বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : গাজীপুরের কালীগঞ্জে দুই স্ত্রীর বিরোধের জেরে কৌশলে গভীর রাতে স্বামীর গোপনাঙ্গ কর্তন ও গলা কেটে দ্বিতীয় স্ত্রী শ্যামলী বেগম হত্যাচেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের উত্তর রাথুরা গ্রামের মৃত ছফু করাতির বাড়িতে।
আহত রিকশাচালক নাজমুল মৃধা (৩০) ওই গ্রামের ছফরউদ্দিন ওরফে ছফু মৃধার ছেলে। ঘটনার পর থেকে শ্যামলী বেগম পলাতক রয়েছেন।
এ ঘটনায় আহত নাজমুল মৃধার বড়বোন বিলকিস বেগম বাদী হয়ে শনিবার সকালে কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মিজানুল হক জানান, এ বিষয়ে একটা অভিযোগ পেয়েছি। অনুসন্ধান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। প্রকৃত ঘটনার সত্যতা উদঘাটন করা হচ্ছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আছমা বেগম ও শ্যামলী নামের দুই স্ত্রী রয়েছে নাজমুল মৃধার। প্রথম স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে ঢাকায় উত্তরায় থেকে রিকশা চালানোসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। আর দ্বিতীয় স্ত্রী শ্যামলী তার বাপের বাড়ি ঢাকার খিলক্ষেত থানার পাতিরা এলাকায় থাকেন।
ঈদের আগের দিন প্রথম স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে আসেন নাজমুল মৃধা। ২৩ জুলাই সকালে শ্যামলী তার স্বামীর বাড়িতে এসে সতীন আছমাকে বেধড়ক মারধর করে আহত করেন। পরে বিষয়টি বাড়ির লোকজন প্রাথমিকভাবে তাদের মাঝে মীমাংসা করে দেয়।
ওই রাতের খাবার খেয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী শ্যামলী তার স্বামীর সঙ্গে ঘুমায়। পরে রাত আনুমানিক ২টায় নাজমুলের চিৎকার শুনে প্রথম স্ত্রী আছমাসহ বাড়ির লোকজন দৌড়ে এসে বাড়ির পাশে শরীরের নিম্নাংশ রক্তে ভেজা অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।
প্রথম স্ত্রী আছমাসহ বাড়ির লোকজন এসে কাপড় সরিয়ে তার গোপনাঙ্গ ও বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি কাটা দেখতে পান। পরে তাকে গুরুতর রক্তাক্ত জখম ও অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার গোপনাঙ্গে ২২টি সেলাই ও বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি বেশ কয়েকটি সেলাই করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
আহত নাজমুল জানান, রাতে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে শুয়ে পড়ার পর শ্যামলী দরজা খুলে বারবার ঘরের বাহিরে আসা যাওয়া করতে থাকে। আমি তাকে এ রকম করার কারণ জানতে চাইলে সে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে আমি ঘুমিয়ে পড়ি। রাতে অসহ্য যন্ত্রণায় ঘুম ভেঙ্গে গেলে আমার গোপনাঙ্গ রক্তাক্ত এবং শ্যামলীর হাতে রক্তাক্ত ব্লেড ও ধারালো বঁটি দেখতে পাই।
তিনি বলেন, এ সময় আমি তাকে জাপটে ধরার চেষ্টা করলে হত্যার উদ্দেশ্যে আমাকে বঁটি দিয়ে গলায় কোপ দেয়। আত্মরক্ষার্থে হাত দিয়ে তা ফেরানোর চেষ্টা করলে বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি কেটে রক্তাক্ত জখম হয়। পরে সে ঘর থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় তাকে ধরার জন্য তার পিছনে দৌড়ে বাড়ির দক্ষিণ পাশে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
তিনি আরও বলেন, আনুমানিক ৯-১০ বছর আগে পারিবারিকভাবে আসমাকে বিয়ে করি। হাফসা নামে এক কন্যা রয়েছে তার। এক বছরের ওই মেয়েকে নিয়ে সে তার বাপের বাড়ি কুমিল্লাতে চলে যায়। তিন সাড়ে বছর অপেক্ষা করে দ্বিতীয় বিয়ে করলে প্রথম স্ত্রী পুনরায় আমার বাড়িতে আসে। এ পরে থেকে নানা কিছু নিয়ে সংসারে বিবাদ লেগেই থাকত।