বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে অসহায় দরিদ্র ও ভূমিহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসাবে দেওয়া ঘর নির্মাণে অনিয়মের বিষয় নিয়ে সারা দেশে তোলপাড় শুরু হলেও সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চল খ্যাত ধর্মপাশায় ৩০০ ভূমিহীন পরিবার ঘর পেয়ে তারা মহা আনন্দে দিন কাটাচ্ছেন। প্রথমদিকে কয়েকটি ঘরে ত্রুটি দেখা দিলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক ঘরের ত্রুটিপূর্ণ স্থানগুলো মেরামত করে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই এ উপজেলায় ঘরের ত্রুটির বিষয়ে উপকারভোগীদের কাছ থেকে আর কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
এক কথায় বলতে গেলে এখানকার-৩০০ ভূমিহীন পরিবারই প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেওয়া এসব ঘর পেয়ে তারা এখন পরিবার নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে জীবন যাপন করছেন।
সরেজমিনে উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের শেখেরগাঁও, গোপিনগর, সিমের খাল ও মধ্যনগর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া, খালিশাকান্দা, জমশেরপুর, হরিপুর ও বৈঠাখালী এলাকায় ঘুরে ও উপকারভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবত তারা অন্যের বাড়িতে মানবেতর জীবন যাপন করে আসছিলেন। কিন্তু এখন তারা প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেওয়া ঘর পেয়ে স্বাধীন ও শান্তিপূর্ণভাবে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন।
উপজেলার শেখেরগাঁও গ্রামের সুকেশ সরকার (৫৫) ও একই গ্রামের উপকারভোগী সবুজ মিয়া (৫০) বলেন, আমরা ভূমিহীন। আমাদের জমিজমা-বাড়িঘর বলতে কিছুই নেই। আমরা সারা জীবন অন্যের বাড়িতে পরিবার নিয়ে দিনযাপন করে আসছিলাম। আমরা দিন আইন্যা দিন খাই, কোনোদিন কল্পনাও করিনি আমরা পরিবার নিয়ে পাকা ঘরে থাকতে পারব।
তারা আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের মতো গরিবের মা। তিনি আমাদেরকে এমন স্বপ্নের পাকা ঘর বানাইয়া দিছেন থাকার জন্য। এখন আমরা দিনে একবার খাইলেও আমাদের কোনো দুঃখ নাই। আমরা দোয়া করি আল্লাহ যেন গরিবের মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আরো শত বছর বাঁচিয়ে রাখেন। তিনি যতদিন বেঁচে থাকেন ততদিনই আমরা তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চাই।
উপজেলার মধ্যনগর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের উপকারভোগী খোকন মড়ল বলেন, নতুন ভিটে মাটিতে ঘরের কাজ করায় নির্মাণকালে আমার ঘরটিসহ ৩টি ঘরের বারান্দায় কিছুটা ত্রুটি দেখা দিয়েছিল। পরে ইউএনও স্যারেকে জানানোর পর তিনি সঙ্গে সঙ্গে ঘর মেরামত করে দিয়েছেন। এখন আমাদের ঘরে আর কোনো সমস্যা নেই।
উপজেলার জয়শ্রী ইউপি চেয়ারম্যান সঞ্জয় রায় চৌধুরী বলেন, আমার ইউনিয়নে ১৭৫টি ভূমিহীন পরিবারকে মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে ঘর নির্মাণের পর ত্রুটি দেখা দিয়েছে বলে কেউ আমার কাছে অভিযোগ করেনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনতাসির হাসান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের এ প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়নে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তবে নতুন ভিটেমাটিতে ঘর নির্মাণকালীন সময়ে কয়েকটি ঘরে কিছুটা ত্রুটি দেখা দিলেও তাৎক্ষণিকভাবে সেগুলো মেরামত করে দেওয়া হয় এবং আশা করি এক্ষেত্রে আমরা সফলতার সাথেই এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছি।