বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে ঢাকার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা মোহন চন্দ্র দাস। আজ সোমবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আসামি মোহনের জবানবন্দি রেকর্ডের পর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান।
গত শুক্রবার গভীর রাতে কামরাঙ্গীরচরের নয়াগাঁও এলাকার একটি বাসায় ঘুমের মধ্যে ফুলবাসী রানী দাস ও তাঁর মেয়ে সুমী রানী দাসকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত ফুলবাসীর বোন বিশাখাবাসী রানী দাস বাদী হয়ে মোহন চন্দ্র দাসকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে মোহনের মেয়ে ঝুমা রানী দাস ঢাকার আদালতে গতকাল ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
নিজের স্ত্রী ও মেয়েকে কেন মোহন খুন করেছেন, সে ব্যাপারে জানতে চাইলে কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আসামি মোহন ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন এবং কাজ না থাকায় হতাশায় ভুগছিলেন। সম্প্রতি আর্থিক টানাপোড়েনের জেরে স্ত্রী ফুলবাসীকে মারধরও করেছিলেন। কয়েক বছর আগে স্ত্রী ফুলবাসী নিজের কিছু স্বর্ণালংকার বন্ধক রেখে ৩০ হাজার টাকা মোহনের কাছে তুলে দেন। মোহন সেই টাকা ধার দেন তাঁর এক মামার কাছে। সেই মামা বিদেশে থাকেন। বেশ কিছুদিন ধরে মোহন কাজও পাচ্ছিলেন না। ঈদের আগেও একজনের কাছ থেকে এক হাজার টাকা ঋণ নেন।
কীভাবে খুন করেন, সে ব্যাপারে ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রাত একটা থেকে দুইটার মধ্যে কোনো এক সময় ঘুমন্ত ফুলবাসীকে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন মোহন। আর রাত চারটার দিকে ছোট মেয়ে সুমীকে একইভাবে হত্যা করেন।
সুমীকে শ্বাসরোধের সময় তার দাপাদাপিতে পা লেগে ঘুম ভেঙে যায় পাশে শোয়া বড় বোন ঝুমার। হঠাৎ জেগে গিয়ে ঝুমা ঘরের আলো জ্বালায়। সে দেখতে পায়, মোহন সুমীর মুখ পলিথিন দিয়ে আটকিয়ে রেখেছে। তখন তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা জড়ো হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ফুলবাসী ও সুমীর মরদেহ উদ্ধার করে।