বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশ একটি পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে করুণ অবস্থায় উদ্ধার করেছে; যারা করোনায় মৃত্যুর ভয়ে গত ১৫ মাস ধরে তাঁবু দিয়ে বানানো ঘরে নিজেদের বন্দি করে রেখেছিলেন। বুধবার অন্ধ্রপ্রদেশের কাদালি গ্রাম থেকে এই পরিবারটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
কাদালি গ্রামের প্রধান চপ্পলা গুরুনাথের মতে, ১৫ মাস আগে এক প্রতিবেশি করোনায় মারা যাওয়ার পর রুথাম্মা (৫০), কানথামানি (৩২) এবং রানি (৩০) নিজেদেরকে ঘরে বন্দি করে ফেলেন। করোনার ভয়ে দীর্ঘ এই সময়ে তারা ঘর থেকে বের হননি।
কিন্তু সম্প্রতি একজন স্বেচ্ছাসেবী দেশটির সরকারের গৃহহীনদের সরকারি আবাসন প্রকল্পে বাড়ি দেওয়ার জন্য হাতের আঙুলের ছাপ সংগ্রহের কাজে সেখানে যান। এরপরই রানিদের গৃহবন্দি দশার কথা সামনে আসে। ওই স্বেচ্ছাসেবী বিষয়টি গ্রামের মোড়ল এবং অন্যান্যদের অবগত করেন।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে চপ্পলা গুরুনাথ বলেছেন, ‘স্ত্রী এবং দুই সন্তান নিয়ে এখানে বসবাস করছে চুত্তুগাল্লা বেনির পরিবার। তারা করোনাকে ভয় পেয়েছিল। যে কারণে প্রায় ১৫ মাস ধরে তারা ঘরে বন্দি অবস্থায় আছে। আশা কর্মী অথবা অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবীরা ওই বাড়িতে যাওয়ার পর কোনও সাড়া না পেয়ে প্রায়ই ফেরত যেতেন। কিন্তু সম্প্রতি তাদের কয়েকজন আত্মীয় জানান যে, বাড়িতে তিনজন আছেন; যারা নিজেদের বন্দি করে রেখেছেন এবং স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো নয়।
তিনি বলেন, বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর আমরা বাড়িটিতে যাই এবং ঘটনা সম্পর্কে পুলিশকে অবগত করেছি। পরে রাজোল পুলিশের উপপরিদর্শক কৃষ্ণমাচারি এবং তার দল ঘটনাস্থলে এসে ওই পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করেন। বেরিয়ে আসার সময় তাদের অবস্থা অত্যন্ত করুণ দেখা যায়। কোনও ধরনের যত্ন ছাড়াই তাদের চুল বেড়ে উঠেছে। তারা অনেক দিন ধরে গোসল করেনি। পরে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাই। বর্তমানে তারা সেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
কাদালি গ্রামের প্রধান চপ্পলা গুরুনাথ বলেছেন, আর দুই থেকে তিন দিন এভাবে চললে ওই পরিবারের সব সদস্যই মারা যেতেন। সূত্র: এনডিটিভি।