বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : অপরিকল্পিত বিধি-নিষেধের নামে শ্রমিকদের প্রতি যে উদাসীনতা দেখানো হয়েছে, তা সভ্য সমাজে মেনে নেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের) এমপি।
আজ সোমবার (২ আগস্ট) গণমাধ্যমে এক বিবৃতিতে এই মন্তব্য করেন তিনি।
জি এম কাদের বলেন, ‘অপরিকল্পিত লকডাউনের নামে শ্রমিকদের প্রতি যে উদাসীনতা দেখানো হয়েছে তা সভ্য সমাজে মেনে নেওয়া যায় না। এই অদূরদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে এক বছরের মাথায় আবারও শ্রমিকদের পায়ে হেঁটে, কয়েক গুণ বেশি খরচ করে রাজধানীতে ফিরতে হয়েছে। যেসব শ্রমিক দেশের সমৃদ্ধির জন্য অর্থনীতির চাকা সচল রাখেন তাঁদের সঙ্গে অশোভন ও নির্মম আচরণ করা হয়েছে।’
জি এম কাদের আরো বলেন, ‘গত ২১ জুলাই কোরবানির ঈদের আগে যাত্রী পরিবহনে গণপরিবহন চলেছে মাত্র দুই দিন। আবার ঈদের একদিন পরই কঠোর বিধি-নিষেধের কারণে বন্ধ হয়ে যায় গণপরিবহন। স্বল্প সময়ে গাদাগাদি করে ঈদযাত্রায় চলাচল করেছে লাখো মানুষ। এ সময় পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে ভিড়ে আটকে পড়ে আরো কয়েক লাখ মানুষ। আবার, কঠোর বিধি-নিষেধের মধ্যে গত ৩০ জুলাই হঠাৎ ঘোষণা দেওয়া হয় ১ আগস্ট থেকে তৈরি পোশাক কারখানা খোলা। এমন ঘোষণায় স্বল্প আয়ের শ্রমিকদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘শ্রমিকরা পায়ে হেঁটে, রিকশা বা ভ্যানে অথবা ট্রাকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজধানীর পথে ছোটেন। শুধু কষ্ট নয়, কয়েক গুণ বেশি খরচ করতে হয়েছে চাকরি রক্ষায়। প্রতিটি ফেরিতে কয়েক হাজার মানুষ গাদাগাদি করে নদী পার হয়েছেন। এসব কারণে, মারাত্মকভাবে উপেক্ষিত হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি। বিপর্যয় এড়াতে সরকারিভাবে ৩১ জুলাই ও ১ আগস্ট সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালু হয়।’
বিরোধীদলীয় উপনেতা অভিযোগ করেন, ‘গত বছরের এপ্রিল মাসেও বিধি-নিষেধের মধ্যে তৈরি পোশাক কারখানা খুলে এমন নির্মম পরিহাস করা হয়েছিল শ্রমিকদের সঙ্গে। তখনো শ্রমিকরা পায়ে হেঁটে, অসহনীয় দুর্ভোগ পোহায়ে রাজধানীতে এসেছিলেন। গত বছরের বিধি-নিষেধ থেকে শিক্ষা নেননি সংশ্লিষ্টরা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের শ্রমিক শ্রেণির মানুষ। মনে হচ্ছে সরকার শ্রমিকদের মানুষই ভাবে না।’
বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, ‘মহামারি নিয়ন্ত্রণে যেখানে প্রয়োজন পরিকল্পিত লকডাউন- শুধু কথার লকডাউন নয়- ব্যাপক হারে গণটিকা কর্মসূচি, সেখানে দেখা যাচ্ছে সব ক্ষেত্রে চরম সমন্বয়হীনতা। এ কারণে কমছে না করোনার ভয়াবহ সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা।’