আজ বুধবার সকাল নয়টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় আনে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
জানা গেছে, পারভীন আক্তারের একটি ছেলে সন্তান আছে। ছয় বছর আগে তার স্বামী মারা গেছেন। উপজেলার মামুরশাহী নতুনপাড়া গ্রামে পারভীন আক্তারের বাড়ি ছিল। তবে স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের খন্দকারটোলা দক্ষিণপাড়া গ্রামে বাবার বাড়ি চলে আসেন।
মৃতার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধুবাড়ি পাকারমাথা নামক স্থানে ছিট কাপড় বিক্রির দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন পারভীন আক্তার। এরমধ্যে খন্দকারটোলা দক্ষিণপাড়া গ্রামের গোলাম রব্বানীর ছেলে নাজির হোসেনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর বিয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রেমিক নাজির তার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও করেন। কিন্তু বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হলে নানা তালবাহানা করতে থাকেন নাজির। তাই গ্যাস ট্যাবলেট হাতে নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিয়ের দাবিতে নাজিরের বাড়িতে গিয়ে অনশন করেন পারভীন।
এ সময় গ্রাম্য মাতবর ও দুই পরিবারের লোকজন মিলে সমঝোতার চেষ্টা চালান। কিন্তু নাজির তাকে বিয়ে করতে অসম্মতির কথা জানিয়ে দেন। এমনকি প্রেমের সম্পর্ক অস্বীকার করেন তিনি। এতে অভিমান করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চাচার বাড়িতে গিয়ে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন পারভীন। অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্বজন ও স্থানীয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাৎক্ষণিক বগুড়ায় শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করার কথা বলেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। বগুড়ায় নেওয়ার পথেই মারা যান পারভীন আক্তার।
এদিকে ঘটনাটি থানা পুলিশকে না জানিয়ে পারভীনের লাশ তার চাচা জয়নাল আবেদীনের বাড়িতে নিয়ে রাতেই দাফনের চেষ্টা করা হয়। তবে, স্থানীয়রা খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
ঘটনার পর নাজির হোসেন পালিয়ে গিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন। যে কারণে তার সঙ্গে কথা বলতে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়েই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। সেইসঙ্গে পারভীন আক্তারের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা নেওয়া হয়েছে।’