বরিশাল প্রতিনিধি : জিয়াউর রহমানের দেশ প্রেমের কাছে বার বার পরাজিত হয়েছে শেখ মুজিবুর রহমান। পাকিস্তানি হানাদার বাহীনির কবল থেকে দেশকে মুক্তকরণে ক্রান্তিলগ্নে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বলে জানিয়েছেন বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো: রহমাতুল্লাহ। তিনি বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপি’র ১ নং সদস্যও।
গতকাল রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল ৪ টায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে চরমোনাই ইউনিয়নের বুখাইনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠপ্রাঙ্গনে দোয়া মাহফিল ও শীতবস্ত্র বিতরণকালে প্রধান অতিথী হিসেবে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় আবু নাসের বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। পাকিস্তানিদের চাকুরী করে জীবন ঝুঁকি নিয়ে দেশকে রক্ষায় স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘোষণা দেন তিনি। ঘোষণা দিয়ে জিয়াউর রহমান পালিয়ে যাননি। নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে রনাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বীর উত্তমের খেতাবপ্রাপ্তও হয়েছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, লক্ষ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়। এরপর ফিরিয়ে আনা হলো শেখ মুজিবর রহমানকে। তিনি এসে স্বাধীনতা রক্ষার পরিবর্তে কন্ঠ চেপে ধরলেন সাধারণ মানুষের। তার ঘড়ানার ৪ টি পত্রিকা বাদে সব জাতীয় ও স্থানীয় সব পত্রিকা বন্ধ করে দেন। বাকস্বাধীনতা হরণ করে শেখ মুজিব। মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খা ছিল বাকস্বাধীনতা, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা।
কিন্ত শেখ মুজিবের শাসনামলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে পতিত হয় দেশ। বাংলাদেশকে ভিখারীর দেশে পরিণত করেছিল শেখ মুজিব। দীর্ঘ ৩ বছর অর্ধাহার ও অনাহারে দিন কাটাতে হয়েছে মানুষদের।
এর প্রতিবাদ যাতে কেউ না করতে পারে এজন্য গঠন করলেন বাকশাল। ধর্মীয় সহ সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তিনি। এরপর বাকশালে আজীবন শেখ মুজিব দেশ পরিচালনা করবেন বলে অবৈধ ও জোর করে আইন পাশ করেন।
ফুসে ওঠে দেশের মানুষ। ১৯৭৫ সালের মর্মান্তিক পট পরিবর্তনের পর সিপাহী জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান দেশ ও দেশের মানুষের প্রয়োজনে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
মাত্র ৩ মাসের মাথায় খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ন হয় দেশ। দূর হয়ে যায় দুর্ভিক্ষ। জিয়াউর রহমানের দেশ প্রেম, সততা, গণতন্ত্র প্রেমের কাছে বার বার পরাজিত হয়েছে শেখ মুজিবুর রহমান। যেখানেই শেখ মুজিবর রহমান ব্যর্থ হয়েছে সেখানেই জিয়াউর রহমান সফল হয়েছেন।
নাসের বলেন, শেখ মুজিবের মেয়ে হাসিনা দেশে ফেরেন ১৯৭১ সালের ১৭ মে। আওয়ামী লীগের রাজনীতি দেশে বৈধকরণে আবেদন করেন। জিয়াউর রহমান সেই আবেদন গ্রহণ করে তাদের রাজনীতির বৈধতা ফিরিয়ে দেন। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের রাজনীতির পুনর্জন্মদাতা হলেন জিয়াউর রহমান। শেখ হাসিনা দেশে আসার মাত্র ১১ দিনের মাথায় জিয়াউর রহমানকে নৃসংশভাবে খুন করা হয়। এরপর হাসিনা বোরকা পড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় সেনাবাহিনীর হাতে আটক হয়। এতে প্রমাণিত ষড়যন্ত্রের রাজনীতি কারা করে।
নাসের আরও বলেন, সারাদেশে যখন সব রাজনৈতিক দলের স্বৈরাচারি এরশাদ বিরোধী আন্দোলন হচ্ছিল তখন শেখ হাসিনা একটি সভায় ঘোষণা দিয়েছিল যারা নির্বাচনে অংশ নিবে তারা জাতীয় বেইমান। আর সেই আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বেইমানের পরিচয় দিয়েছিল।
সেই দিন থেকে খালেদা জিয়া আপোষহীন নেত্রী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যেতে থাকেন। বারবার জয়লাভ করেন খালেদা জিয়া।
লড়াই সংগ্রাম করতে গিয়ে শেখ হাসিনা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাসহ বিভিন্ন ধরণের হয়রানী করেছেন। তাকে নি:শেষ করতে চেয়েছিলেন। আজকে হাসিনা ও তার দোসররা পালিয়েছে। কিন্ত খালেদা জিয়া সন্মানিত হয়েছেন।
যেখানে শেখ মুজিব ব্যর্থ হয়েছেন সেখানে বার বার বিজয়ী হয়েছেন জিয়াউর রহমান। আর হাসিনা বেইমান হয়েছে অন্যদিকে খালেদা জিয়া হয়েছেন সন্মানিত। সন্মানের সাথে সেনাবাহিনীর আমন্ত্রণে প্রধান অতিথী হিসেবে সেনাকুঞ্জে গিয়েছেন খালেদা জিয়া। সন্মানের সাথে বিদেশে চিকিৎসার জন্য গিয়েছেন তিনি ।
আবু নাসের বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র ফেরাতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে নির্দেশনা অনুযায়ী লড়াই সংগ্রাম করেছি। তার নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে। তিনি দেশ ও দেশের মানুষের উন্নয়নে ৩১ দফা কর্মসূচির উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এর বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশে রুপান্তরিত হবে বাংলাদেশ। এজন্য তার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।
চরমোনাই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম আব্দুস সালাম রাড়ীর সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা বিএনপি’র সাবেক আহবায়ক ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সদস্য আলহাজ্ব নুরুল আমিন, চরমোনাই ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক সদস্য সচিব ইয়াছিন সিকদার চুন্নু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন আকন, যুগ্ন আহবায়ক রফিকুল ইসলাম ঘরামীসহ ইউনিয়ন বিএনপি’র অন্যান্য অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।