মো. কাজল ইব্রাহিম বিশেষ প্রতিনিধি : কাশিমপুরের ছুরাবাড়ী গ্রামে আব্দুল মান্নান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী নির্যাতন, দ্বিতীয় বিয়ে এবং দীর্ঘদিনের অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আব্দুল মান্নান বিশ্বাস (পিতা: রহমত বিশ্বাস, মাতা: আয়েশা বেগম) তার স্ত্রী আরজু আক্তার ফারজানার (পিতা: মো. আসলাম আলী খান মেম্বার, মাতা: মিনু বেগম) কাছে বিশ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করেন। অর্থ পরিশোধে অপারগ হওয়ায় ফারজানাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে।
পরিবারের অভিযোগ:
আরজু আক্তার ফারজানার পিতা মোঃ আসলাম আলী খান মেম্বার (গ্রাম: দক্ষিণ পানিসাই, গাজীপুর সদর, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন) জানান, তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে, যাদের বয়স এখনও অপ্রাপ্তবয়স্ক। তিনি আরও জানান, জামাই হিসেবে মান্নান বিশ্বাসকে পর্যায়ক্রমে ১০ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে, যার স্বপক্ষে যথাযথ সাক্ষ্যপ্রমাণও রয়েছে। আসলাম খান মেম্বারের স্ত্রী জানান, মেয়ের বিয়ের পর তিনি ব্যক্তিগতভাবে পর্যায়ক্রমে ২.৫ লক্ষ টাকা দিয়েছেন মান্নান বিশ্বাসকে। এছাড়া, বিয়ের সময় ৫ ভরি ৭ আনা স্বর্ণালংকার উপহার হিসেবে দেন।
নির্যাতনের বিবরণ:
পরিবারের দাবি, মান্নান বিশ্বাস প্রকাশ্যে আরজু আক্তার ফারজানাকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করেন এবং এলাকাবাসীর সামনেই একাধিকবার এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ রয়েছে, মান্নান বিশ্বাস পাঁচ বছর ধরে সুমি নামের এক নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন এবং তিন বছর আগে গোপনে তাকে বিয়ে করেন। তবে, বিয়ের কাবিননামা বা সুমির সুনির্দিষ্ট ঠিকানা সম্পর্কে পরিবার কিছুই জানে না।
তদুপরি, মান্নান বিশ্বাস তার স্ত্রী আরজু আক্তার ফারজানার থেকে ২০ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করতে থাকেন, এর পাশাপাশি তার স্ত্রীকে মানসিকভাবে অত্যাচার করতে থাকেন এবং ব্যবসা করার জন্য তার স্ত্রীকে চাপ দেন। মান্নান বিশ্বাস স্ত্রীর কাছে ফ্ল্যাট লিখে নেওয়ার জন্যও চাপ প্রয়োগ করেন।
প্রতিক্রিয়া ও হুমকি:
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মান্নান বিশ্বাস ও তার পিতা রহমত বিশ্বাস কোনো সুরাহার চেষ্টা করেননি। বরং মান্নান বিশ্বাস পরিবারকে হুমকি দিয়ে বলেন,
“এলাকায় এমন কেউ নেই যে আমার বিচার করতে পারবে। তোদের বাবাকে নিয়ে আস, দেখি কে বিচার করতে পারে।”
এই ধরনের হুমকিতে পরিবার ও এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
সামাজিক শালিসে অমান্য:
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, একাধিকবার সামাজিক শালিসে বিষয়টি আলোচনায় আনা হলেও মান্নান বিশ্বাস কোনো সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ। অভিযোগ রয়েছে, তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর ছবি শ্বশুর ও শাশুড়ির মোবাইলে পাঠিয়ে দেন, যা পরিবারে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি করে।
পারিবারিক নিপীড়ন:
পরিবার আরও অভিযোগ করেছে, রহমত বিশ্বাসের (পিতা: আব্দুর রহমান বিশ্বাস, মাতা: আয়েশা বেগম) ছোট ছেলের স্ত্রীও একই ধরনের নির্যাতনের শিকার হন। শেষ পর্যন্ত তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় এবং তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। শিশুসন্তানটি বর্তমানে রহমত বিশ্বাসের হেফাজতে থাকলেও মা তাকে দেখার সুযোগ পান না।
প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ:
ভুক্তভোগী পরিবার বাংলাদেশ পুলিশ প্রশাসন, আইন-আদালত বিভাগ, যৌথ বাহিনী ও গোয়েন্দা বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। তারা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধের আহ্বান জানিয়েছেন।
সমাজের প্রতি আহ্বান:
মোঃ আসলাম আলী খান মেম্বার ও তার পরিবার দেশবাসীর সহযোগিতা ও সহমর্মিতা কামনা করেছেন। তারা সকল স্তরের মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মান্নান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
ঠিকানা:
আরজু আক্তার ফারজানা
পিতা: মোঃ আসলাম আলী খান মেম্বার
মাতা: মিনু বেগম
গ্রাম/রাস্তা: দক্ষিণ পানিসাই
ডাকঘর: পি.টি.সি – ১৩৪৯
গাজীপুর সদর, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন
আব্দুল মান্নান বিশ্বাস
পিতা: আব্দুর রহমান বিশ্বাস
মাতা: আয়েশা বেগম
গ্রাম: ছুরাবাড়ী
ওয়ার্ড নং: ০৫
ডাকঘর: কাশিমপুর – ১৩৪৬
গাজীপুর সদর, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন