খোন্দকার এরফান আলী বিপ্লব:
কবির ভাষায়-
মা কথাটি ছোট্ট অতি
কিন্তু জেনো ভাই,
ইহার চেয়ে নাম যে মধুর
তিন ভুবনে নাই।
-আর হ্যাঁ পৃথিবীতে যিনি তুলনাহীন তিনিই আমাদের মা। মায়ের প্রতি মানুষের ভালোবাসা চিরন্তন, নিখুঁত ও নিঃস্বার্থ।সেই মমতাময়ী মায়ের প্রতি ভালোবাসার একটি চিত্র ফুটে উঠেছে এক’শ শিশুর আঁকা মায়ের ছবির মাধ্যমে। শিল্পী এস, এম সুলতানের শততম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঢাকার স্বনামধন্য ক্রিয়েটিভ আর্ট স্কুল ‘চারুপুথি’র আয়োজন করে এক’শ শিশু শিল্পীর আঁকা “আমার চোখে আমার মা” শীর্ষক এক ব্যাতিক্রমী শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর।
গত ২৪ থেকে ২৬ অক্টোবর রাজধানীর সফিউদ্দীন শিল্পালয়ে অনুষ্ঠিত উন্মুক্ত প্রদর্শনীটির প্রতিটি শিল্পকর্মই যেন “মা”-এর কথা বলে। মায়ের আদর, মায়ের ভালোবাসা, মায়ের মমতা, মায়ের ছায়া, মায়ের সাথে আনন্দ, মায়ের কোলে ঘুম পাড়ানো, মায়ের যত্ন- প্রভৃতি যেন নিখুঁতভাবে জীবন্ত হয়ে ফুটে উঠেছে চারুপুথি’র একঝাঁক শিশুশিল্পীর চোখে।
২৪ অক্টোবর বিকেলে প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে প্রদর্শনীটির শুভ উদ্বোধন করা হয়। কাজী ফুডস লিমিটেডের সম্মানিত সিইও শহীদ তনয় তানভীর হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিল্পী ও সমালোচক সৈয়দ গোলাম দস্তগীর এবং চারুপুথি’র পরিচালক,গুণি চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চারুশিল্পী এহসান-উর-রশিদ(এহসান প্রতীক)।এ সময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড্রিমার্স গেল স্কুলের হেড অফ স্কুল সাবিহা আহমেদ, শিক্ষিকা সালমা পারভীন ও সফিউদ্দীন শিল্পালয় এর প্রতিষ্ঠাতা শিল্পী আহমেদ নাজির।
অতিথিগণ তাদের বক্তব্যে শিল্পী এস, এম সুলতানের শিল্পদর্শন,শিল্প দৃষ্টি, চারুশিল্পের প্রয়োজনীয়তা, শিশুদের মেধা বিকাশে চিত্রাংকন, সঙ্গীত, আবৃত্তি, সুন্দর হাতের লেখা প্রভৃতি ক্ষেত্রে চারুপুথি’র ভূমিকা তুলে ধরেন এবং ভূয়সি প্রশংসা করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ২য় পর্যায়ে চারুপুথি’র শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পরিবেশিত সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তি উপস্থিত অতিথি ও দর্শকদেরকে মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোট ৫০জনকে পুরস্কৃত করা হয়। এরমধ্যে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ভোট ও মতামতের ভিত্তিতে শিক্ষকদের মধ্য থেকে ১জনকে সেরা শিক্ষক ও ৩জন সুবিধাবঞ্চিত পথ শিশুকে পুরস্কৃত করা হয়। সবশেষে অতিথি ও দর্শনার্থীগণ প্রদর্শণী স্থানটি ঘুরে ঘুরে দেখেন। ভিন্নধারার এই অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে চারুপুথি’র পরিচালক এহসান প্রতীক অনুষ্ঠানটিকে সফল ও রাঙিয়ে তুলতে নানাভাবে পরামর্শ, দিকনির্দেশনা ও সহযোগিতার জন্য শিক্ষার্থী, অভিভাবক, অতিথি, শুভাকাঙ্ক্ষী, শুভানুধ্যায়ীসহ সর্বভারতীয় সঙ্গীত ও সংস্কৃতি পরিষদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য যে,”এসো নতুন কিছু করি”- এই শ্লোগানকে ধারণ করে “চারুপুথি” দীর্ঘদিন থেকেই সুস্থধারার সংস্কৃতি বিকাশে কোমলমতি শিশুদের নানা প্রশিক্ষণ প্রদানসহ সামাজিক ও মানবিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে।