বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: মহামারি করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর বিধিনিষেধে পরিবহন, দোকান-শপিংমল অফিস আদালতসহ ইমাজেন্সি সার্ভিস ছাড়া সব বন্ধ ছিলো। কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় বুধবার মধ্যরাত থেকে সারা দেশে চলছে গণপরিবহন। ঈদ ঘিরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন বাসস্টান্ড, রেল স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনালে বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড় দেখা গেছে। অনেক জায়গায় টিকিটের জন্য ছিলো দীর্ঘ লাইন। সামাজিক দূরত্ব মানছেনা, স্বাস্থ্যবিধিও ছিল অনেকটাই উপেক্ষিত।
বুধবার মধ্যরাত থেকে ঈদুল আজহা উপলক্ষে কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। সকাল থেকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সরেজমিনে আজ রাজধানীর সড়কগুলোর বিভিন্ন জায়গায় তীব্র যানজট লক্ষ্য করা গেছে।
এছাড়া সড়ক-মহাসড়ক, নৌ পথে বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। কোথাও কোথাও দেখা দিয়েছে দীর্ঘ যানজটের।
সকাল থেকে নগরীর ধানমন্ডি ২৭, নিউমার্কেট এলাকা, বাংলামোটর, শাহবাগ, দৈনিক বাংলা, ফকিরাপুল, আরামবাগ, কমলাপুর, কাকরাইল, পল্টন,, কাওরানবাজার, ফার্মগেট, বিজয় সরণি, গাবতলিসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে প্রায় একই রকম চিত্র পাওয়া গেছে।
ফকিরাপুলে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ সদস্য ইসমাইল বলেন, বিধিনিষেধের গতকাল থেকেই মানুষ বের হচ্ছে। আজ গণপরিবহন চালু হওয়ায় যানজট আরো বেড়েছে। আর রিকশার সংখ্যা বেশি দেখছি। প্রতি সিগন্যালে ৫-১০ মিনিট করে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
১৪ দিন পর গণপরিবহনগুলো চালু হওয়ায় রাজধানী ঢাকা যেন তার চিরচেনা রুপে ফিরেছে। পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ির চাপও বেড়েছে অনেক, এছাড়া মাইক্রোবাস, জরুরি সেবা সংস্থার গাড়ি এবং খোলা থাকা অফিস কর্মীদের বহনের গাড়িতে পুরনো রূপে ফিরেছে রাজধানীর ট্রাফিক সিগন্যালগুলো। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেকপোস্টও দেখা গেছে। তবে অকারণে বাইরে বের হলেও মামলা না থাকায় স্বস্তিতে সাধারণ মানুষ।
বনি আমিন একজন চাকরিজীবী। ঈদের ছুটির আগেই ব্যাগ নিয়ে ছুটেছেন ঝিনাইদহ জেলার উদ্দেশ্যে। তিনি বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘গণপরিবহন চালু হলেও বাসের টিকেট পাওয়া যাচ্ছে না। তবে যেভাবেই হোক ঢাকা থেকে যেতে হবে ফেরিঘাটে। সেখানেও নাকি মানুষের উপচেপড়া ভীড়। কিন্তু কি করার আছে, বাড়িতো যেতেই হবে।’
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে পরিবহন চালানোর কথা থাকলে তার তোয়াক্কা করছেন না অনেকেই।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহনগুলো চালাচলের কথা বলা হলেও তা উপেক্ষিতই রয়ে গেছে।
এ বিষয়ে গাবতলী এলাকায় কর্মরত একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, এতো মানুষের চাপ সামলানো আমাদের জন্য খুব কষ্টকর হয়ে পড়েছে। সড়কে ঘরমুখো মানুষের প্রচণ্ড ভীড়। সামাজিক দুরত্বও অনেকে মেনে চললেও কেউ কেউ মানছে না।
এর আগে এদিকে ঈদকে সামনে রেখে করোনার উচ্চ সংক্রমণের মধ্যেও চলমান কঠোর বিধিনিষেধ ২৩ জুলাই পর্যন্ত শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। তবে ঈদের পর আবারও ১৪ দিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এতে বলা হয়েছে- ১৪ জুলাই মধ্য রাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত চলমান বিধিনিষেধ শিথিল করা হলো। একইসঙ্গে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত ফের কঠোর বিধিনষেধ আরোপ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পবিত্র ঈদুল আযহা উদ্যাপন, জনসাধারণের যাতায়াত, ঈদ পূর্ববর্তী ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা, দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে আরোপিত সকল বিধি-নিষেধ শিথিল করা হলো।
তবে এ সময়ে সর্বাবস্থায় জনসাধারণকে সতর্কাবস্থায় থাকা এবং মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।