামা আহমদ শফীর সাবেক একান্ত সহকারী মাওলানা শফিউল আলম। সোমবার দুপুরে বাবুনগরীসহ ঢাকায় আসার বিষয়টি যুগান্তরের কাছে স্বীকার করলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ বিষয়ে বাবুনগরীর ব্যক্তিগত সহকারীদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব মনির হোসেন বলেন, ‘উনারা ফোন দিয়ে সাক্ষাতের অনুমতি চেয়েছেন, মন্ত্রী মহোদয় আসতে বলছেন।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার দুপুরের পর জুনায়েদ বাবুনগরী হেফাজত মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদীর পরিচালিত খিলগাঁওয়ের মাখজানুল উলুম মাদ্রাসায় অবস্থান করছেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে নুরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, ‘বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। এখনও সময় চূড়ান্ত হয়নি। উনি কাল চলে যাবেন।’
উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ ও সহিংস ঘটনার পর সরকার হেফাজতে ইসলামের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেয়।
এর মধ্যে হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়্যাল রিসোর্টে নারীসহ জনতার হাতে ধরা পড়েন। এতে নতুন করে বিতর্কের মুখে পড়ে হেফাজত।
এরপর সংগঠনটির অন্তত কয়েক ডজন কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেফতার হয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। এর আগে একাধিকবার হেফাজত নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে গ্রেফতার বন্ধ এবং গ্রেফতার নেতাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।
সারা দেশে নজিরবিহীন তাণ্ডবের পর সরকারের কঠোর অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে কোণঠাসা হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতারা শুরু থেকেই সরকারকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা চালিয়েছেন। এ জন্য আগের কমিটি ভেঙে দিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
গোয়েন্দাদের পক্ষ থেকে যে তিন দফা শর্ত দেওয়া হয়েছিল তার প্রায় পুরোটাই দৃশ্যত মেনে নিয়ে বাস্তবায়ন করেছে জুনায়েদ বাবুনগরীপন্থীরা। অবস্থান পরিষ্কার করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দুই দফা দেখা করে তাদের নানা পদক্ষেপের কথা সরাসরি জানিয়েছেন।
এছাড়া সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে তারা নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছেন। গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গেও দফায় দফায় বৈঠক করেছেন।