বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশান-২ এর ৩৬ নম্বর রোডের বাড়িতে র্যাবের অভিযান শুরু হয়। প্রায় চার ঘণ্টা অভিযানের পর দিনগত মধ্যরাতে তাকে আটক করা হয়। এসয় হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসা থেকে বিদেশি মদ, হরিণের চামড়া, বেশ কিছু ছুরি, বিদেশি মুদ্রা, ক্যাসিনো খেলার সরঞ্জাম ইত্যাদি জব্দ করা হয়েছে বলে র্যাব জানায় ।
হেলেনা জাহাঙ্গীর কন্যা জেসি আলম বলেন, বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া মদ মায়ের নয়, বরং আমার ভায়ের। তিনি বলেন, অহেতুক তার মাকে হয়রানি করা হচ্ছে। তার বাসা থেকে জব্দ হওয়া হরিণের চামড়াটি উপহার হিসেবে পাওয়া। বিদেশি মুদ্রাগুলোও অবৈধ নয়।
হরিণের চামড়ার প্রসঙ্গে জেসি আলম গণমাধ্যমকে বলেন, এটা মায়ের লীগের বন্ধুরা উপহার দিয়েছে। আমার ভাইয়ার বিয়ে ছিল, সেখানে এই উপহার দিয়েছে তারা।
জব্দকৃত বিদেশি মুদ্রা সম্পর্কে জেসি আলমের কথা, আমারা ফ্রিকোয়েন্টলি দেশের বাইরে যাই। একটা দেশে না, আমরা অনেকগুলো দেশে যাই। আমাদের সবার পাসপোর্টও আছে। তো ফেরত আসার পার টাকা বেঁচে গেলে সেগুলো কী আমরা ফেলে দেবো নাকি?
জেসি আলম আরো বলেন, কয়েক মাস আগে আমার মায়ের অপারেশন হয়েছে। ঘুমানোর জন্য তাকে নিয়মিত ঔষধ নিতে হয়। এমন অবস্থায় যদি এসব কাহিনী করা হয় তাহলে একজন মানুষের মন-মানসিকতা ঠিক থাকবে না।
এর আগে র্যাব জানায়, হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় অভিযান চালিয়ে ১৭ বোতল বিদেশি মদ ও বেশ কিছু ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও তার বাসা অননুমোদিতভাবে রাখা হরিণের চামড়া ও ওয়াকিটকিও উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় তার ব্যবহৃত দুটি অস্ত্র পাওয়া গেছে। তবে সেগুলোর বৈধ কাগজ রয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, ভবনের তিনটি ফ্লোর মিলে তিনি বসবাস করতেন। সেখানে ১৭টি রুম রয়েছে। এসব রুমেই মিলেছে অবৈধ মাদকসহ বিভিন্ন ক্যাসিনো সরঞ্জাম। তাকে মাদকের বিষয় জিজ্ঞাসাবাদ করতেই আটক করা হয়েছে। পরবর্তীতে র্যাব বাদী হয়ে মামলা করবে। সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
এদিকে শুক্রবার সকালে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাদির শাহ বলেন, শুক্রবার ভোর পর্যন্ত মিরপুরের টিভির অফিসটিতে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। তবে টেলিভিশনের কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তাদের মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। না দেখাতে পারলে টেলিভিশনটি বন্ধ করা হতে পারে। আমরা কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করছি। এরপর পরবর্তী সময়ে নিশ্চিত করে বলা যাবে সেক্ষেত্রে টেলিভিশনটি সিলগালাও হতে পারে।
সম্প্রতি ফেসবুকে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামে একটি সংগঠনের সভাপতি হিসেবে হেলেনা জাহাঙ্গীরের নাম আসায় তাকে আওয়ামী লীগের উপকমিটির পদ থেকে বাদ দেয়া হয়। কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। জয়যাত্রা নামে একটি আইপি টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও হেলেনা জাহাঙ্গীর।