জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা : ৩০ বছর পর বন্ধুদের মিলনমেলা
মাধবপুর হাই স্কুল ১৯৯৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন প্রায় ২৫০ বেশি শিক্ষার্থী। পড়ালেখা শেষ করে অনেকেই চাকরি কিংবা ব্যবসা বাণিজ্যে ব্যস্ত, আবার দূরপ্রবাসে , কেউবা সাংবাদিক বন্ধুদের মধ্যে যোগাযোগ যখন বিচ্ছিন্ন হতে শুরু করে, তখন ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ থাকতে এক ভিন্ন পথ ধরেন ওই ব্যাচেরই শিপা ,শিল্পী ,রুজি ,আফরোজা ,শেফালী সহ এই ব্যাচের অনেক শিক্ষার্থী ।
শুক্রবার (সাতাশে সেপ্টেম্বর) ৩০ বছর পর মাধবপুর ইউনিয়নের মকিমপুর পশ্চিম বিলে মিলনমেলার আয়োজন করা হয়। তারপর নৌপথে নবীনগর হয়ে ভৈরব মেঘনা নদী পর্যন্ত অবস্থান ছিল।এসময় দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হওয়া, ছবি তোলা, সেল্ফি, আড্ডা, গল্প, মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩০ বছরের ফিরে পাওয়া সেই দিনগুলির কথা মেতে উঠেন । প্রবাসী কবিরের পুরানো কথাগুলো বারবার যেন আগের শৈশবের কথা নতুন করে দিগন্ত উদয়ন।
‘বন্ধুত্বের একতা, সম্প্রীতি ও সফলতা, অপর দিকে কামরুল হাসান (তসলিম ) এই স্লোগানকে ধারণ করে সারারাত বাস জার্নি করে আশাসবার মধ্যে বন্ধুত্ব আরো গভীর করে তুলেছে । আন্তরিকতা সৃষ্টির পাশাপাশি পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য প্রায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে আবিদুর রহমান (অবিদ), প্রমথ সূত্রধর, এ কে এম নাজমুল হক ,কবির হোসেন এই গ্রুপটি। এছাড়া প্রয়োজনে সমাজ বা রাষ্ট্রের জন্য কিছু করার চেষ্টা নিয়েও বন্ধুত্বের বন্ধনটা সুদৃঢ় করতে মিলনমেলার আয়োজন করেছে ১৯৯৪ শিক্ষাবর্ষের বন্ধুরা।
মিলনমেলায় কক্সবাজার, চট্টগ্রাম,সিলেট, ঢাকা, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসে যুক্ত হয় বন্ধুদের আড্ডায়। প্রায় ১০০ বন্ধুর আগমনে সেই পুরো দিনের আড্ডায় ফিরে যান তারা। সবার আগ্রহ ও আন্তরিকতাকে বেশ ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন মোঃ এমদাদুল বারী ।
এসআই আব্দুর রউফ (রুপ মিয়া) জানান, বন্ধুরা একে অপরের থেকে যেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন না হয়ে যাই ও সবাই যেন বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে একে অপরের পাশে দাঁড়াতে পারি সেই চিন্তা থেকেই গ্রুপটি খুলেছিলাম।
সেলিম বলেন আমাদের বন্ধুদের আন্তরিকতারই বহিঃপ্রকাশ ছিল। মিলনমেলার মধ্য দিয়ে আয়োজন করার জন্য প্রতিটি বন্ধুদের মধ্যে যোগাযোগ আছে ও সবার আস্থাভাজন এমন বন্ধুদের একত্রিত করা বন্ধুত্বের একতা আর সম্প্রীতিটাকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল ।
সাংবাদিক ও ব্যবসায়িক মোশারফ হোসেন মিজান বলেন আমি এখানে কাউকেই চিনি না। শুধু এটুকুই জানি সবাই ১৯৯৪ মাধবপুর হাই স্কুলের বন্ধু। সবাই আমার কাছে নতুন মুখ, নতুন বন্ধু। মিলনমেলায় এসে খুবই ভালো লাগছে।
বঙ্গবন্ধু কলেজের শিক্ষক এ কে এম নাজমুল হক জানান এবার বন্ধুদের মিলনমেলা কোনোটাই মিস করতে চাই না। তাই এখানে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতেই চলে এসেছি।
বন্ধুত্বের টানে এসেছেন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকেও। পড়ালেখা শেষ করে এসে বন্ধুদের আড্ডায় যুক্ত হতে পেরে বেশ খুশি মিয়া মোহাম্মদ ময়েজ উদ্দিন (সুমন)
মিলনমেলা আয়োজনে কাজ করা বন্ধুরা মিলে বেশ সাড়া দিয়েছে। সবাই মিলে আড্ডা, গল্প, খাওয়া-দাওয়া, ছবি তোলা সহ সেই জীবনেই ফিরে গিয়েছিলাম। বেশ ভালো সময় কেটেছে।
ব্যক্তিস্বার্থ ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতার বর্তমান বাস্তবতায় নিজের মধ্যে বন্ধুত্ব আর ঐক্য চায় মাধবপুর হাই স্কুলের ১৯৯৪ শিক্ষার্থীরা। এতে শঙ্কটে বন্ধুদের পাশে দাঁড়ানোসহ সমাজের মানুষের জন্য কাজ করতে চায় তারা।
সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়ে প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো স্মৃতির বন্ধনকে ধরে রাখতেই ২০২৪সালে সেপ্টেম্বর একটি ফেসবুক মেসেঞ্জারে গ্রুপ খোলা হয় মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয় ১৯৯৪ শিক্ষার্থী।